Dhaka 11:06 pm, Thursday, 4 July 2024

লাল মাংস খেতে বাধা নেই তবে পরিমিত

সাধারণত, গরু, খাসি, মহিষ, ভেড়ার মাংসকে লাল মাংস বা রেড মিট বলা হয়ে থাকে। রেড মিট বা লাল মাংসের মধ্যে মায়োগ্লোবিন নামক উপাদান বেশি থাকার কারণে মাংস লাল হয়। আর মানুষের শরীরে প্রোটিনের চাহিদা মাংস থেকেই পূরণ হয়। এছাড়া আয়রন ও খনিজে ভরপুর লাল মাংস অর্থাৎ গরু বা খাসির মাংস  শরীরের বেড়ে ওঠায় ও কর্মক্ষম থাকতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই মাংসে উচ্চ মাত্রার চর্বি ও কোলেস্টেরল থাকায় খাওয়ার ক্ষেত্রে কিছুটা সাবধান থাকা ভালো। বিশেষ করে রোগীদের ক্ষেত্রে খুব সতর্কতার সঙ্গে  হয়ে রেড মিট বা  লাল মাংস খাওয়া প্রয়োজন। রেড মিট খাওয়ার ক্ষেত্রে মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দ্বীপন চৌধুরীর মতে, যদি স্বাস্থ্যকর ডায়েট মেনে সপ্তাহে একদিন বা দুদিন লাল মাংস খাওয়া হয় তাহলে তেমন ঝুঁকির ভয় নেই। 

কিন্তু যদি দিনে ৯০ গ্রামের বেশি লাল মাংস খাওয়া হয় তাহলে অবশ্যই স্বাস্থ্য-ঝুঁকি রয়েছে। এমনকি কোলন ক্যান্সারও হতে পারে। তাই যদি রোজই লাল মাংস খেতে হয়, সেক্ষেত্রে কোনোভাবেই যেন ৫০ গ্রামের বেশি খাওয়া না হয়, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। এছাড়া তিনি রেড মিট বা লাল মাংস খাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু সতর্কতামূলক পরামর্শ দিয়েছেন। সেগুলো জেনে নেওয়া যাক:   যাদের পাকস্থলীতে আলসার রয়েছে তারা লাল মাংস খেলে তাদের রোগ বাড়িয়ে দেয়। তাদের উচিত হবে প্রোটিনের বিকল্প উৎসের দিকেই অধিক মনোযোগী হওয়া। কিডনি ফেইলিউরের রোগীরা প্রতিদিন ৩০ গ্রাম প্রোটিন খেতে পারবেন। আর যারা ডায়ালাইসিস করেন তারা পারবেন ৭০ গ্রাম মাংস খেতে।  সাধারণত কিডনি রোগীরা লাল মাংস খাবেন কি না, সে ক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নেবেন। বাতের রোগীরা লাল মাংস খাবেন না। কারণ লাল মাংস রক্তে ইউরিক এসিডের মাত্রা বাড়িয়ে দেবে।

আরো পড়ুন:বাংলাদেশকে ৪৯৫ টাকায় গরুর মাংস দিতে চায় ব্রাজিল

যারা হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন বা স্ট্রোকের ঝুঁকিতে আছেন তাদের লাল মাংস এড়িয়ে যাওয়া ভালো। তারা প্রোটিনের জন্য মাছ-মুরগির মাংস খেতে পারেন। আর লিভারের রোগীরা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী লাল মাংস খাবেন। লাল মাংস খাওয়ার সঙ্গে শাকসবজি ও সালাদ বেশি পরিমাণে খেতে হবে। পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের ডাল, শস্য ও মাশরুম খাওয়া ভালো। রোজ মাংস খাওয়া কমাতে সবজি রান্না প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন আনা যেতে পারে। সবজি রান্নায় পনিরের ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে স্বাদ বৃদ্ধির পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর ফ্যাটও যোগ করা হবে খাদ্যতালিকায়। দেখা যায় বিভিন্ন স্ন্যাকসে লাল মাংসের উপস্থিতি হরহামেশাই থাকে, সেক্ষেত্রে এসব খাবারে অর্থাৎ বার্গার, স্যান্ডউইচ বা সমুচায় লাল মাংসের পরিবর্তে টুনামাছ ও মুরগির মাংস ব্যবহার করা যেতে পারে।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

বোটানিক্যাল গার্ডেনে প্রবেশ ফি ১০০ টাকা অযৌক্তিক : পরিবেশমন্ত্রী

লাল মাংস খেতে বাধা নেই তবে পরিমিত

Update Time : 10:29:38 am, Thursday, 13 June 2024

সাধারণত, গরু, খাসি, মহিষ, ভেড়ার মাংসকে লাল মাংস বা রেড মিট বলা হয়ে থাকে। রেড মিট বা লাল মাংসের মধ্যে মায়োগ্লোবিন নামক উপাদান বেশি থাকার কারণে মাংস লাল হয়। আর মানুষের শরীরে প্রোটিনের চাহিদা মাংস থেকেই পূরণ হয়। এছাড়া আয়রন ও খনিজে ভরপুর লাল মাংস অর্থাৎ গরু বা খাসির মাংস  শরীরের বেড়ে ওঠায় ও কর্মক্ষম থাকতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই মাংসে উচ্চ মাত্রার চর্বি ও কোলেস্টেরল থাকায় খাওয়ার ক্ষেত্রে কিছুটা সাবধান থাকা ভালো। বিশেষ করে রোগীদের ক্ষেত্রে খুব সতর্কতার সঙ্গে  হয়ে রেড মিট বা  লাল মাংস খাওয়া প্রয়োজন। রেড মিট খাওয়ার ক্ষেত্রে মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দ্বীপন চৌধুরীর মতে, যদি স্বাস্থ্যকর ডায়েট মেনে সপ্তাহে একদিন বা দুদিন লাল মাংস খাওয়া হয় তাহলে তেমন ঝুঁকির ভয় নেই। 

কিন্তু যদি দিনে ৯০ গ্রামের বেশি লাল মাংস খাওয়া হয় তাহলে অবশ্যই স্বাস্থ্য-ঝুঁকি রয়েছে। এমনকি কোলন ক্যান্সারও হতে পারে। তাই যদি রোজই লাল মাংস খেতে হয়, সেক্ষেত্রে কোনোভাবেই যেন ৫০ গ্রামের বেশি খাওয়া না হয়, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। এছাড়া তিনি রেড মিট বা লাল মাংস খাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু সতর্কতামূলক পরামর্শ দিয়েছেন। সেগুলো জেনে নেওয়া যাক:   যাদের পাকস্থলীতে আলসার রয়েছে তারা লাল মাংস খেলে তাদের রোগ বাড়িয়ে দেয়। তাদের উচিত হবে প্রোটিনের বিকল্প উৎসের দিকেই অধিক মনোযোগী হওয়া। কিডনি ফেইলিউরের রোগীরা প্রতিদিন ৩০ গ্রাম প্রোটিন খেতে পারবেন। আর যারা ডায়ালাইসিস করেন তারা পারবেন ৭০ গ্রাম মাংস খেতে।  সাধারণত কিডনি রোগীরা লাল মাংস খাবেন কি না, সে ক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নেবেন। বাতের রোগীরা লাল মাংস খাবেন না। কারণ লাল মাংস রক্তে ইউরিক এসিডের মাত্রা বাড়িয়ে দেবে।

আরো পড়ুন:বাংলাদেশকে ৪৯৫ টাকায় গরুর মাংস দিতে চায় ব্রাজিল

যারা হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন বা স্ট্রোকের ঝুঁকিতে আছেন তাদের লাল মাংস এড়িয়ে যাওয়া ভালো। তারা প্রোটিনের জন্য মাছ-মুরগির মাংস খেতে পারেন। আর লিভারের রোগীরা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী লাল মাংস খাবেন। লাল মাংস খাওয়ার সঙ্গে শাকসবজি ও সালাদ বেশি পরিমাণে খেতে হবে। পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের ডাল, শস্য ও মাশরুম খাওয়া ভালো। রোজ মাংস খাওয়া কমাতে সবজি রান্না প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন আনা যেতে পারে। সবজি রান্নায় পনিরের ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে স্বাদ বৃদ্ধির পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর ফ্যাটও যোগ করা হবে খাদ্যতালিকায়। দেখা যায় বিভিন্ন স্ন্যাকসে লাল মাংসের উপস্থিতি হরহামেশাই থাকে, সেক্ষেত্রে এসব খাবারে অর্থাৎ বার্গার, স্যান্ডউইচ বা সমুচায় লাল মাংসের পরিবর্তে টুনামাছ ও মুরগির মাংস ব্যবহার করা যেতে পারে।