জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের এমপি বলেছেন, রাজনৈতিক দল হিসেবে পূর্বের বৈচিত্র্য হারিয়েছে আওয়ামী লীগ। তারা এখন পরগাছায় পরিণত হয়েছে, সেই কারণে তারা কাউকে পাত্তা দেয় না, কাউকে হিসাবেও রাখছে না। ফলে দেশ ও জনগণ মহাসংকটে বিরাজ করছে। আগে জনগণকে ধারণ করত আওয়ামী লীগ, এখন তারা জনগণের ঘাড়ে চেপে বসেছে।
রোববার (১৯ মে) দুপুরে রংপুর সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন তিনি। জিএম কাদের বলেন, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভয়াবহ। সামনের সংকট আরও প্রকট আকার ধারণ করতে পারে, সেজন্যই সাংবাদিকদের বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এটা সরকারের একটা গণবিরোধী সিদ্ধান্ত এবং এ সিদ্ধান্ত অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি। তিনি বলেন, সামনে ভয়াবহ বিপজ্জনক অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। দেশের রিজার্ভ এখন ১০ থেকে বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে। যা এযাবৎ কালের সর্বনিম্ন। এখন বলা হয় ৩ মাসের আমদানি করার মতো অর্থ থাকলেই নাকি যথেষ্ট। এখন ৭-৮ মিলিয়নের জায়গায় ৪-৫ মিলিয়নে নেমে এসেছে। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, এসব আমাদের জন্য অশুভ সংকেত। দেশে টাকা নেই প্রতিদিন রিজার্ভ কমে যাচ্ছে। দেশে বিনিয়োগ আসছে না, যে অর্থ আসে তা বিদেশে চলে যাচ্ছে। ফলে ডলারের এবং দেশীয় টাকার চরম অবমূল্যায়ন হচ্ছে। টাকার ভ্যালু কমে যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ আইন করলেও রাইট টু ইনফরমেশন বলতে এখন কোনো কিছু নেই। কোনো তথ্য দেওয়া হচ্ছে না। সব গোপন রাখা হচ্ছে। যে তথ্যই চাওয়া হয়, সেটাই রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি স্বরূপ। সংবিধানের ১৪৫ (ক) ধারায় বলা হয়েছে, আমরা বিদেশের সঙ্গে যে চুক্তিই করি না কেন। সেটা প্রেসিডেন্টের মাধ্যমে সংসদে উপস্থাপন করতে হবে। কিন্তু এ পর্যন্ত যত বিদেশি চুক্তি হয়েছে হাজার হাজার চুক্তি হয়েছে। কোনো চুক্তিই আমাদের সংসদে প্লেস করা হচ্ছে না। সংবিধান মানা হচ্ছে না।
আরো পড়ুন:ডোনাল্ড লু’র বক্তব্যের পর ফখরুলের বক্তব্যের কোনো মূল্য নেই: কাদের
কাদের বলেন, ওনারা (আওয়ামী লীগ) অনেক খাতে লুটপাট করেছেন। বিদ্যুৎ খাতে লুটপাট হয়েছে, জ্বালানি খাতে লুটপাট হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক এবং সরকারের রেগুলেটরি বডিগুলো আছে, অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংকিং শাখা এরা যেসব নিয়ম করছেন তা করা হয়েছে এসব দুর্নীতিকে সহায়তা করার জন্য। এর আগে জিএম কাদের ঢাকা থেকে বিমানযোগে সৈয়দপুর বিমানবন্দর আসেন। পরে রংপুর সার্কিট হাউসে এসে পৌঁছলে জেলা প্রশাসক মোবাশ্বের হাসান, পুলিশ সুপার ফেরদৌস আলম চৌধুরী, জাতীয় পার্টির মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক এসএম ইয়াসির, জেলা কমিটির আহবায়ক আলাউদ্দিন মিয়া, সদস্য সচিব আব্দুর রাজ্জাকসহ প্রশাসন ও দলের নেতাকর্মীরা তাকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান। এ সময় কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক সম্পাদক আজমল হোসেন লেবু, যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক শাফিউল ইসলাম শাফী, নির্বাহী সদস্য লোকমান হোসেন, হাসানুজ্জামান নাজিমসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।