গাইবান্ধায় চলতি মৌসুমে জেলায় ১৭৩ ইটভাটায় ইট পোড়ানা হচ্ছে। এর মধ্যে ১৫৫ টির পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেই।এসব অবৈধ ইটভাটার মধ্যে অন্তত ২৫ টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাশে গড়ে তোলা হয়েছে।
ইটভাটা উচ্ছেদে কঠোর ব্যস্তা নেওয়া হচ্ছেনা।এর ফলে ইটভাটার কাঁলো ধোঁয়ায় পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। বিশেষ করে শিশ্তু শিক্ষার্থীরা স্বাস্হ্যঝুকিতে পরছে।পাশাপাশি ফসলি জমির উপরের মাটি কেঁটে ইটভাটায় নেওয়া হচ্ছে।এতে জমির উর্বরতা কমছে।এবিষয়ে পরিবেশ আন্দোলন গাইবান্ধার আহবায়ক ওয়াজিউর রহমান বলেন,ভাটার কাঁলো ধোঁয়া ও ইট পোড়ানোর গন্ধে সাধারন মানুষ অতিষ্ঠ।এগ্তুলো উচ্ছেদের প্রশাসনের কোন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না।অবৈধ ভাটা উচ্ছেদে বাঁধা কোথায় তা বোধগম্য নয়।তবে গাইবান্ধার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মশিউর রহমান বলেন,অবৈধ ইটভাটা উচ্ছেদ অভিযান শ্তুরু করা হয়েছে। গত কয়েক দিনে সুন্দরগঞ্জের একটি ভাটাকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।পর্যায়ক্রমে সব অবৈধ ইটভাটা উচ্ছেদ করা হবে।পরিবেশ অধিদপ্তর রংপুর বিভাগীয় কার্যালয় সুত্রে জানা গেছে,গাইবান্ধার সাতটি উপজেলার মধ্যে ভাঙ্ঘনকবলিত ফুলছড়িতে কোন ইটভাটা নেই।বাকি ৬ টিতে ১৭৩ টি ইটভাটা রয়েছে। বর্তমানে চলমান ১৭৩ ইটভাটার মধ্যে ১৫৭ অবৈধ। ১৬ টির পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র আছে।আইন অনুযায়ী ইটভাটা স্থাপনের জন্য জেলা প্রশাসকের কাজ থেকে লাইসেন্স গ্রহন করা বাধ্যতামূলক লাইসেন্সের পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র বাধ্যতামূলক। সেই বিধান লঙ্ঘনের দায়ে ২ বছর কারাদণ্ড বা ২০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হতে পারে।
গাইবান্ধা শহর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দুরে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার কিশামত সর্বানন্দ গ্রাম, এই গ্রামে গড়ে উঠেছে এফকেএস ইটভাটা।ভাটা থেকে প্রায় দুইগজ দুরেই খাদেমুল ইসলামিয়া মাদ্রাসা ও ইমান উদ্দিন জামিউল হাফেজিয়া মাদ্রসা।ভাটার কারনে পাঠদান ব্যাহত ও পরিবেশ দূষিত হচ্ছে বলে জানান মাদ্রাসার শিক্ষক শিক্ষার্থীরা। সরেজমিনে দেখা গেছে,ইটভাটা দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংলগ্ন ভাটায় ইট পোড়ানো চলছে।কাঁলো ধোঁয়া বের হচ্ছে। শ্রমিকদের কেউ কেউ কাচা ইট পোড়ানোর স্থানে নিয়ে যাচ্ছেন।শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠ ঘেঁসে কাচা ইট রাখা হয়েছে। মাদ্রাসার একজন শিক্ষক জানান,পাঠদান চলাকালে যানবাহন চলাচলের সময় বালুঝড় হয়।বেঞ্চ বালুতে ঢেঁকে যায়।এমনকি ইট ও মাটি পরিবহনের কারনে প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার কাচা রাস্তা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।প্রতিবাদ করলেই হুমকি দেওয়া হয়।সর্বানন্দ গ্রামের আবুল কাশেমের অভিযোগ ভাটার কারনে ফসল ও গাছপালা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।এসব বিষয়ে এফকেএস ভাটার মালিক মাহিউল ইসলামের সংগে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে না পাওয়ায় মতামত নেওয়া সম্ভব হয়নি।একই ভাবে সাদুল্যাপুর উপজেলার ইদিলপুর ইউনিয়নের সাদুল্যাপুর ঠুঠিয়াপুকুর সড়কের পঞ্চিম পাশে এসআরবি ইটভাটার অবস্থান,এর পূর্বপাশে কুঞ্জমাহিপুর দক্ষিনপাড়া সরকারি প্রার্থমিক বিদ্যালয়,যদিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এক কিলোমিটার এর মধ্যে ইটভাটা স্থাপন নিষিদ্ধ। এবিষয়ে রংপুর পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক সৈয়দ ফরহাদ হোসেন,মুঠোফোনে বলেন,পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ও লাইসেন্স না থাকায় গত ২৯-৩১ জানুয়ারি গাইবান্ধার পলাশবাড়ী ও সাদুল্যাপুর উপজেলায় ৬ টি ইটভাটার মালিককে ৩৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এরমধ্যে পলাশবাড়ী উপজেলার মেসার্স জেবি ব্রিকসকে ৫ লাখ, মেসার্স টিবিএল ব্রিকসকে ৭লাখ,মেসার্স বিবিস ব্রিকসকে ৬লাখ,মেসার্স চৈতালি ব্রিকস(এমসিবি)৮লাখ,সাদুল্যাপুর উপজেলার মেসার্স চৌধুরী ব্রিকস(এমসিবি)৪লাখ ৫০ হাজার ও মেসার্স এসএমবি ব্রিকসকে ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।গাইবান্ধা জেলা প্রশাসন ও রংপুর পরিবেশ অধিদপ্তর যৌর্থভাবে অভিযান পরিচালনা করে,তা অব্যাহত থাকবে বলে জানান।
One thought on “গাইবান্ধায় বেশিভাগ ইটভাটাই অবৈধ পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেই”