ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম আজাদের বিরূদ্ধে অনিয়ম, ঘুষ বাণিজ্য, অর্থ আত্মসাৎ ও দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে ইউজিসির সদস্য প্রফেসর ড. হাসিনা খানের নেতৃত্বাধীন ৪ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)। গত ২২ ফেব্রুয়ারি ইউজিসির পাবলিক ম্যানেজমেন্ট বিভাগের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ ইউসুফ আরী খান কর্তৃক স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা গেছে। তদন্ত কমিটির অন্যান্য সদস্যগন হলেনইউজিসির পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক মোঃ ফজলুর রহমান, অর্থ ও হিসাব বিভাগের উপ-পরিচালক মোঃ এমদাদুল হক, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ ইউসুফ আলী খান।
আরো পড়ুন: সোনারগাঁয়ে নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ, থানায় অভিযোগ
ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম আজাদেও বিরূদ্ধে উত্থাপিত বিভিন্ন অপকর্ম, অনিয়ম, চাদঁবাজি, অর্থ আত্মসাৎ ও দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দিবেন এ কমিটি।
গত বছরের ২৫ নভেম্বর জনৈক মোঃ আশ্রাবউদ্দিন তামিম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পক্ষে ইউজিসি ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরে ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম আজাদের বিরূদ্ধে অনিয়ম, ঘুষ বাণিজ্য, অর্থ আত্মসাৎ ও দুর্নীতির তথ্য-প্রমানসহ অভিযোগ করেন। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ২০২২ সালে কোটি টাকার বিনিময়ে সাবেক ভিসিসহ অন্যান্যদের সহযোগিতায় ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি পদে নিয়োগ পান অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম। এরপরই তিনি টাকা পুনরূদ্ধারের জন্য মরিয়া হন। নিয়োগ বাণিজ্য ও মাদ্রাসা পরিদর্শনের নামে ব্যাপক ঘুষ বাণিজ্য করেন তিনি। বরিশাল বাঘিয়া আল আমিন কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ পদে আবু বকরকে চল্লিশ লক্ষ টাকার বিনিময়ে নিয়োগ পাইয়ে দেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। এছাড়া ঠাকুরগাঁও খোশবাজার ছালিহিয়া দারুছুন্নাত কামিল মাদ্রাসার উপাধাক্ষ পদে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে নিয়োগ পাইয়ে দেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। গত দুই বছরে প্রায় শতাধিক পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে তার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নিয়োগ বাণিজ্য করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়া শতাধিক মাদ্রাসার তদন্ত করা এবং অর্ধশত মাদ্রাসার পাঠদানের অনুমতির জন্য পরিদর্শন করা ও দুই শতাধিক মাদ্রাসা অধিভুক্তির লক্ষে তদন্ত করা সহ গত দুই বছরে তার চারশত কর্মদিবসে প্রায় নয়শত মাদ্রাসা পরিদর্শন করেন তিনি।
আরো পড়ুন: এবার ওটিটিতে দেখা যাবে ‘ওরা ৭ জন’
এর মাধ্যমে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে তার বিরূদ্ধে। এমনকি গভীর রাতে মাদ্রাসা পরিদর্শনসহ এসব পরিদর্শনের ক্ষেত্রে নিয়ম বহির্ভূতভাবে টিএ ডিএ বাবদ সরকারি তহবিলের অর্থ তসরুফ করার অভিয়োগ রয়েছে। সরকারি গাড়ী ব্যবহারের ক্ষেত্রে তার বিরূদ্ধে লিমিট অতিরিক্ত জ্বালানী ব্যবহার ও বিধি বহির্ভূতভাবে গাড়ী ব্যবহারসহ নানাবিধ অনিয়মের অভিয়োগ রয়েছে। মাদ্রাসা গভর্নিং বডি কমিটি অনুমোদনের ক্ষেত্রে দুই লক্ষ উৎকোচ নেবার অভিযোগ রয়েছে। আদালতে মামলা চলমান থাকাকালীন গভর্নিং বডি কমিটি অনুমোদন করার অভিযোগ আছে।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আব্দুর রশিদ মুঠোফোনে বলেন- আমার সহকর্মীর বিরূদ্ধে আনীত অভিযোগ তদন্তে ইউজিসি কর্তৃক তদন্ত কমিটি গঠন করার বিষয় আমি জানি। বিষয়টি বিব্রতকর তবে আমরা কেউই আইনের উর্ধ্বে নই। ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোন তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, উ”চ পর্যায়ের সহকর্মীর বিরূদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত করার চেয়ে ইউজিসি কর্তৃক তদন্ত হওয়াই শ্রেয়। অভিযোগের বিষয়ে জানার জন্য অভিযুক্ত প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম আজাদের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তার সঙ্গে যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।
আরো পড়ুন: গাইবান্ধায় জাতীয় পরিসংখ্যান দিবস পালিত