Dhaka 5:39 pm, Tuesday, 10 September 2024
৩০ রানের নিচে ৬ উইকেট হারিয়ে ৭ম উইকেট জুটিতে যা বিশ্বরেকর্ড

পাকিস্তানকে ধবলধোলাই করে ঐতিহাসিক সিরিজ জয় বাংলাদেশের

  • Reporter Name
  • Update Time : 03:50:51 pm, Tuesday, 3 September 2024
  • 13 Time View

টেস্ট সিরিজ শুরুর আগে বাংলাদেশকে নিয়ে তাচ্ছিল্য করেছিলেন বাসিত আলি। নিজের ইউটিউব চ্যানেলে পাকিস্তানের সাবেক ব্যাটার বলেছিলেন,‘শুধু বৃষ্টিই বাঁচাতে পারে বাংলাদেশকে। এছাড়া দুই দলের কোনো তুলনা চলে না। হোম কন্ডিশনের পুরো সুবিধা পাবে পাকিস্তান।

বাংলাদেশকে তাদের মাঠেই টেস্টে হারিয়েছে পাকিস্তান।’

তবে প্রথম টেস্ট শেষে ভিন্ন চিত্র দেখা দিয়েছে। রাওয়ালপিন্ডিতে প্রথম টেস্টে পাকিস্তানকে ১০ উইকেটে হারিয়ে তাদের মাঠে প্রথম জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। আর আজ ৬ উইকেটের জয়ে প্রথমবার তাদের বিপক্ষে দীর্ঘ সংস্করণে সিরিজও জিতেছে।

অথচ, পাকিস্তানের সাবেক ব্যাটার বাসিত বাংলাদেশের জন্য যারে আর্শীবাদ বলে জানিয়েছিলেন সেই বৃষ্টিও তার উত্তরসূরীদের বাঁচাতে পারল না। গতকাল অবশ্য নিজেই সুর পাল্টিয়েছেন বাসিত। তিনি জানান, ধবলধোলাই প্রাপ্য পাকিস্তানের। 

বেরসিক বৃষ্টি রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের পুরো চার সেশন নষ্ট করে দিলেও ধবলধোলাইয়ের মুখ থেকে রক্ষা পায়নি পাকিস্তান।

<দ্বিতীয় দল হিসেবে পাকিস্তানকে তাদের মাঠে ধবলধোলাই করল বাংলাদেশ। এর আগে ২০২২ সালে তিন টেস্টের সিরিজে পাকিস্তানকে প্রথম কোনো দল হিসেবে তাদের মাঠে এমন তিক্ত স্বাদ দিয়েছিল ইংল্যান্ড। দ্বিতীয় টেস্টে পাকিস্তানের দেওয়া ১৮৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে দুর্দান্ত শুরু পায় বাংলাদেশ। গতকাল বৃষ্টিতে শেষ সেশন নষ্ট হওয়ার আগে বিনা উইকেটে ৪২ রানে চতুর্থ দিন শেষ করেছিলেন দুই ওপেনার জাকির হাসান ও সাদমান ইসলাম। আজ অবশ্য গত দিনের সুরটা দীর্ঘ করতে পারেননি তারা। দলীয় খাতায় ১৬ রান যোগ করার পরেই ফিরতে হয় জাকিরকে। ব্যক্তিগত ৪০ রানে মীর হামজার গুড লেন্থের বলে বোল্ড হন বাংলাদেশি ওপেনার। সতীর্থর দেখানো পথে দ্রুত ফেরেন আরেক ওপেনার সাদমান ইসলাম। ব্যক্তিগত ১৭ রানে জীবন পাওয়ার পর সুযোগটা কাজে লাগাতে পারেননি তিনি। ২৪ রান করে খুররম শেহজাদের বলে ড্রেসিংরুমে ফেরেন। ৭০ রানে ২ উইকেট হারিয়ে কিছুটা ধাক্কা খাওয়া বাংলাদেশকে পথ দেখান মমিনুল হক ও নাজমুল হোসেন শান্ত। দুজনে তৃতীয় উইকেটে ৫৭ রানের জুটি গড়ে বাংলাদেশের জয়ের ভিত গড়ে দেন। দ্বিতীয় সেশন শুরু হতেই ব্যক্তিগত ৩৮ রানে ফিরে যান বাংলাদেশের অধিনায়ক শান্ত। দারুণ শুরু করা মমিনুলও ফেরেন ৩৪ রানে। জয়ের বাকি কাজটুকু পরে সারেন মুশফিকুর রহিম ও সাকিব আল হাসান। দলকে ৬ উইকেটের জয় এনে দিয়ে মাঠ ছাড়েন তারা। মুশফিকের ২২ রানের বিপরীতে ২১ রানে অপরাজিত থাকেন সাকিব। ঐতিহাসিক সিরিজ জয়ে দলীয় পারফরম্যান্সে প্রদর্শন করেছে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় টেস্টেই যেমন ২৬ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে প্রথম ইনিংসে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল বাংলাদেশ। সেখানে থেকে দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি করে দলকে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ এনে দেন লিটন দাস। অবশ্য ক্যারিয়ারের চতুর্থ সেঞ্চুরি করা লিটনের অবদান শুধু বললে ভুল হবে। প্রথম ইনিংসে বোলিংয়ে ৫ উইকেট নেওয়া মেহেদী হাসান মিরাজের কথাও বলতে হবে। ৭ম উইকেটে লিটনের সঙ্গে ১৬৫ রানের জুটি না গড়লে দ্বিতীয় টেস্টে জয় পাওয়াটা হয়তো হতো না। ৩০ রানের নিচে ৬ উইকেট হারিয়ে ৭ম উইকেট জুটিতে যা বিশ্বরেকর্ড। বিশ্বরেকর্ড গড়ার পথে ৭৮ রানের ইনিংস খেলেছেন মিরাজ। মিরাজ-লিটনের দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তনের পর বাংলাদেশের জয়ের কাজটা সহজ করে দেন পেসাররা। পাকিস্তানকে ১৭২ রানে দ্বিতীয় ইনিংসে অলআউট করে। প্রথমবারের মতো টেস্ট ইনিংসে ১০ উইকেটের সবকটি নিয়েছেন বাংলাদেশের পেসাররা। প্রতিপক্ষকে অল্প রানে অলআউট করার পথে হাসান মাহমুদ বাংলাদেশের প্রথম পেসার হিসেবে পাকিস্তানের মাঠে ৫ উইকেট নেওয়ার রেকর্ড গড়েছেন। বাকি ৫ উইকেটের ৪ টি নাহিদ রানা এবং অন্যটি তাসকিন আহমেদ পেয়েছেন। এর আগে রাওয়ালপিন্ডিতেই প্রথম টেস্টে জোড়া সেঞ্চুরি করেন সাদমান ও মুশফিকুর রহিম।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

বিনামূল্যে ব্রেকিং নিউজ পেতে ok ক্লিক করুন OK .

৩০ রানের নিচে ৬ উইকেট হারিয়ে ৭ম উইকেট জুটিতে যা বিশ্বরেকর্ড

পাকিস্তানকে ধবলধোলাই করে ঐতিহাসিক সিরিজ জয় বাংলাদেশের

Update Time : 03:50:51 pm, Tuesday, 3 September 2024

টেস্ট সিরিজ শুরুর আগে বাংলাদেশকে নিয়ে তাচ্ছিল্য করেছিলেন বাসিত আলি। নিজের ইউটিউব চ্যানেলে পাকিস্তানের সাবেক ব্যাটার বলেছিলেন,‘শুধু বৃষ্টিই বাঁচাতে পারে বাংলাদেশকে। এছাড়া দুই দলের কোনো তুলনা চলে না। হোম কন্ডিশনের পুরো সুবিধা পাবে পাকিস্তান।

বাংলাদেশকে তাদের মাঠেই টেস্টে হারিয়েছে পাকিস্তান।’

তবে প্রথম টেস্ট শেষে ভিন্ন চিত্র দেখা দিয়েছে। রাওয়ালপিন্ডিতে প্রথম টেস্টে পাকিস্তানকে ১০ উইকেটে হারিয়ে তাদের মাঠে প্রথম জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। আর আজ ৬ উইকেটের জয়ে প্রথমবার তাদের বিপক্ষে দীর্ঘ সংস্করণে সিরিজও জিতেছে।

অথচ, পাকিস্তানের সাবেক ব্যাটার বাসিত বাংলাদেশের জন্য যারে আর্শীবাদ বলে জানিয়েছিলেন সেই বৃষ্টিও তার উত্তরসূরীদের বাঁচাতে পারল না। গতকাল অবশ্য নিজেই সুর পাল্টিয়েছেন বাসিত। তিনি জানান, ধবলধোলাই প্রাপ্য পাকিস্তানের। 

বেরসিক বৃষ্টি রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের পুরো চার সেশন নষ্ট করে দিলেও ধবলধোলাইয়ের মুখ থেকে রক্ষা পায়নি পাকিস্তান।

<দ্বিতীয় দল হিসেবে পাকিস্তানকে তাদের মাঠে ধবলধোলাই করল বাংলাদেশ। এর আগে ২০২২ সালে তিন টেস্টের সিরিজে পাকিস্তানকে প্রথম কোনো দল হিসেবে তাদের মাঠে এমন তিক্ত স্বাদ দিয়েছিল ইংল্যান্ড। দ্বিতীয় টেস্টে পাকিস্তানের দেওয়া ১৮৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে দুর্দান্ত শুরু পায় বাংলাদেশ। গতকাল বৃষ্টিতে শেষ সেশন নষ্ট হওয়ার আগে বিনা উইকেটে ৪২ রানে চতুর্থ দিন শেষ করেছিলেন দুই ওপেনার জাকির হাসান ও সাদমান ইসলাম। আজ অবশ্য গত দিনের সুরটা দীর্ঘ করতে পারেননি তারা। দলীয় খাতায় ১৬ রান যোগ করার পরেই ফিরতে হয় জাকিরকে। ব্যক্তিগত ৪০ রানে মীর হামজার গুড লেন্থের বলে বোল্ড হন বাংলাদেশি ওপেনার। সতীর্থর দেখানো পথে দ্রুত ফেরেন আরেক ওপেনার সাদমান ইসলাম। ব্যক্তিগত ১৭ রানে জীবন পাওয়ার পর সুযোগটা কাজে লাগাতে পারেননি তিনি। ২৪ রান করে খুররম শেহজাদের বলে ড্রেসিংরুমে ফেরেন। ৭০ রানে ২ উইকেট হারিয়ে কিছুটা ধাক্কা খাওয়া বাংলাদেশকে পথ দেখান মমিনুল হক ও নাজমুল হোসেন শান্ত। দুজনে তৃতীয় উইকেটে ৫৭ রানের জুটি গড়ে বাংলাদেশের জয়ের ভিত গড়ে দেন। দ্বিতীয় সেশন শুরু হতেই ব্যক্তিগত ৩৮ রানে ফিরে যান বাংলাদেশের অধিনায়ক শান্ত। দারুণ শুরু করা মমিনুলও ফেরেন ৩৪ রানে। জয়ের বাকি কাজটুকু পরে সারেন মুশফিকুর রহিম ও সাকিব আল হাসান। দলকে ৬ উইকেটের জয় এনে দিয়ে মাঠ ছাড়েন তারা। মুশফিকের ২২ রানের বিপরীতে ২১ রানে অপরাজিত থাকেন সাকিব। ঐতিহাসিক সিরিজ জয়ে দলীয় পারফরম্যান্সে প্রদর্শন করেছে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় টেস্টেই যেমন ২৬ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে প্রথম ইনিংসে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল বাংলাদেশ। সেখানে থেকে দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি করে দলকে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ এনে দেন লিটন দাস। অবশ্য ক্যারিয়ারের চতুর্থ সেঞ্চুরি করা লিটনের অবদান শুধু বললে ভুল হবে। প্রথম ইনিংসে বোলিংয়ে ৫ উইকেট নেওয়া মেহেদী হাসান মিরাজের কথাও বলতে হবে। ৭ম উইকেটে লিটনের সঙ্গে ১৬৫ রানের জুটি না গড়লে দ্বিতীয় টেস্টে জয় পাওয়াটা হয়তো হতো না। ৩০ রানের নিচে ৬ উইকেট হারিয়ে ৭ম উইকেট জুটিতে যা বিশ্বরেকর্ড। বিশ্বরেকর্ড গড়ার পথে ৭৮ রানের ইনিংস খেলেছেন মিরাজ। মিরাজ-লিটনের দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তনের পর বাংলাদেশের জয়ের কাজটা সহজ করে দেন পেসাররা। পাকিস্তানকে ১৭২ রানে দ্বিতীয় ইনিংসে অলআউট করে। প্রথমবারের মতো টেস্ট ইনিংসে ১০ উইকেটের সবকটি নিয়েছেন বাংলাদেশের পেসাররা। প্রতিপক্ষকে অল্প রানে অলআউট করার পথে হাসান মাহমুদ বাংলাদেশের প্রথম পেসার হিসেবে পাকিস্তানের মাঠে ৫ উইকেট নেওয়ার রেকর্ড গড়েছেন। বাকি ৫ উইকেটের ৪ টি নাহিদ রানা এবং অন্যটি তাসকিন আহমেদ পেয়েছেন। এর আগে রাওয়ালপিন্ডিতেই প্রথম টেস্টে জোড়া সেঞ্চুরি করেন সাদমান ও মুশফিকুর রহিম।