বাংলাদেশে গড়ে একজন ব্যক্তি বছরে ৮২ কেজি খাবার অপচয় করছেন। বাংলাদেশিদের খাবার অপচয়ের এই হার ভারত, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের চেয়েও বেশি। জাতিসংঘের পরিবেশবিষয়ক কর্মসূচি ইউনেপের ‘ফুড ওয়েস্ট ইনডেক্স রিপোর্ট ২০২৪’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বে ২০২২ সালে বাসাবাড়ি, খাদ্য সেবা ও খুচরা পর্যায়ে মোট খাদ্যের প্রায় ১৯ শতাংশ অর্থাৎ একশ কোটি টনের বেশি খাবার অপচয় হয়েছে; যার প্রায় ৬০ শতাংশই অপচয় হয়েছে বাসাবাড়িতে হয়েছে। এ ছাড়া গড়ে একজন মানুষ বছরে ৭৯ কেজি খাবার অপচয় করেছেন। জাতিসংঘের হিসেবে বাসাবাড়িতে এক ব্যক্তি বছরে গড়ে বাংলাদেশে ৮২ কেজি, ভারতে ৫৫ কেজি, যুক্তরাজ্যে ৭৬ কেজি, যুক্তরাষ্ট্রে ৭৩ কেজি ও রাশিয়ায় ৩৩ কেজি খাবার অপচয় করেছেন। সবচেয়ে বেশি খাবার অপচয় হয়েছে মালদ্বীপে ২০৭ কেজি। আর সবচেয়ে কম ১৮ কেজি হয়েছে মঙ্গোলিয়ায়।
যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের চেয়েও বাংলাদেশে কেন বেশি খাদ্য অপচয় হচ্ছে, এ বিষয়ে জানতে চাইলে খাদ্য অপচয়বিষয়ক গবেষক অধ্যাপক কামরুল হাসান বলেন, বাংলাদেশে একেবারে উচ্চ আয়ের পরিবারগুলোতে বেশি খাদ্য নষ্ট বা অপচয় হয়। আমরা ‘এস্টিমেশন অব ওভারঅল ফুড লসেস অ্যান্ড ওয়েস্ট এট অল লেভেলস অব দ্য ফুড চেইন’ শীর্ষক এক গবেষণায় দেখেছি, উচ্চ আয়ের বাসাগুলোতে সপ্তাহে একজন মানুষ দুই কেজির বেশি খাবার অপচয় করে থাকেন। এ ছাড়া নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের এ ক্যাটাগরির রেস্তোরাঁগুলোতেও সর্বোচ্চ ৪০ শতাংশ পর্যন্ত খাদ্য অপচয় হয়ে থাকে। প্রয়োজনের অতিরিক্ত অর্ডার দেওয়া এবং সব খাবার একটু চেখে দেখার প্রবণতাই রেস্তোরাঁগুলোতে খাবার অপচয়ের বড় কারণ বলে ওই গবেষণায় বলা হয়েছে। গবেষকরা মনে করেন, রেস্তোরাঁ বা কমিউনিটি সেন্টারের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোতে বেশি নজরদারি বা মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা থাকায় খাদ্য অপচয় প্রতিরোধে উন্নত দেশগুলো বাংলাদেশের চেয়ে ভালো করছে।
আরও পড়ুন:আজ নারীর পক্ষ থেকে পুরুষকে প্রস্তাব পাঠানোর দিন
এ বিষয়ে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জাকারিয়া বলেন, খাবার অপচয় প্রতিরোধে সচেতনতা বাড়ানো ছাড়া আমাদের তেমন কিছু করার নেই। আমরা ভোক্তা পর্যায়ে কেউ নষ্ট বা মানহীন খাবার দিলে ব্যবস্থা নিতে পারি। কিন্তু কেউ খাবার নষ্ট বা অপচয় করলে আমাদের কিছু করার নেই।
One thought on “যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের চেয়েও বেশি খাবার নষ্ট করে বাংলাদেশিরা”