Dhaka 10:52 pm, Tuesday, 2 July 2024

ফিরে দেখা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক যারা

আর মাত্র কয়েকদিন পর ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং যুক্তরাষ্ট্রে পর্দা উঠতে যাচ্ছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের নবম আসরের। ২০০৭ সালে প্রথমবারের মতো দক্ষিণ আফ্রিকায় শুরু হয় এই টুর্নামেন্ট। এবার অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছে ২০ দল। ক্রিকেটের সীমিত ওভারের এই সংস্করণ মানেই রান বন্যা। গত আট আসরে কেবল দুবার ম্যান অব দ্য সিরিজের পুরস্কার গিয়েছে অলরাউন্ডার কিংবা বোলারের কাছে। বাকি সবগুলো ম্যান অব দ্য সিরিজের পুরস্কার পেয়েছেন ব্যাটাররাই।

আরো পড়ুন:আইসিসির স্বীকৃতি পেল মেজর লিগ ক্রিকেট

এক নজরে গত আট আসরের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকা:

ম্যাথু হেইডেন (অস্ট্রেলিয়া) (২০০৭) দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত হওয়া প্রথম আসরে সর্বোচ্চ রান করেছিলেন বিধ্বংসী অজি ওপেনার ম্যাথু হেইডেন। দল ভারতের কাছে হেরে সেমিফাইনালে বিদায় নিলেও ব্যাট হাতে তিনি ছিলেন সবার সেরা। ৬ ইনিংসে ৮৮.৩৩ গড়ে ও ১৪৪.৮০ স্ট্রাইক রেটে করেছিলেন ২৬৫ রান। সর্বোচ্চ ইনিংসটি ছিল ৭৩ রানের। ৩২টি চার ও ১০টি ছয়ের পাশাপাশি করেছিলেন চারটি অর্ধশতক।

তিলকারাত্নে দিলশান (শ্রীলংকা) (২০০৯) এবারের আসর ক্রিকেটের জন্মভূমি ইংল্যান্ডে। অল এশিয়ান ফাইনালে শিরোপা উঁচিয়ে ধরে পাকিস্তান। তবে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন লঙ্কান অলরাউন্ডার তিলকারাত্নে দিলশান। ৭ ইনিংসে ৫২.৮৩ গড়ে ও ১৪৪.৭৪ স্ট্রাইক রেটে করেছিলেন ৩১৭ রান। সর্বোচ্চ ইনিংসটি ছিল ৯৬ রানের। চার মেরেছিলেন ৪৬টি, ছয় ৩টি।

মাহেলা জয়াবর্ধনে (শ্রীলংকা) (২০১০) প্রথমবারের মতো বিশ্ব আসর বসেছিল ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে। চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড। দল সেমিফাইনাল থেকে বাদ পড়লেও সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক আরেক লঙ্কান তারকা মাহেলা জয়াবর্ধনে। ৬ ইনিংসে করেন ৩০২ রান। ৬০.৪০ গড় ও ১৫৯.৭৮ স্ট্রাইক রেটে এই রান করেন তিনি। ১টি শতকের পাশাপাশি ছিল দুইটি অর্ধ শতক।

শেন ওয়াটসন (অস্ট্রেলিয়া) (২০১২) প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ আয়োজিত হয় এশিয়ায়। দল সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নিলেও সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় সবার ওপরে ছিলেন শেন ওয়াটসন। ৬ ইনিংসে ৩ অর্ধ শতকের সাহায্যে ৪৯.৮০ গড় ও ১৫০ স্ট্রাইক রেটে ২৪৯ রান করেন তিনি। প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ জিতে ক্যারিবীয়রা।

বিরাট কোহলি (ভারত) (২০১৪) এবারের বিশ্বকাপ বাংলাদেশে। মিরপুরের সেই অল এশিয়ান ফাইনালে ভারতকে হারিয়ে প্রথমবার শিরোপা উঁচিয়ে ধরে শ্রীলঙ্কা। বিশ্বকাপ জিততে না পারলেও সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হন কোহলি। ৬ ইনিংসে ১০৬.৩৩ গড়ে ৩১৯ রান করেন তিনি। যা এখন পর্যন্ত এক আসরে করা কোনো ব্যাটসম্যানের সর্বোচ্চ রান। ১২৯.১৪ স্ট্রাইক রেটে ৪ অর্ধ শতকের সাহায্যে এই রান করেন তিনি। সর্বোচ্চ ইনিংস ছিল ৭৭ রানের।

তামিম ইকবাল (বাংলাদেশ) (২০১৬) ভারতে আয়োজিত এই বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হন একজন বাংলাদেশি। তামিম ইকবাল ৬ ইনিংসে করেন ২৯৫ রান। দল খারাপ খেললেও ব্যাট হাতে ঠিকই উজ্জ্বল ছিলেন তিনি। ১৪২.৫১ স্ট্রাইক রেট ও ৭৩.৭৫ গড়ে এক শতক ও এক অর্ধ শতকের সাহায্যে এই রান করেন তিনি। ২৪টি চারের বিপরীতে ছয় মেরেছেন ১৪টি। তামিম ইকবাল এই আসরেই একমাত্র বাংলাদেশি হিসেবে সেঞ্চুরি করেন। ওমানের বিপক্ষে এসেছিল সেই সেঞ্চুরি। যদিও মূলপর্বে তামিমের ব্যাট সেই অর্থে হাসেনি। বাংলাদেশও ব্যর্থ হয় সেবারে। আসরের চ্যাম্পিয়ন হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

বাবর আজম (পাকিস্তান) (২০২১) প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ আয়োজন করে দুই সহযোগি দেশ। সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ওমানে আয়োজিত সেই বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ রান করেন বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান বাবর আজম। ৬ ইনিংসে ৬০.৬০ গড়ে ও ১২৬.২৫ স্ট্রাইক রেটে ৩০৩ রান করেন তিনি। কোনো শতকের দেখা না পেলেও অর্ধ শতক করেন ৪টি। ওয়ানডে বিশ্বকাপের সফলতম দল অস্ট্রেলিয়া প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতে ওই আসরে।

বিরাট কোহলি (ভারত) (২০২২) গত আসরের শিরোপাজয়ী অস্ট্রেলিয়া এবারের আয়োজক। প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে দ্বিতীয়বারের মতো সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হন বর্তমান সময়ের সেরা ব্যাটসম্যান বিরাট কোহলি। ৬ ইনিংসে তার সংগ্রহ ছিল ২৯৬ রান। ৯৮.৬৬ গড়ের পাশাপাশি ১৩৬.৪০ স্ট্রাইক রেট। অর্ধ শতক ৪টি। সর্বোচ্চ রানের ইনিংসটি ৮২ রানের। পাকিস্তানকে হারিয়ে এক যুগ পর আবার শিরোপা উঁচিয়ে ধরে ইংল্যান্ড।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

ফিরে দেখা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক যারা

Update Time : 05:56:33 pm, Wednesday, 29 May 2024

আর মাত্র কয়েকদিন পর ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং যুক্তরাষ্ট্রে পর্দা উঠতে যাচ্ছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের নবম আসরের। ২০০৭ সালে প্রথমবারের মতো দক্ষিণ আফ্রিকায় শুরু হয় এই টুর্নামেন্ট। এবার অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছে ২০ দল। ক্রিকেটের সীমিত ওভারের এই সংস্করণ মানেই রান বন্যা। গত আট আসরে কেবল দুবার ম্যান অব দ্য সিরিজের পুরস্কার গিয়েছে অলরাউন্ডার কিংবা বোলারের কাছে। বাকি সবগুলো ম্যান অব দ্য সিরিজের পুরস্কার পেয়েছেন ব্যাটাররাই।

আরো পড়ুন:আইসিসির স্বীকৃতি পেল মেজর লিগ ক্রিকেট

এক নজরে গত আট আসরের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকা:

ম্যাথু হেইডেন (অস্ট্রেলিয়া) (২০০৭) দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত হওয়া প্রথম আসরে সর্বোচ্চ রান করেছিলেন বিধ্বংসী অজি ওপেনার ম্যাথু হেইডেন। দল ভারতের কাছে হেরে সেমিফাইনালে বিদায় নিলেও ব্যাট হাতে তিনি ছিলেন সবার সেরা। ৬ ইনিংসে ৮৮.৩৩ গড়ে ও ১৪৪.৮০ স্ট্রাইক রেটে করেছিলেন ২৬৫ রান। সর্বোচ্চ ইনিংসটি ছিল ৭৩ রানের। ৩২টি চার ও ১০টি ছয়ের পাশাপাশি করেছিলেন চারটি অর্ধশতক।

তিলকারাত্নে দিলশান (শ্রীলংকা) (২০০৯) এবারের আসর ক্রিকেটের জন্মভূমি ইংল্যান্ডে। অল এশিয়ান ফাইনালে শিরোপা উঁচিয়ে ধরে পাকিস্তান। তবে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন লঙ্কান অলরাউন্ডার তিলকারাত্নে দিলশান। ৭ ইনিংসে ৫২.৮৩ গড়ে ও ১৪৪.৭৪ স্ট্রাইক রেটে করেছিলেন ৩১৭ রান। সর্বোচ্চ ইনিংসটি ছিল ৯৬ রানের। চার মেরেছিলেন ৪৬টি, ছয় ৩টি।

মাহেলা জয়াবর্ধনে (শ্রীলংকা) (২০১০) প্রথমবারের মতো বিশ্ব আসর বসেছিল ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে। চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড। দল সেমিফাইনাল থেকে বাদ পড়লেও সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক আরেক লঙ্কান তারকা মাহেলা জয়াবর্ধনে। ৬ ইনিংসে করেন ৩০২ রান। ৬০.৪০ গড় ও ১৫৯.৭৮ স্ট্রাইক রেটে এই রান করেন তিনি। ১টি শতকের পাশাপাশি ছিল দুইটি অর্ধ শতক।

শেন ওয়াটসন (অস্ট্রেলিয়া) (২০১২) প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ আয়োজিত হয় এশিয়ায়। দল সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নিলেও সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় সবার ওপরে ছিলেন শেন ওয়াটসন। ৬ ইনিংসে ৩ অর্ধ শতকের সাহায্যে ৪৯.৮০ গড় ও ১৫০ স্ট্রাইক রেটে ২৪৯ রান করেন তিনি। প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ জিতে ক্যারিবীয়রা।

বিরাট কোহলি (ভারত) (২০১৪) এবারের বিশ্বকাপ বাংলাদেশে। মিরপুরের সেই অল এশিয়ান ফাইনালে ভারতকে হারিয়ে প্রথমবার শিরোপা উঁচিয়ে ধরে শ্রীলঙ্কা। বিশ্বকাপ জিততে না পারলেও সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হন কোহলি। ৬ ইনিংসে ১০৬.৩৩ গড়ে ৩১৯ রান করেন তিনি। যা এখন পর্যন্ত এক আসরে করা কোনো ব্যাটসম্যানের সর্বোচ্চ রান। ১২৯.১৪ স্ট্রাইক রেটে ৪ অর্ধ শতকের সাহায্যে এই রান করেন তিনি। সর্বোচ্চ ইনিংস ছিল ৭৭ রানের।

তামিম ইকবাল (বাংলাদেশ) (২০১৬) ভারতে আয়োজিত এই বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হন একজন বাংলাদেশি। তামিম ইকবাল ৬ ইনিংসে করেন ২৯৫ রান। দল খারাপ খেললেও ব্যাট হাতে ঠিকই উজ্জ্বল ছিলেন তিনি। ১৪২.৫১ স্ট্রাইক রেট ও ৭৩.৭৫ গড়ে এক শতক ও এক অর্ধ শতকের সাহায্যে এই রান করেন তিনি। ২৪টি চারের বিপরীতে ছয় মেরেছেন ১৪টি। তামিম ইকবাল এই আসরেই একমাত্র বাংলাদেশি হিসেবে সেঞ্চুরি করেন। ওমানের বিপক্ষে এসেছিল সেই সেঞ্চুরি। যদিও মূলপর্বে তামিমের ব্যাট সেই অর্থে হাসেনি। বাংলাদেশও ব্যর্থ হয় সেবারে। আসরের চ্যাম্পিয়ন হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

বাবর আজম (পাকিস্তান) (২০২১) প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ আয়োজন করে দুই সহযোগি দেশ। সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ওমানে আয়োজিত সেই বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ রান করেন বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান বাবর আজম। ৬ ইনিংসে ৬০.৬০ গড়ে ও ১২৬.২৫ স্ট্রাইক রেটে ৩০৩ রান করেন তিনি। কোনো শতকের দেখা না পেলেও অর্ধ শতক করেন ৪টি। ওয়ানডে বিশ্বকাপের সফলতম দল অস্ট্রেলিয়া প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতে ওই আসরে।

বিরাট কোহলি (ভারত) (২০২২) গত আসরের শিরোপাজয়ী অস্ট্রেলিয়া এবারের আয়োজক। প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে দ্বিতীয়বারের মতো সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হন বর্তমান সময়ের সেরা ব্যাটসম্যান বিরাট কোহলি। ৬ ইনিংসে তার সংগ্রহ ছিল ২৯৬ রান। ৯৮.৬৬ গড়ের পাশাপাশি ১৩৬.৪০ স্ট্রাইক রেট। অর্ধ শতক ৪টি। সর্বোচ্চ রানের ইনিংসটি ৮২ রানের। পাকিস্তানকে হারিয়ে এক যুগ পর আবার শিরোপা উঁচিয়ে ধরে ইংল্যান্ড।