Dhaka 2:01 pm, Friday, 5 July 2024

এবার জোটের ওপর ভরসা করতে হচ্ছে মোদিকে

টানা তৃতীয় বারের মতো ভারতের প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন নরেন্দ্র মোদি। স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর পাশে নিজের নামটিও তিনি লেখাতে চলেছেন। যদিও নেহরুর মতো একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারলেন না তিনি। মঙ্গলবার (৪ জুন) ১৮তম লোকসভা নির্বাচনে মোদির দল ক্ষমতাসীন বিজেপি এককভাবে সর্বোচ্চসংখ্যক আসন পেলেও তাদের এনডিএ ৩০০ আসনও ছুঁতে পারল না। প্রবলভাবে উঠে এলো কংগ্রেসের উদ্যোগে গড়া ‘ইন্ডিয়া’ জোট। টানা এক দশক পর তারা মোদির বিজেপির একদলীয় শাসনের অবসান ঘটাল। সরকার গড়লেও প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মোদিকে এখন থেকে হতে হবে পরমুখাপেক্ষী। তার ঘাড়ে প্রতিনিয়ত শ্বাস ফেলবে বিরোধী জোট ইন্ডিয়া। লোকসভা নির্বাচনের সবকটির চূড়ান্ত ফল ঘোষণা করা হয়েছে। ভারতের নির্বাচন কমিশন ও গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, ৫৪৩টি আসনের মধ্যে ক্ষমতাসীন দল বিজেপি জয় পেয়েছে ২৪০ আসনে। প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস জয় পেয়েছে ৯৯টি আসনে। অন্য দলগুলোর মধ্যে সমাজবাদী পার্টি (এসপি) ৩৭টি, তৃণমূল কংগ্রেস ২৯টি, ডিএমকে ২২টি, তেলেগু দেশম পার্টি (টিডিপি) ১৬টি, জনতা দল (জেডি-ইউ) ১২টি, শিবসেনা (উদ্ভব) ৯টি, ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি (এনসিপিএসপি) ৮টি ও শিবসেনা (এসএইচএস) ৭টি আসনে জয় পেয়েছে।

আরোপড়ুন:তিন দি‌নের সফ‌রে ঢাকায় কানাডার আন্তর্জাতিক উন্নয়ন উপমন্ত্রী

লোক জনশক্তি পার্টি (রাম বিলাস) জয় পেয়েছে ৫টি আসনে। চারটি করে আসনে জয় পেয়েছে কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া (মার্ক্সিস্ট)- সিপিআই (এম), ওয়াইএসআরসিপি ও রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি)। আম আদমি পার্টি, ঝাড়খন্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম) ও ইন্ডিয়ান ইউনিয়ন মুসলিম লীগ (আইইউএমএল) তিনটি করে আসন পেয়েছে। কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া (সিপিআই), কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া (মার্ক্সিস্ট–লেনিনিস্ট) (লিবারেশন)–সিপিআই (এমএল) (এল), জনতা দল-জেডি (এস), জম্মু অ্যান্ড কাশ্মীর ন্যাশনাল কনফারেন্স (জেকেএন), রাষ্ট্রীয় লোক দল (আরএলডি), জনসেনা পার্টি (জেএনপি) ও ভিসিকে দুটি করে আসনে জয় পেয়েছে। এ ছাড়া বেশ কয়েকটি দল একটি করে আসনে জয় পেয়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লোকসভার সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন সাতজন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুর তথ্যমতে, ঘোষিত ফল অনুযায়ী বিজেপি নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স এনডিএ জোটের মোট আসনসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৮৬টি। অপর দিকে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইন্ডিয়া জোটের মোট আসনসংখ্যা হয়েছে ২০১টি। যে আসনটির ফল এখনো ঘোষণা হয়নি, সেটিতে এগিয়ে আছে শারদ পাওয়ারের এনসিপিএসপি। এই দলটিও ইন্ডিয়া জোটের সঙ্গে রয়েছে। আসনটি তারা পেলে বিরোধী এই জোটের আসন সংখ্যা হবে ২০২টি।

আরোপড়ুন:১২ দেশ নিয়ে ঢাকায় বসছে আন্তর্জাতিক কাবাডির আসর

এর আগে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি এককভাবে ৩০৩ আসনে জয় পেয়েছিল। সেবার বিজেপির নেতৃত্বাধীন জোট এনডিএ ৩৫২ আসনে জয় পায়। এবার বিজেপি সবচেয়ে বেশি আসন পেলেও সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় আসন পায়নি। সে ক্ষেত্রে এনডিএ জোট শরিকদের ওপর নির্ভর করতে হবে বিজেপিকে। গত নির্বাচনে কংগ্রেস এককভাবে পেয়েছিল ৫২টি আসন। আর কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন তৎকালীন ইউপিএ জোট পেয়েছিল ৯৪ আসন। লোকসভার মোট ৫৪৩ আসনের মধ্যে সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজন হয় ২৭২ আসন। সে ক্ষেত্রে বিজেপি তার জোটসঙ্গীদের নিয়ে সরকার গঠন করতে পারবে। তবে জোটসঙ্গীদের মধ্যে বেশি আসন পাওয়া দলগুলো বিরোধী শিবিরে গেলে চিত্র ভিন্ন হতে পারে। বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোটের শরিকদের প্রধান অন্ধ্রপ্রদেশে চন্দ্রবাবু নাইডুর তেলেগু দেশম পার্টি ১৬টি এবং বিহারে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের জনতা দল-ইউনাইটেড (জেডি-ইউ) ১২টি আসনে জয় পেয়েছে। এই দুই দল ছাড়া আরও একাধিক এনডিএ শরিকের ওপর নির্ভর করতে হবে বিজেপিকে। এদের মধ্যে রয়েছে মহারাষ্ট্রের শিবসেনার সিন্ধে গোষ্ঠী, বিহারে লোক জনশক্তি পার্টি এবং উত্তর প্রদেশের রাষ্ট্রীয় লোক দল।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

বোটানিক্যাল গার্ডেনে প্রবেশ ফি ১০০ টাকা অযৌক্তিক : পরিবেশমন্ত্রী

এবার জোটের ওপর ভরসা করতে হচ্ছে মোদিকে

Update Time : 10:50:15 am, Wednesday, 5 June 2024

টানা তৃতীয় বারের মতো ভারতের প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন নরেন্দ্র মোদি। স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর পাশে নিজের নামটিও তিনি লেখাতে চলেছেন। যদিও নেহরুর মতো একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারলেন না তিনি। মঙ্গলবার (৪ জুন) ১৮তম লোকসভা নির্বাচনে মোদির দল ক্ষমতাসীন বিজেপি এককভাবে সর্বোচ্চসংখ্যক আসন পেলেও তাদের এনডিএ ৩০০ আসনও ছুঁতে পারল না। প্রবলভাবে উঠে এলো কংগ্রেসের উদ্যোগে গড়া ‘ইন্ডিয়া’ জোট। টানা এক দশক পর তারা মোদির বিজেপির একদলীয় শাসনের অবসান ঘটাল। সরকার গড়লেও প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মোদিকে এখন থেকে হতে হবে পরমুখাপেক্ষী। তার ঘাড়ে প্রতিনিয়ত শ্বাস ফেলবে বিরোধী জোট ইন্ডিয়া। লোকসভা নির্বাচনের সবকটির চূড়ান্ত ফল ঘোষণা করা হয়েছে। ভারতের নির্বাচন কমিশন ও গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, ৫৪৩টি আসনের মধ্যে ক্ষমতাসীন দল বিজেপি জয় পেয়েছে ২৪০ আসনে। প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস জয় পেয়েছে ৯৯টি আসনে। অন্য দলগুলোর মধ্যে সমাজবাদী পার্টি (এসপি) ৩৭টি, তৃণমূল কংগ্রেস ২৯টি, ডিএমকে ২২টি, তেলেগু দেশম পার্টি (টিডিপি) ১৬টি, জনতা দল (জেডি-ইউ) ১২টি, শিবসেনা (উদ্ভব) ৯টি, ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি (এনসিপিএসপি) ৮টি ও শিবসেনা (এসএইচএস) ৭টি আসনে জয় পেয়েছে।

আরোপড়ুন:তিন দি‌নের সফ‌রে ঢাকায় কানাডার আন্তর্জাতিক উন্নয়ন উপমন্ত্রী

লোক জনশক্তি পার্টি (রাম বিলাস) জয় পেয়েছে ৫টি আসনে। চারটি করে আসনে জয় পেয়েছে কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া (মার্ক্সিস্ট)- সিপিআই (এম), ওয়াইএসআরসিপি ও রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি)। আম আদমি পার্টি, ঝাড়খন্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম) ও ইন্ডিয়ান ইউনিয়ন মুসলিম লীগ (আইইউএমএল) তিনটি করে আসন পেয়েছে। কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া (সিপিআই), কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া (মার্ক্সিস্ট–লেনিনিস্ট) (লিবারেশন)–সিপিআই (এমএল) (এল), জনতা দল-জেডি (এস), জম্মু অ্যান্ড কাশ্মীর ন্যাশনাল কনফারেন্স (জেকেএন), রাষ্ট্রীয় লোক দল (আরএলডি), জনসেনা পার্টি (জেএনপি) ও ভিসিকে দুটি করে আসনে জয় পেয়েছে। এ ছাড়া বেশ কয়েকটি দল একটি করে আসনে জয় পেয়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লোকসভার সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন সাতজন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুর তথ্যমতে, ঘোষিত ফল অনুযায়ী বিজেপি নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স এনডিএ জোটের মোট আসনসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৮৬টি। অপর দিকে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইন্ডিয়া জোটের মোট আসনসংখ্যা হয়েছে ২০১টি। যে আসনটির ফল এখনো ঘোষণা হয়নি, সেটিতে এগিয়ে আছে শারদ পাওয়ারের এনসিপিএসপি। এই দলটিও ইন্ডিয়া জোটের সঙ্গে রয়েছে। আসনটি তারা পেলে বিরোধী এই জোটের আসন সংখ্যা হবে ২০২টি।

আরোপড়ুন:১২ দেশ নিয়ে ঢাকায় বসছে আন্তর্জাতিক কাবাডির আসর

এর আগে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি এককভাবে ৩০৩ আসনে জয় পেয়েছিল। সেবার বিজেপির নেতৃত্বাধীন জোট এনডিএ ৩৫২ আসনে জয় পায়। এবার বিজেপি সবচেয়ে বেশি আসন পেলেও সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় আসন পায়নি। সে ক্ষেত্রে এনডিএ জোট শরিকদের ওপর নির্ভর করতে হবে বিজেপিকে। গত নির্বাচনে কংগ্রেস এককভাবে পেয়েছিল ৫২টি আসন। আর কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন তৎকালীন ইউপিএ জোট পেয়েছিল ৯৪ আসন। লোকসভার মোট ৫৪৩ আসনের মধ্যে সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজন হয় ২৭২ আসন। সে ক্ষেত্রে বিজেপি তার জোটসঙ্গীদের নিয়ে সরকার গঠন করতে পারবে। তবে জোটসঙ্গীদের মধ্যে বেশি আসন পাওয়া দলগুলো বিরোধী শিবিরে গেলে চিত্র ভিন্ন হতে পারে। বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোটের শরিকদের প্রধান অন্ধ্রপ্রদেশে চন্দ্রবাবু নাইডুর তেলেগু দেশম পার্টি ১৬টি এবং বিহারে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের জনতা দল-ইউনাইটেড (জেডি-ইউ) ১২টি আসনে জয় পেয়েছে। এই দুই দল ছাড়া আরও একাধিক এনডিএ শরিকের ওপর নির্ভর করতে হবে বিজেপিকে। এদের মধ্যে রয়েছে মহারাষ্ট্রের শিবসেনার সিন্ধে গোষ্ঠী, বিহারে লোক জনশক্তি পার্টি এবং উত্তর প্রদেশের রাষ্ট্রীয় লোক দল।