Dhaka ০১:৪৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নাক দিয়ে রক্ত পড়ার কারন

  • অনলাইন ডেস্ক
  • Update Time : ০১:৩৭:৫৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • ১০৬ Time View

নাক দিয়ে যে কোনো ধরনের রক্ত পড়াকে মেডিকেল ভাষায় এপিসট্যাক্সিস বলে। কারণ ভেদে এবং পরিমাণ ভেদে নাকের সামনের দিক দিয়ে রক্ত ঝরতে পারে বা নাকের পেছন দিক দিয়ে রক্ত গড়িয়ে মুখ দিয়ে বের হয়ে আসতে পারে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এটা নিজ থেকেই বন্ধ হয়ে যায় এবং পরিমাণে খুব বেশি হয় না।

কারণ

* হার্টের অসুখে রক্ত পাতলা করার জন্য দেয়া হয়। যেমন- এসপিরিন, ওয়ারফেরিন ইত্যাদি।

* অনিয়মিত উচ্চরক্তচাপ।

* নাকের ভেতর বিভিন্ন রকম ইনফেকশন। নাকের দীর্ঘদিনের ইনফেকশনের মধ্যে নাকের যক্ষ্মা অন্যতম।

* নাকের আঘাতজনিত কারণ যেমন- অ্যাক্সিডেন্ট, নাকে ঘুষি খাওয়া ইত্যাদি।

* মেকানিক্যাল কারণ যেমন নাকের হাড় বাঁকা, নাকের মধ্যে বোতাম বা বিচি জাতীয় কিছু ঢুকে যাওয়া বা নাকের পলিপ বা নাকের অ্যালার্জি।

* নাকের ভেতর টিউমার বা ক্যান্সার।

* নাকের ভেতর বিভিন্ন ধরনের ইমিউনোলজিক্যাল রোগ বা নাকের বিভিন্ন ধরনের ক্ষত।

পরীক্ষা : নাকের রক্তপড়া বেশি মাত্রায় হয় অথবা সহজে বন্ধ হতে চায় না বা যত দিন যায় তত বেশিমাত্রায় রক্ত পড়তে থাকে, সেক্ষেত্রে অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন হতে পারে, যেমন- সাধারণ রক্ত পরীক্ষা বা নাকের এবং সাইনাসের এক্স-রে, এমআরআই, নাকের মাংস নিয়ে তার বায়োপসি, কিডনির পরীক্ষা, রক্তের বিভিন্ন ধরনের জটিল পরীক্ষা, হরমোন ইত্যাদি। নাক-কান-গলা রোগ বিশেষজ্ঞ এ ব্যাপারে নির্দেশনা দেবেন।

যাদের নিয়মিত নাক দিয়ে রক্ত পড়ে তাদের অবশ্যই একজন নাক-কান-গলা রোগ বিশেষজ্ঞ দিয়ে এন্ডোস্কোপির মাধ্যমে নাকের ভেতর ভালোভাবে দেখে নেয়া উচিত।

করণীয়

* নাক খোঁচাবেন না, নাকের ভেতর তুলা, কাপড় বা রুমালের কোণা ঢুকাবেন না।

* অতিরিক্ত ঠাণ্ডা বা গরম পরিবেশ এড়িয়ে চলুন।

* পরিশ্রান্ত হবেন না। ২-৩ সপ্তাহ অতিরিক্ত পরিশ্রম থেকে বিরত থাকুন।

* ঠাণ্ডা বা সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত রোগীদের থেকে দূরে থাকুন।

* ৪-৫ দিন গরম পানীয় (চা, কফি) এবং উত্তেজকপানীয় পরিহার করুন।

* কমপক্ষে ৪-৫ দিন ধূমপান থেকে বিরত থাকুন। আপনি যদি এসপিরিন বা ডিসপিরিন জাতীয় ওষুধ খেতে থাকেন তাহলে তা ৫ দিন বন্ধ রাখুন।

* রোগী যদি কোষ্ঠকাঠিন্য রোগে ভুগে থাকেন তাহলে বেশি করে শাকসবজি, ফলমূল এবং আঁশযুক্ত খাবার খাবেন। মূলত্যাগের সময় বেশি চাপ দেবেন না।

* পুনরায় রক্তক্ষরণ হলে আতংকিত হবেন না। বসে সামনের দিকে মাথা ঝুঁকে থাকুন। বরফের টুকরো কাপড়ে জড়িয়ে নাক ও কপালে ঠাণ্ডা ছ্যাঁক দিন এবং এক টুকরো বরফ চুষতে থাকুন। নাকের সামনের নরম অংশ দুই আঙুল দিয়ে শক্ত করে চেপে ধরুন এবং কমপক্ষে ৫ মিনিট ধরে রাখুন।

সার্জিক্যাল চিকিৎসা : আধুনিককালে এন্ডোসকপি ব্যবহারের ফলে এর আর প্রয়োজন নেই। নাকের রক্তপাত বন্ধ না হলে এন্ডোসকপির সাহায্যে নাকের ভেতর পরীক্ষা করুন।

লেখক : নাক, কান-গলা রোগ বিশেষজ্ঞ ও সার্জন

আরো পড়ুন: বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে মিয়ানমারের ১০৫ সীমান্তরক্ষী

 

2 thoughts on “নাক দিয়ে রক্ত পড়ার কারন

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপডেট সংবাদ

বিজ্ঞান সাময়িকী নেচারের শীর্ষ ১০ ব্যক্তিত্বের তালিকায় ড. ইউনূস

বিনামূল্যে ব্রেকিং নিউজ পেতে ok ক্লিক করুন OK .

নাক দিয়ে রক্ত পড়ার কারন

Update Time : ০১:৩৭:৫৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

নাক দিয়ে যে কোনো ধরনের রক্ত পড়াকে মেডিকেল ভাষায় এপিসট্যাক্সিস বলে। কারণ ভেদে এবং পরিমাণ ভেদে নাকের সামনের দিক দিয়ে রক্ত ঝরতে পারে বা নাকের পেছন দিক দিয়ে রক্ত গড়িয়ে মুখ দিয়ে বের হয়ে আসতে পারে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এটা নিজ থেকেই বন্ধ হয়ে যায় এবং পরিমাণে খুব বেশি হয় না।

কারণ

* হার্টের অসুখে রক্ত পাতলা করার জন্য দেয়া হয়। যেমন- এসপিরিন, ওয়ারফেরিন ইত্যাদি।

* অনিয়মিত উচ্চরক্তচাপ।

* নাকের ভেতর বিভিন্ন রকম ইনফেকশন। নাকের দীর্ঘদিনের ইনফেকশনের মধ্যে নাকের যক্ষ্মা অন্যতম।

* নাকের আঘাতজনিত কারণ যেমন- অ্যাক্সিডেন্ট, নাকে ঘুষি খাওয়া ইত্যাদি।

* মেকানিক্যাল কারণ যেমন নাকের হাড় বাঁকা, নাকের মধ্যে বোতাম বা বিচি জাতীয় কিছু ঢুকে যাওয়া বা নাকের পলিপ বা নাকের অ্যালার্জি।

* নাকের ভেতর টিউমার বা ক্যান্সার।

* নাকের ভেতর বিভিন্ন ধরনের ইমিউনোলজিক্যাল রোগ বা নাকের বিভিন্ন ধরনের ক্ষত।

পরীক্ষা : নাকের রক্তপড়া বেশি মাত্রায় হয় অথবা সহজে বন্ধ হতে চায় না বা যত দিন যায় তত বেশিমাত্রায় রক্ত পড়তে থাকে, সেক্ষেত্রে অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন হতে পারে, যেমন- সাধারণ রক্ত পরীক্ষা বা নাকের এবং সাইনাসের এক্স-রে, এমআরআই, নাকের মাংস নিয়ে তার বায়োপসি, কিডনির পরীক্ষা, রক্তের বিভিন্ন ধরনের জটিল পরীক্ষা, হরমোন ইত্যাদি। নাক-কান-গলা রোগ বিশেষজ্ঞ এ ব্যাপারে নির্দেশনা দেবেন।

যাদের নিয়মিত নাক দিয়ে রক্ত পড়ে তাদের অবশ্যই একজন নাক-কান-গলা রোগ বিশেষজ্ঞ দিয়ে এন্ডোস্কোপির মাধ্যমে নাকের ভেতর ভালোভাবে দেখে নেয়া উচিত।

করণীয়

* নাক খোঁচাবেন না, নাকের ভেতর তুলা, কাপড় বা রুমালের কোণা ঢুকাবেন না।

* অতিরিক্ত ঠাণ্ডা বা গরম পরিবেশ এড়িয়ে চলুন।

* পরিশ্রান্ত হবেন না। ২-৩ সপ্তাহ অতিরিক্ত পরিশ্রম থেকে বিরত থাকুন।

* ঠাণ্ডা বা সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত রোগীদের থেকে দূরে থাকুন।

* ৪-৫ দিন গরম পানীয় (চা, কফি) এবং উত্তেজকপানীয় পরিহার করুন।

* কমপক্ষে ৪-৫ দিন ধূমপান থেকে বিরত থাকুন। আপনি যদি এসপিরিন বা ডিসপিরিন জাতীয় ওষুধ খেতে থাকেন তাহলে তা ৫ দিন বন্ধ রাখুন।

* রোগী যদি কোষ্ঠকাঠিন্য রোগে ভুগে থাকেন তাহলে বেশি করে শাকসবজি, ফলমূল এবং আঁশযুক্ত খাবার খাবেন। মূলত্যাগের সময় বেশি চাপ দেবেন না।

* পুনরায় রক্তক্ষরণ হলে আতংকিত হবেন না। বসে সামনের দিকে মাথা ঝুঁকে থাকুন। বরফের টুকরো কাপড়ে জড়িয়ে নাক ও কপালে ঠাণ্ডা ছ্যাঁক দিন এবং এক টুকরো বরফ চুষতে থাকুন। নাকের সামনের নরম অংশ দুই আঙুল দিয়ে শক্ত করে চেপে ধরুন এবং কমপক্ষে ৫ মিনিট ধরে রাখুন।

সার্জিক্যাল চিকিৎসা : আধুনিককালে এন্ডোসকপি ব্যবহারের ফলে এর আর প্রয়োজন নেই। নাকের রক্তপাত বন্ধ না হলে এন্ডোসকপির সাহায্যে নাকের ভেতর পরীক্ষা করুন।

লেখক : নাক, কান-গলা রোগ বিশেষজ্ঞ ও সার্জন

আরো পড়ুন: বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে মিয়ানমারের ১০৫ সীমান্তরক্ষী