Dhaka 4:20 am, Wednesday, 1 May 2024

পুলিশকে তোয়াক্কা না করে মেম্বারের নেতৃত্বে চলছে জমজমাট জুয়ার আসর

কুমিল্লা জেলার চান্দিনা উপজেলার দোল্লাই নবাবপুর ইউনিয়ন এর লেবাস গ্রামের (খালপাড়ে) খলিল মেম্বার নেতৃত্বে চলছে জমজমাট জুয়ার আসর। প্রভাবশালী মহলগুলোকে হাত করে ইউপি সদস্য খলিলের নেতৃত্বে অনৈতিকত জুয়া বোর্ড পরিচালনা করছে এলাকার শক্তিশালী সিন্ডিকেট। এখানে চান্দিনা উপজেলা ছাড়াও কচুয়া, বরুড়া সহ বিভিন্ন উপজেলার জুয়াড়িরা আসে জুয়া খেলার জন্য। দীর্ঘদিন যাবৎ উক্ত খলিল মেম্বার বেলাসের পাশে কড়িয়াগ্রামে জুয়ার আসর চালিয়ে আসছিল। কিছুদিন পুর্বে উপজেলা আইন শৃঙ্খলা কমিটির মিটিং উক্ত জুয়ার আসর নিয়ে কথা উঠে। সেখানে জুয়া বেশকিছু দিন বন্ধ থাকার পর বর্তমানে পাশের গ্রাম বেলাসের খালপাড়ে খলিল মেম্বার আবারো জুয়ার আসর বসিয়েছে। জুয়ার আসর প্রতিদিন রাত ১০টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত বিরতিহীন ভাবে চলছে।

আরো পড়ুন:শপথ নিলেন ময়মনসিংহ ও কুমিল্লা সিটির মেয়র

বেলাস গ্রামটি চান্দিনা উপজেলা শেষ প্রান্তে হওয়ায় প্রশাসনের তৎপরতা না থাকায় এলাকাটি জুয়াড়িদের অভয়ারণ্য হয়ে উঠেছে। সেখানে পুলিশী তৎপরতা খুবই কম, নেই কোন পুলিশী অভিযান। বিধায় এই জুয়ার আসরে পার্শ্ববর্তী এলাকাসহ দুর-দুরান্ত থেকে জুয়াড়ীরা জুয়া খেলতে আসে। জুয়াড়ীরা থানা পুলিশের কোন প্রকার ভয়ভীতির তোয়াক্কা না করে নির্বিঘ্নে প্রকাশ্যে রাতের অন্ধকারে লাইট জালিয়ে জুয়া খেলা চালিয়ে যাচ্ছে। দূর-দূরান্ত থেকে আসা জুয়াড়িরা এখানে লাখ-লাখ টাকার হাত বদল করছে। প্রতিদিন এ চক্রের ফাঁদে পড়ে টাকা খুইয়ে নিঃস্ব হচ্ছেন অনেকেই। এই জুয়াকে কেন্দ্র করে স্পটে চলে সমাল তালে নেশা গ্রহণ ও মাদক কারবার। জুয়া ও মাদকের মোহে পড়ে অনেকে বসছেন পথে। জুয়া খেলার পাশাপাশি- ইয়াবা টেবলেট, ফেন্সিডিল, বাংলা মদ ও গাজার ব্যবস্থা থাকায় উঠতি বয়সের ছেলেরাও এখানে এসে ভীড় জমায়। ফলে এলাকায় চুরি, ছিনতাই বেড়েই চলছে। জানা গেছে, চান্দিনার শীর্ষ জুয়াড়ী খলিল মেম্বার দীর্ঘদিন থেকে বিভিন্ন স্থানে জুয়ার বোর্ড পরিচালনা করে আসছে। কিন্তু স্থানীয় কিছু প্রতিবাদীরা এই জুয়ার বোর্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে তার কোন সুফল পাচ্ছেন না। যার ফলে খলিল মেম্বার দিন-দিন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। চান্দিনা উপজেলার অন্যান্য এলাকায় জুয়াড়িকে আটক করেছে থানা পুলিশ।তবে রহস্যজনক কারনে এই এলাকার জুয়ার বোর্ড এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছে।স্থানীয় সূত্র থেকে জানা যায়, জুয়াড়ী খলিল মেম্বার কোন কিছুর তোয়াক্কা না করেই স্থানীয় প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করে চালিয়ে যাচ্ছে জুয়ার আসর। প্রকাশ্যে এই জুয়ার আসর বসলেও নিরব ভূমিকা পালন করায় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠেছে। এর ফলে জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে।

আরো পড়ুন:কুমিল্লায় ২ মাদক ব্যবসায়ী  গ্রেফতার

চলমান জুয়া ও মাদকের আসর নিয়ে দোল্লাই নবাবপুর ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান জনাব মোঃ শাহাজাহান মিয়া বলেন, জুযার আসরটি দ্রুত বন্ধ না হলে চান্দিনা উপজেলার আইন শৃঙ্খলার মারাত্মক অবনতি দেখা দিবে এবং আমার ইউনিয়নের সুনাম ক্ষুন্ন হবে। যত দ্রুত সম্ভব জুয়ারী খলিল মেম্বারকে আইনের আওতায় এনে জুয়ার আসরটি বন্ধ করার জন্য প্রশাসনের নিকট বিশেষভাবে অনুরোধ করছি।  এব্যাপারে চান্দিনা থানার অফিসার ইনচার্জ জনাব আহাম্মদ সনজুর মোরশেদ পিপিএম এর সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি বলেন আমি এ ব্যাপারে অবগত নেই, কিন্তু আমি জুয়ার ব্যাপারটি দেখছি। পরে চান্দিনা থানা পুলিশ অভিযানে যায়, তখন অভিযানের আগেই খবর পৌঁছে যায় জুয়াড়িদের কাছে। আর খবর পেয়েই তারা পলিয়ে যায়। পুলিশ চলে আসার পর আবারো চলে তাদের আসর। তিনি আরো বলেন- জুয়ার বিরুদ্ধে অভিযান চলছে, জুয়াড়িদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। কিন্তু জামিনে তারা দ্রুত বের হয়ে নতুন কোন স্থানে আবারো জুয়ার আসর বসিয়ে তাদের আখের গুছিয়ে নিচ্ছে।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপডেট সংবাদ

পুলিশকে তোয়াক্কা না করে মেম্বারের নেতৃত্বে চলছে জমজমাট জুয়ার আসর

Update Time : 02:58:52 pm, Thursday, 4 April 2024

কুমিল্লা জেলার চান্দিনা উপজেলার দোল্লাই নবাবপুর ইউনিয়ন এর লেবাস গ্রামের (খালপাড়ে) খলিল মেম্বার নেতৃত্বে চলছে জমজমাট জুয়ার আসর। প্রভাবশালী মহলগুলোকে হাত করে ইউপি সদস্য খলিলের নেতৃত্বে অনৈতিকত জুয়া বোর্ড পরিচালনা করছে এলাকার শক্তিশালী সিন্ডিকেট। এখানে চান্দিনা উপজেলা ছাড়াও কচুয়া, বরুড়া সহ বিভিন্ন উপজেলার জুয়াড়িরা আসে জুয়া খেলার জন্য। দীর্ঘদিন যাবৎ উক্ত খলিল মেম্বার বেলাসের পাশে কড়িয়াগ্রামে জুয়ার আসর চালিয়ে আসছিল। কিছুদিন পুর্বে উপজেলা আইন শৃঙ্খলা কমিটির মিটিং উক্ত জুয়ার আসর নিয়ে কথা উঠে। সেখানে জুয়া বেশকিছু দিন বন্ধ থাকার পর বর্তমানে পাশের গ্রাম বেলাসের খালপাড়ে খলিল মেম্বার আবারো জুয়ার আসর বসিয়েছে। জুয়ার আসর প্রতিদিন রাত ১০টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত বিরতিহীন ভাবে চলছে।

আরো পড়ুন:শপথ নিলেন ময়মনসিংহ ও কুমিল্লা সিটির মেয়র

বেলাস গ্রামটি চান্দিনা উপজেলা শেষ প্রান্তে হওয়ায় প্রশাসনের তৎপরতা না থাকায় এলাকাটি জুয়াড়িদের অভয়ারণ্য হয়ে উঠেছে। সেখানে পুলিশী তৎপরতা খুবই কম, নেই কোন পুলিশী অভিযান। বিধায় এই জুয়ার আসরে পার্শ্ববর্তী এলাকাসহ দুর-দুরান্ত থেকে জুয়াড়ীরা জুয়া খেলতে আসে। জুয়াড়ীরা থানা পুলিশের কোন প্রকার ভয়ভীতির তোয়াক্কা না করে নির্বিঘ্নে প্রকাশ্যে রাতের অন্ধকারে লাইট জালিয়ে জুয়া খেলা চালিয়ে যাচ্ছে। দূর-দূরান্ত থেকে আসা জুয়াড়িরা এখানে লাখ-লাখ টাকার হাত বদল করছে। প্রতিদিন এ চক্রের ফাঁদে পড়ে টাকা খুইয়ে নিঃস্ব হচ্ছেন অনেকেই। এই জুয়াকে কেন্দ্র করে স্পটে চলে সমাল তালে নেশা গ্রহণ ও মাদক কারবার। জুয়া ও মাদকের মোহে পড়ে অনেকে বসছেন পথে। জুয়া খেলার পাশাপাশি- ইয়াবা টেবলেট, ফেন্সিডিল, বাংলা মদ ও গাজার ব্যবস্থা থাকায় উঠতি বয়সের ছেলেরাও এখানে এসে ভীড় জমায়। ফলে এলাকায় চুরি, ছিনতাই বেড়েই চলছে। জানা গেছে, চান্দিনার শীর্ষ জুয়াড়ী খলিল মেম্বার দীর্ঘদিন থেকে বিভিন্ন স্থানে জুয়ার বোর্ড পরিচালনা করে আসছে। কিন্তু স্থানীয় কিছু প্রতিবাদীরা এই জুয়ার বোর্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে তার কোন সুফল পাচ্ছেন না। যার ফলে খলিল মেম্বার দিন-দিন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। চান্দিনা উপজেলার অন্যান্য এলাকায় জুয়াড়িকে আটক করেছে থানা পুলিশ।তবে রহস্যজনক কারনে এই এলাকার জুয়ার বোর্ড এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছে।স্থানীয় সূত্র থেকে জানা যায়, জুয়াড়ী খলিল মেম্বার কোন কিছুর তোয়াক্কা না করেই স্থানীয় প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করে চালিয়ে যাচ্ছে জুয়ার আসর। প্রকাশ্যে এই জুয়ার আসর বসলেও নিরব ভূমিকা পালন করায় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠেছে। এর ফলে জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে।

আরো পড়ুন:কুমিল্লায় ২ মাদক ব্যবসায়ী  গ্রেফতার

চলমান জুয়া ও মাদকের আসর নিয়ে দোল্লাই নবাবপুর ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান জনাব মোঃ শাহাজাহান মিয়া বলেন, জুযার আসরটি দ্রুত বন্ধ না হলে চান্দিনা উপজেলার আইন শৃঙ্খলার মারাত্মক অবনতি দেখা দিবে এবং আমার ইউনিয়নের সুনাম ক্ষুন্ন হবে। যত দ্রুত সম্ভব জুয়ারী খলিল মেম্বারকে আইনের আওতায় এনে জুয়ার আসরটি বন্ধ করার জন্য প্রশাসনের নিকট বিশেষভাবে অনুরোধ করছি।  এব্যাপারে চান্দিনা থানার অফিসার ইনচার্জ জনাব আহাম্মদ সনজুর মোরশেদ পিপিএম এর সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি বলেন আমি এ ব্যাপারে অবগত নেই, কিন্তু আমি জুয়ার ব্যাপারটি দেখছি। পরে চান্দিনা থানা পুলিশ অভিযানে যায়, তখন অভিযানের আগেই খবর পৌঁছে যায় জুয়াড়িদের কাছে। আর খবর পেয়েই তারা পলিয়ে যায়। পুলিশ চলে আসার পর আবারো চলে তাদের আসর। তিনি আরো বলেন- জুয়ার বিরুদ্ধে অভিযান চলছে, জুয়াড়িদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। কিন্তু জামিনে তারা দ্রুত বের হয়ে নতুন কোন স্থানে আবারো জুয়ার আসর বসিয়ে তাদের আখের গুছিয়ে নিচ্ছে।