Dhaka 11:22 pm, Thursday, 4 July 2024

‘সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী ঘূর্ণিঝড় রেমাল, মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত থাকছে প্রভাব

দেশের উপকূলে আঘাত হানার এক দিন পরও ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাব কাটেনি। মঙ্গলবার (২৮ মে) রাত পর্যন্ত রাজধানীসহ দেশের বেশির ভাগ এলাকায় এই ঝড়ের প্রভাবে দমকা হাওয়া ও প্রবল বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। রোববার রাত আটটার দিকে ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্র মোংলার দক্ষিণ-পশ্চিম দিক দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ উপকূল ও বাংলাদেশের খেপুপাড়া উপকূল অতিক্রম শুরু করে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, বরগুনা, ভোলাসহ উপকূলের বিভিন্ন জেলায় ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যায়। বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১২০ কিলোমিটার। এর প্রভাবে উপকূলের বিভিন্ন এলাকায় জলোচ্ছ্বাসের সৃষ্টি হয়। আজ সোমবার সারা দেশে বৃষ্টি হয়েছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে উপকূলের ১৯ জেলার তছনছ অবস্থা। উপকূলের ছয় জেলায় প্রাণ হারিয়েছেন ১০ জন। তীব্র ঝড়ে বিধ্বস্ত হয়ে গেছে দেড় লাখের বেশি ঘরবাড়ি। দেশের দক্ষিণপূর্বাঞ্চলে ভেঙে পড়েছে বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা। আড়াই কোটিরও বেশি মানুষ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন বিদ্যুৎ সংযোগ থেকে। এসব অঞ্চলে নেই মোবাইল নেটওয়ার্ক, ইন্টারনেট। অতি ভারী বর্ষণ আর তীব্র জলোচ্ছ্বাসের তোড়ে ১৯ জেলার নিম্নাঞ্চলের কয়েক শ গ্রাম প্লাবিত। ক্ষতিগ্রস্ত কয়েক কোটি মানুষ।

আরো পড়ুন:ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ

ঘূর্ণিঝড়টি স্থলভাগ অতিক্রম করে দুর্বল হয়ে স্থল নিম্নচাপে পরিণত হলেও এর প্রভাব কমেনি এতটুকুও। রাজধানী ঢাকাসহ এখন ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ ঝরিয়ে যাচ্ছে রেমালের স্থল নিম্নচাপ। একইসঙ্গে রয়েছে তীব্র ঝড়ো হাওয়া। এরই মধ্যে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। তীব্র ঝড়-বৃষ্টি বয়ে যাচ্ছে দেশজুড়েই। ২০০৮ সাল থেকে শুরু করে গত ১৫ বছরে বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হেনেছে ১৩টি ঘূর্ণিঝড়। এর মধ্যে সাতটিই তৈরি হয়েছে মে মাসে। এ বছরও মে মাসের দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে জানানো হয়েছিল ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কার কথা। সে আশঙ্কাই সত্যি হয়েছে। উপকূলে আঘাত হেনেছে ‘রেমাল’। আবহাওয়া ও জলবায়ুবিশেষজ্ঞরা বলছেন, বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপ থেকে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাব অন্তত ৪৫ ঘণ্টা থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর আগে ২০০৯ সালে ঘূর্ণিঝড় আইলা আঘাত হানার পর ৩৪ ঘণ্টা ধরে দেশের ভূখণ্ডে প্রভাব ফেলেছিল। সমুদ্রবিষয়ক গবেষণা সংস্থা ন্যাশনাল ওশানোগ্রাফিক অ্যান্ড মেরিটাইম ইনস্টিটিউটের (নোয়ামি) নির্বাহী পরিচালক মোহন কুমার দাশ বলেন, স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে যে কটি ঘূর্ণিঝড় আঘাত করেছে, তা উপকূলসহ কয়েকটি এলাকায় প্রভাব রেখেছে। কিন্তু দেশের বেশির ভাগ এলাকায় ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাব দেখা যাচ্ছে। একই সঙ্গে ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাব সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে থাকছে।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

বোটানিক্যাল গার্ডেনে প্রবেশ ফি ১০০ টাকা অযৌক্তিক : পরিবেশমন্ত্রী

‘সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী ঘূর্ণিঝড় রেমাল, মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত থাকছে প্রভাব

Update Time : 10:57:19 am, Tuesday, 28 May 2024

দেশের উপকূলে আঘাত হানার এক দিন পরও ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাব কাটেনি। মঙ্গলবার (২৮ মে) রাত পর্যন্ত রাজধানীসহ দেশের বেশির ভাগ এলাকায় এই ঝড়ের প্রভাবে দমকা হাওয়া ও প্রবল বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। রোববার রাত আটটার দিকে ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্র মোংলার দক্ষিণ-পশ্চিম দিক দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ উপকূল ও বাংলাদেশের খেপুপাড়া উপকূল অতিক্রম শুরু করে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, বরগুনা, ভোলাসহ উপকূলের বিভিন্ন জেলায় ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যায়। বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১২০ কিলোমিটার। এর প্রভাবে উপকূলের বিভিন্ন এলাকায় জলোচ্ছ্বাসের সৃষ্টি হয়। আজ সোমবার সারা দেশে বৃষ্টি হয়েছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে উপকূলের ১৯ জেলার তছনছ অবস্থা। উপকূলের ছয় জেলায় প্রাণ হারিয়েছেন ১০ জন। তীব্র ঝড়ে বিধ্বস্ত হয়ে গেছে দেড় লাখের বেশি ঘরবাড়ি। দেশের দক্ষিণপূর্বাঞ্চলে ভেঙে পড়েছে বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা। আড়াই কোটিরও বেশি মানুষ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন বিদ্যুৎ সংযোগ থেকে। এসব অঞ্চলে নেই মোবাইল নেটওয়ার্ক, ইন্টারনেট। অতি ভারী বর্ষণ আর তীব্র জলোচ্ছ্বাসের তোড়ে ১৯ জেলার নিম্নাঞ্চলের কয়েক শ গ্রাম প্লাবিত। ক্ষতিগ্রস্ত কয়েক কোটি মানুষ।

আরো পড়ুন:ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ

ঘূর্ণিঝড়টি স্থলভাগ অতিক্রম করে দুর্বল হয়ে স্থল নিম্নচাপে পরিণত হলেও এর প্রভাব কমেনি এতটুকুও। রাজধানী ঢাকাসহ এখন ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ ঝরিয়ে যাচ্ছে রেমালের স্থল নিম্নচাপ। একইসঙ্গে রয়েছে তীব্র ঝড়ো হাওয়া। এরই মধ্যে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। তীব্র ঝড়-বৃষ্টি বয়ে যাচ্ছে দেশজুড়েই। ২০০৮ সাল থেকে শুরু করে গত ১৫ বছরে বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হেনেছে ১৩টি ঘূর্ণিঝড়। এর মধ্যে সাতটিই তৈরি হয়েছে মে মাসে। এ বছরও মে মাসের দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে জানানো হয়েছিল ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কার কথা। সে আশঙ্কাই সত্যি হয়েছে। উপকূলে আঘাত হেনেছে ‘রেমাল’। আবহাওয়া ও জলবায়ুবিশেষজ্ঞরা বলছেন, বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপ থেকে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাব অন্তত ৪৫ ঘণ্টা থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর আগে ২০০৯ সালে ঘূর্ণিঝড় আইলা আঘাত হানার পর ৩৪ ঘণ্টা ধরে দেশের ভূখণ্ডে প্রভাব ফেলেছিল। সমুদ্রবিষয়ক গবেষণা সংস্থা ন্যাশনাল ওশানোগ্রাফিক অ্যান্ড মেরিটাইম ইনস্টিটিউটের (নোয়ামি) নির্বাহী পরিচালক মোহন কুমার দাশ বলেন, স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে যে কটি ঘূর্ণিঝড় আঘাত করেছে, তা উপকূলসহ কয়েকটি এলাকায় প্রভাব রেখেছে। কিন্তু দেশের বেশির ভাগ এলাকায় ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাব দেখা যাচ্ছে। একই সঙ্গে ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাব সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে থাকছে।