Dhaka 5:52 pm, Monday, 24 June 2024

নিউজিল্যান্ডকে বিদায়ের দ্বারপ্রান্তে রেখে সুপার এইটে ওয়েস্ট ইন্ডিজ

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ২৬তম ম্যাচে নিউজিল্যান্ডকে ১৩ রানে হারিয়ে সুপার এইট নিশ্চিত করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। টসে হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই কিউই বোলিং তোপে মাত্র ৩০ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বসে স্বাগতিকরা। তবে শেষের দিকে শেরফান রাদারফোর্ডের দুর্দান্ত এক হাফ সেঞ্চুরিতে ১৪৯ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর দাঁড় করায় দলটি। লক্ষ্য তাড়ায় নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে কিউইরা। আলজারি জোসেফ ও গুদাকেশ মোতির বোলিং তোপে শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৩৬ রান তুলতে পারে কেন উইলিয়ামসনের দল। বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) ত্রিনিদাদের ব্রায়ান লারা স্টেডিয়ামে টস জিতে উইন্ডিজকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান কিউই অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই নিউজিল্যান্ডের বোলারদের চাপের মুখে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দুই ওপেনার ব্রেন্ডন কিং ও জনসন চার্লস দুই অঙ্ক ছোঁয়ার আগেই বিদায় নেন। শুরুতে কোনো রান না করেই বোল্টের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন চার্লস। এরপর ক্রিজে আসেন নিকোলাস পুরান। তবে ১২ বলে ৩ চারে ১৭ রানের বেশি করতে পারেননি তিনি। পঞ্চম ওভারে শূন্য রানে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন রোস্টন চেজ। রভম্যান পাওয়েলকে নিয়ে দলকে উদ্ধারের চেষ্টা চালান ব্রেন্ডন কিং। কিন্তু তিনি আক্রমণাত্মক হয়ে উঠতে পারছিলেন না। এর মধ্যেই ৫ বলে ১ রান করে টিম সাউদির বলে আত্মহুতি দেন দলনেতা পাওয়েল।

আরো পড়ুন:বাংলাদেশ পুলিশ ভলিবল চ্যাম্পিয়নশিপে নারী ও পুরুষ উভয় খেলায় চ্যাম্পিয়ন ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান 

একপ্রান্তে আগলে চড়াও হতে চেষ্টা করছিলেন কিং। কিন্তু নিউজিল্যান্ডের বোলিংয়ের কোনো জবাব জানা ছিল না তার কাছে। ১ ছক্কায় ১২ বলে ৯ রান করে তিনি বিদায় নিতেই চাপে পড়ে ক্যারিবীয়রা। এরপর আকেল হোসেনের সঙ্গে জুটি বাঁধেন রাদারফোর্ড। দু’জন মিলে ধাক্কা সামলে দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন। ৪৯ রানেই ৫ উইকেট হারিইয়ে বসা ক্যারিবীয়রা যখন একশ’র আগেই গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায়, তখন দলকে আরও বিপদের দিকে ঠেলে দিয়ে ১৭ বলে ১৫ রান করে বিদায় নেন আকেল। আন্দ্রে রাসেল এসে ৭ বলে ১৪ রানের ক্যামিও খেলে ফিরে যান। রোমারিও শেফার্ড ১৩ রানে সাজঘরের পথ ধরেন। আলজেরি জোসেফকে নিয়ে রাদারফোর্ড দলকে একশ রানের ঘর পার করেন। কিন্তু রাদারফোর্ডকে সঙ্গ দিতে পারলেন না তিনিও। সমান ৬ বলে ৬ রান করে বোল্টের বলে বোল্ড হয়ে ফিরে যান জোসেফ। বাকি পথটা কেবল রাদারফোর্ডের গল্প। ১৯তম ওভারে ড্যারিল মিচেলের ওপর মারাত্মক চড়াও হন রাদারফোর্ড। এক ওভারেই তিন ছক্কায় তুলে নেন ১৯ রান। সেই সঙ্গে তুলে নেন দলের মান বাঁচানো ফিফটি। তাকে কেবল সঙ্গটা দিয়ে গেছেন গুদাকেশ মোতি। শেষ ওভারেও মিচেল স্যান্টেনারকে তুলোধুনো করে ১৮ রান তুলে দলকে লড়াকু পুঁজি এনে দেন রাদারফোর্ড। কিউই বোলারদের মধ্যে ১৬ রান খরচায় ৩ উইকেট শিকার করেন ট্রেন্ট বোল্ট। দু’টি করে উইকেট নেন টিম সাউদি ও লকি ফার্গুসন।

আরো পড়ুন:আইসিসির স্বীকৃতি পেল মেজর লিগ ক্রিকেট

রান তাড়ায় নেমে পাওয়ার প্লে’তেই দুই ওপেনার ডেভন কনওয়ে এবং ফিন অ্যালেনকে হারিয়ে বসে নিউজিল্যান্ড। আকিল হোসেন ও আলজারি জোসেফ নেন উইকেট দু’টি। এরপর কেন উইলিয়ামসন ও রাচীন রবীন্দ্র হাল ধরার চেষ্টা করলেও দলীয় ৫৪ রানের মাঝে ফেরান তারাও। দু’জনের উইকেটই তুলে নেন গুডাকেশ মোতি। এরপর ড্যারেল মিচেলকেও ফিরিয়ে দেন এই স্পিনার। ৬৩ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে যেতে বসেছিল কিউইরা। কিন্তু সেখান থেকে হাল ধরেন জেমস নিশাম ও গ্লেন ফিলিপ্স।এই জুটির দৃঢ়তায় নিউজিল্যান্ড দেখেশুনে এগালেও জোসেফের জোড়া আঘাতে ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় নিউজিল্যান্ড। ফিলিপ্স বিদায় নেন ৪০ রানে। শেষের দিকে মিচেল স্যান্টনার চেষ্টা করে শুধু পরাজয়ের ব্যবধান কমিয়েছেন। ২০ ওভার শেষে কিউইরা ৯ উইকেট হারিয়ে ১৩৬ রান তুলতে সক্ষম হয়। জোসেফ ১৯ রানে ৪টি ও মোতি ২৫ রানে নেন ৩টি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে ৪ ওভারে ১৯ রান দিয়ে ৪ উইকেট শিকার করেন জোসেপ। ৩টি শিকার ধরেন গুদাকেশ মোতি। এ হারে শঙ্কায় পড়ে গিয়েছে নিউজিল্যান্ডের সুপার এইটে খেলা। দুই ম্যাচ শেষে কোনো পয়েন্ট নেই তাদের। অন্যদিকে ২ ম্যাচে চার পয়েন্ট নিয়ে সুপার এইটের খুব কাছে আফগানিস্তান। আর একটি জয় পেলেই সুপার এইট নিশ্চিত হয়ে যাবে আফগানিস্তানের। আর সেটি হলে বিদায় নিশ্চিত হয়ে যাবে কিউইদের।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপডেট সংবাদ

নিউজিল্যান্ডকে বিদায়ের দ্বারপ্রান্তে রেখে সুপার এইটে ওয়েস্ট ইন্ডিজ

Update Time : 11:15:26 am, Thursday, 13 June 2024

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ২৬তম ম্যাচে নিউজিল্যান্ডকে ১৩ রানে হারিয়ে সুপার এইট নিশ্চিত করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। টসে হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই কিউই বোলিং তোপে মাত্র ৩০ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বসে স্বাগতিকরা। তবে শেষের দিকে শেরফান রাদারফোর্ডের দুর্দান্ত এক হাফ সেঞ্চুরিতে ১৪৯ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর দাঁড় করায় দলটি। লক্ষ্য তাড়ায় নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে কিউইরা। আলজারি জোসেফ ও গুদাকেশ মোতির বোলিং তোপে শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৩৬ রান তুলতে পারে কেন উইলিয়ামসনের দল। বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) ত্রিনিদাদের ব্রায়ান লারা স্টেডিয়ামে টস জিতে উইন্ডিজকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান কিউই অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই নিউজিল্যান্ডের বোলারদের চাপের মুখে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দুই ওপেনার ব্রেন্ডন কিং ও জনসন চার্লস দুই অঙ্ক ছোঁয়ার আগেই বিদায় নেন। শুরুতে কোনো রান না করেই বোল্টের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন চার্লস। এরপর ক্রিজে আসেন নিকোলাস পুরান। তবে ১২ বলে ৩ চারে ১৭ রানের বেশি করতে পারেননি তিনি। পঞ্চম ওভারে শূন্য রানে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন রোস্টন চেজ। রভম্যান পাওয়েলকে নিয়ে দলকে উদ্ধারের চেষ্টা চালান ব্রেন্ডন কিং। কিন্তু তিনি আক্রমণাত্মক হয়ে উঠতে পারছিলেন না। এর মধ্যেই ৫ বলে ১ রান করে টিম সাউদির বলে আত্মহুতি দেন দলনেতা পাওয়েল।

আরো পড়ুন:বাংলাদেশ পুলিশ ভলিবল চ্যাম্পিয়নশিপে নারী ও পুরুষ উভয় খেলায় চ্যাম্পিয়ন ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান 

একপ্রান্তে আগলে চড়াও হতে চেষ্টা করছিলেন কিং। কিন্তু নিউজিল্যান্ডের বোলিংয়ের কোনো জবাব জানা ছিল না তার কাছে। ১ ছক্কায় ১২ বলে ৯ রান করে তিনি বিদায় নিতেই চাপে পড়ে ক্যারিবীয়রা। এরপর আকেল হোসেনের সঙ্গে জুটি বাঁধেন রাদারফোর্ড। দু’জন মিলে ধাক্কা সামলে দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন। ৪৯ রানেই ৫ উইকেট হারিইয়ে বসা ক্যারিবীয়রা যখন একশ’র আগেই গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায়, তখন দলকে আরও বিপদের দিকে ঠেলে দিয়ে ১৭ বলে ১৫ রান করে বিদায় নেন আকেল। আন্দ্রে রাসেল এসে ৭ বলে ১৪ রানের ক্যামিও খেলে ফিরে যান। রোমারিও শেফার্ড ১৩ রানে সাজঘরের পথ ধরেন। আলজেরি জোসেফকে নিয়ে রাদারফোর্ড দলকে একশ রানের ঘর পার করেন। কিন্তু রাদারফোর্ডকে সঙ্গ দিতে পারলেন না তিনিও। সমান ৬ বলে ৬ রান করে বোল্টের বলে বোল্ড হয়ে ফিরে যান জোসেফ। বাকি পথটা কেবল রাদারফোর্ডের গল্প। ১৯তম ওভারে ড্যারিল মিচেলের ওপর মারাত্মক চড়াও হন রাদারফোর্ড। এক ওভারেই তিন ছক্কায় তুলে নেন ১৯ রান। সেই সঙ্গে তুলে নেন দলের মান বাঁচানো ফিফটি। তাকে কেবল সঙ্গটা দিয়ে গেছেন গুদাকেশ মোতি। শেষ ওভারেও মিচেল স্যান্টেনারকে তুলোধুনো করে ১৮ রান তুলে দলকে লড়াকু পুঁজি এনে দেন রাদারফোর্ড। কিউই বোলারদের মধ্যে ১৬ রান খরচায় ৩ উইকেট শিকার করেন ট্রেন্ট বোল্ট। দু’টি করে উইকেট নেন টিম সাউদি ও লকি ফার্গুসন।

আরো পড়ুন:আইসিসির স্বীকৃতি পেল মেজর লিগ ক্রিকেট

রান তাড়ায় নেমে পাওয়ার প্লে’তেই দুই ওপেনার ডেভন কনওয়ে এবং ফিন অ্যালেনকে হারিয়ে বসে নিউজিল্যান্ড। আকিল হোসেন ও আলজারি জোসেফ নেন উইকেট দু’টি। এরপর কেন উইলিয়ামসন ও রাচীন রবীন্দ্র হাল ধরার চেষ্টা করলেও দলীয় ৫৪ রানের মাঝে ফেরান তারাও। দু’জনের উইকেটই তুলে নেন গুডাকেশ মোতি। এরপর ড্যারেল মিচেলকেও ফিরিয়ে দেন এই স্পিনার। ৬৩ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে যেতে বসেছিল কিউইরা। কিন্তু সেখান থেকে হাল ধরেন জেমস নিশাম ও গ্লেন ফিলিপ্স।এই জুটির দৃঢ়তায় নিউজিল্যান্ড দেখেশুনে এগালেও জোসেফের জোড়া আঘাতে ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় নিউজিল্যান্ড। ফিলিপ্স বিদায় নেন ৪০ রানে। শেষের দিকে মিচেল স্যান্টনার চেষ্টা করে শুধু পরাজয়ের ব্যবধান কমিয়েছেন। ২০ ওভার শেষে কিউইরা ৯ উইকেট হারিয়ে ১৩৬ রান তুলতে সক্ষম হয়। জোসেফ ১৯ রানে ৪টি ও মোতি ২৫ রানে নেন ৩টি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে ৪ ওভারে ১৯ রান দিয়ে ৪ উইকেট শিকার করেন জোসেপ। ৩টি শিকার ধরেন গুদাকেশ মোতি। এ হারে শঙ্কায় পড়ে গিয়েছে নিউজিল্যান্ডের সুপার এইটে খেলা। দুই ম্যাচ শেষে কোনো পয়েন্ট নেই তাদের। অন্যদিকে ২ ম্যাচে চার পয়েন্ট নিয়ে সুপার এইটের খুব কাছে আফগানিস্তান। আর একটি জয় পেলেই সুপার এইট নিশ্চিত হয়ে যাবে আফগানিস্তানের। আর সেটি হলে বিদায় নিশ্চিত হয়ে যাবে কিউইদের।