বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার ভরপাশা ইউনিয়নের দুধলমৌ আদর্শ নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়। ১৯৭২ সালে তাজ মোহাম্মদ সিকদার বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৮৫ সালে বিদ্যালয়টি এমপিও ভুক্ত হয়। ২০২১ সাল পর্যন্ত মোটামুটি শিক্ষার্থী থাকলেও গত ৩ বছর ধরে এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে নেই কোনো শিক্ষার্থী। বিদ্যালয়টির শিক্ষকদের উদাসীনতা ও দায়িত্বহীনতার কারণে বিদ্যালয়টি এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে।
এদিকে এ প্রতিষ্ঠানটিতে শিক্ষার্থী না থাকলেও আছেন পাঁচ শিক্ষক। শ্রেণিকক্ষে পাঠদান করতে না হলেও টানা ৩ বছর ধরেই বসে বসে বিনা পরিশ্রমে বেতন-ভাতা নিচ্ছেন তারা। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা সহ চারজন একেক জনে বেতন নিচ্ছেন প্রতি মাসে ২৯ হাজার টাকা ও অন্য একজন সরকারী শিক্ষক নিচ্ছেন ২১ হাজার ৮ শত ৯৭ টাকা। এমন পরিস্থিতিতে প্রতিবছর সরকারের লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করছে এই পাঁচ শিক্ষক। বছরের পর বছর ধরে শিক্ষকরা সরকারি টাকা আত্মসাৎ করে আসলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোন নজর নেই।
আরো পড়ুন:লালমনিরহাটে যক্ষ্মা দিবস পালিত
সরেজমিনে দুধলমৌ আদর্শ নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় গিয়ে দেখা যায়, একটি পরিত্যক্ত টিনশেড ভবনে দাঁড়িয়ে আছে বিদ্যালয়ের একটি জরাজীর্ণ ভবন। বিদ্যালয়টির শ্রেণিকক্ষ ফাঁকা। বিদ্যালয়টির পাঠদান কক্ষগুলোর দরজা জানালা কিছুই নেই। উপরের টিনের চালাগুলো মরিচা ধরে ভেঙ্গে গেছে। নেই কোনো শিক্ষার্থী-কোলাহল। তবে স্কুল ঘিরে আবর্জনার স্তূপ দেখা দেছে। শ্রেণিকক্ষ গুলোর মধ্যে শিক্ষার্থীদের বসার বেঞ্চগুলো ভেঙে পড়ে রয়েছে। বিদ্যালয়টিতে শিক্ষার্থী না থাকলেও সপ্তাহে দুই একজন করে ভাগাভাগি করে শিক্ষকরা আসেন বিদ্যালয়ে। আর এভাবেই তারা বছরের পর বছর ধরে বেতন তুলছেন।
দুধলমৌ আদর্শ নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় এর ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা নাজমা বেগম বলেন, শিক্ষার্থীরা এই স্কুলে এখন আর ভর্তি হতে চাচ্ছে না। কেন ভর্তি হতে চাচ্ছে না এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোন উত্তর দিতে পারেননি।
এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তপন কুমার জানান, বিষয়টি দুঃখজনক, শিক্ষার্থী না পড়িয়েও বছরের পর বছর পাঁচ শিক্ষক বেতন নিচ্ছেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।
One thought on “তিন বছর যাবত ছাত্র নেই বিদ্যালয়ে, বেতন-ভাতা নিচ্ছেন ৫ শিক্ষক”