Dhaka 11:34 pm, Saturday, 18 May 2024

রেকর্ড গড়ে ফের লন্ডনের মেয়র সাদিক খান

যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনের মেয়র পদে টানা তৃতীয়বারের মতো জয় পেয়েছেন পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত সাদিক খান (৫৩)। তিনিই লন্ডনের প্রথম নেতা, যিনি টানা তিনবার এই পদে জয়ী হয়েছেন।

লেবার পার্টির প্রার্থী সাদিক খান ২ লাখ ৭৬ হাজারের বেশি ভোটের ব্যবধানে কনজারভেটিভ পার্টির প্রার্থী সোসান হলকে হারিয়েছেন। এই জয়ের মধ্যে দিয়ে লেবার পার্টি আরও শক্ত অবস্থানে চলে গেছে। লেবার পার্টির পক্ষ থেকে আগেই বলা হয়েছিল, সাদিক খানের জয়ের ব্যাপারে দল আত্মবিশ্বাসী।

লন্ডনের মেয়র পদের নির্বাচনের ভোটগ্রহণ গত বৃহস্পতিবার রাত ১০টায় শেষ হয়। পরে শুক্রবার সকাল থেকে ভোট গণনা শুরু হয়। এরপর শনিবার স্থানীয় সময় বিকেল সাড়ে ৪টায় ফলাফল প্রকাশ পায়। প্রকাশিত ফলাফলে দেখা গেছে, বর্তমান মেয়র সাদিক খান প্রতিদ্বন্দ্বী সোসান হলকে ২ লাখ ৭৬ হাজারের বেশি ভোটের ব্যবধানে হারিয়েছেন।

এবার ১৪টি নির্বাচনী এলাকার নয়টিতেই জিতেছেন সাদিক খান। এর মধ্যে কনজারভেটিভদেরও দুটি এলাকা রয়েছে। নির্বাচনে মোট ভোট পড়েছে ২৪ লাখ, যা মোট ভোটারের ৪২ দশমিক ৮ শতাংশ। যদিও ভোট পড়ার হার গতবারের চেয়ে কিছুটা কম।

এক নজরে সাদিক খান:

সাদিক খানের জন্ম লন্ডনেই, ১৯৭০ সালের ৮ অক্টোবর। এর দুই বছর আগে ১৯৬৮ সালে তাঁর মা-বাবা পাকিস্তান থেকে যুক্তরাজ্যের অভিবাসী হিসেবে পাড়ি জমান। বাবা আমানউল্লাহ ছিলেন বাসচালক। মা শেহরুন করতেন দরজির কাজ। সাত ভাই ও এক বোনের মধ্যে সাদিক পঞ্চম।

সাদিক খানের পড়ালেখা ইউনিভার্সিটি অব নর্থ লন্ডন থেকে। বিষয় ছিল আইন। পড়াশোনা শেষে মানবাধিকার-বিষয়ক আইনজীবী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। কম বয়সেই তিনি যোগ দিয়েছিলেন লেবার পার্টির রাজনীতিতে।

১৯৯৪ সালে লেবার পার্টির হয়ে লন্ডনের ওয়ান্ডসওর্থ বারার কাউন্সিলর হিসেবে নির্বাচিত হন সাদিক খান। তখন তাঁর বয়স মাত্র ২৪ বছর। ২০০৬ সাল পর্যন্ত এ দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। ২০০৫ সালে যুক্তরাজ্যের জাতীয় নির্বাচনে দক্ষিণ লন্ডনের টুটিং আসন থেকে পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হন।

২০০৮ সালে গর্ডন ব্রাউন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন স্থানীয় সরকারের পার্লামেন্টারি আন্ডার সেক্রেটারি এবং পরবর্তীতে যোগাযোগ মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন সাদিক খান। ২০১০ সালে লেবার পার্টি বিরোধী দলে গেলে তিনি ছায়া মন্ত্রিসভায় বিচার-বিষয়ক ছায়া মন্ত্রী, লর্ড চ্যান্সেলর (ছায়া অর্থমন্ত্রী) ও লন্ডন-বিষয়ক ছায়া মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।

২০১৬ সালে লন্ডনের মেয়র পদে নির্বাচনে দাঁড়ানোর জন্য পার্লামেন্ট থেকে পদত্যাগ করেন সাদিক খান। সে বছরের ৯ মে কনজারভেটিভ পার্টির জেক গোল্ডস্মিথকে হারিয়ে প্রথমবার লন্ডনের মেয়র নির্বাচিত হন। এরপর ২০২১ সালে কনজারভেটিভ পার্টির সোন বেইলিকে পরাজিত করে মেয়র পদ ধরে রাখেন সাদিক।

এবার তৃতীয় দফায় সাদিক খানের জয় আগামী জাতীয় নির্বাচনে লেবার পার্টির মনোবল আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপডেট সংবাদ

রেকর্ড গড়ে ফের লন্ডনের মেয়র সাদিক খান

Update Time : 11:28:06 am, Sunday, 5 May 2024

যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনের মেয়র পদে টানা তৃতীয়বারের মতো জয় পেয়েছেন পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত সাদিক খান (৫৩)। তিনিই লন্ডনের প্রথম নেতা, যিনি টানা তিনবার এই পদে জয়ী হয়েছেন।

লেবার পার্টির প্রার্থী সাদিক খান ২ লাখ ৭৬ হাজারের বেশি ভোটের ব্যবধানে কনজারভেটিভ পার্টির প্রার্থী সোসান হলকে হারিয়েছেন। এই জয়ের মধ্যে দিয়ে লেবার পার্টি আরও শক্ত অবস্থানে চলে গেছে। লেবার পার্টির পক্ষ থেকে আগেই বলা হয়েছিল, সাদিক খানের জয়ের ব্যাপারে দল আত্মবিশ্বাসী।

লন্ডনের মেয়র পদের নির্বাচনের ভোটগ্রহণ গত বৃহস্পতিবার রাত ১০টায় শেষ হয়। পরে শুক্রবার সকাল থেকে ভোট গণনা শুরু হয়। এরপর শনিবার স্থানীয় সময় বিকেল সাড়ে ৪টায় ফলাফল প্রকাশ পায়। প্রকাশিত ফলাফলে দেখা গেছে, বর্তমান মেয়র সাদিক খান প্রতিদ্বন্দ্বী সোসান হলকে ২ লাখ ৭৬ হাজারের বেশি ভোটের ব্যবধানে হারিয়েছেন।

এবার ১৪টি নির্বাচনী এলাকার নয়টিতেই জিতেছেন সাদিক খান। এর মধ্যে কনজারভেটিভদেরও দুটি এলাকা রয়েছে। নির্বাচনে মোট ভোট পড়েছে ২৪ লাখ, যা মোট ভোটারের ৪২ দশমিক ৮ শতাংশ। যদিও ভোট পড়ার হার গতবারের চেয়ে কিছুটা কম।

এক নজরে সাদিক খান:

সাদিক খানের জন্ম লন্ডনেই, ১৯৭০ সালের ৮ অক্টোবর। এর দুই বছর আগে ১৯৬৮ সালে তাঁর মা-বাবা পাকিস্তান থেকে যুক্তরাজ্যের অভিবাসী হিসেবে পাড়ি জমান। বাবা আমানউল্লাহ ছিলেন বাসচালক। মা শেহরুন করতেন দরজির কাজ। সাত ভাই ও এক বোনের মধ্যে সাদিক পঞ্চম।

সাদিক খানের পড়ালেখা ইউনিভার্সিটি অব নর্থ লন্ডন থেকে। বিষয় ছিল আইন। পড়াশোনা শেষে মানবাধিকার-বিষয়ক আইনজীবী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। কম বয়সেই তিনি যোগ দিয়েছিলেন লেবার পার্টির রাজনীতিতে।

১৯৯৪ সালে লেবার পার্টির হয়ে লন্ডনের ওয়ান্ডসওর্থ বারার কাউন্সিলর হিসেবে নির্বাচিত হন সাদিক খান। তখন তাঁর বয়স মাত্র ২৪ বছর। ২০০৬ সাল পর্যন্ত এ দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। ২০০৫ সালে যুক্তরাজ্যের জাতীয় নির্বাচনে দক্ষিণ লন্ডনের টুটিং আসন থেকে পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হন।

২০০৮ সালে গর্ডন ব্রাউন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন স্থানীয় সরকারের পার্লামেন্টারি আন্ডার সেক্রেটারি এবং পরবর্তীতে যোগাযোগ মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন সাদিক খান। ২০১০ সালে লেবার পার্টি বিরোধী দলে গেলে তিনি ছায়া মন্ত্রিসভায় বিচার-বিষয়ক ছায়া মন্ত্রী, লর্ড চ্যান্সেলর (ছায়া অর্থমন্ত্রী) ও লন্ডন-বিষয়ক ছায়া মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।

২০১৬ সালে লন্ডনের মেয়র পদে নির্বাচনে দাঁড়ানোর জন্য পার্লামেন্ট থেকে পদত্যাগ করেন সাদিক খান। সে বছরের ৯ মে কনজারভেটিভ পার্টির জেক গোল্ডস্মিথকে হারিয়ে প্রথমবার লন্ডনের মেয়র নির্বাচিত হন। এরপর ২০২১ সালে কনজারভেটিভ পার্টির সোন বেইলিকে পরাজিত করে মেয়র পদ ধরে রাখেন সাদিক।

এবার তৃতীয় দফায় সাদিক খানের জয় আগামী জাতীয় নির্বাচনে লেবার পার্টির মনোবল আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।