প্রিন্ট এর তারিখঃ জুলাই ৭, ২০২৪, ৬:৫১ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ জুন ২৯, ২০২৪, ৪:৪৮ পি.এম
সাইবার অপরাধের শীর্ষে হ্যাকিং, ভুক্তভোগীদের ৫৯ শতাংশই নারী
ব্যক্তিগত ক্ষতির পাশাপাশি আর্থিক ক্ষতি ও প্রলোভনে প্রকট সাইবার অপরাধ। এক বছরের ব্যবধানে দেশে সাইবার অপরাধ বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি। দেশে মোট অপরাধের ১১.৮৫ শতাংশ এখন সাইবার অপরাধ। সাইবার অপরাধে আক্রান্তদের মধ্যে ৫৯ শতাংশই নারী। মোট সাইবার অপরাধের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ২১.৬৫ শতাংশই হ্যাকিং সংক্রান্ত। ভুক্তভোগীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও অনলাইনে অ্যাকাউন্ট হ্যাকিংয়ের কারণে নানাভাবে হয়রানির শিকার হয়েছেন।
আরো পড়ুন:নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে দৃষ্টান্ত স্বরূপ
শনিবার (২৯ জুন) রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ‘বাংলাদেশে সাইবার অপরাধপ্রবণতা-২০২৪’ এবং ‘স্মার্ট বাংলাদেশ: উদীয়মান প্রযুক্তির চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরে সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশনের উদ্যোগ (সিক্যাফ)।সিক্যাফ বলছে, ১৮ বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে সাইবার অপরাধে আক্রান্তের হার কমে হয়েছে ১৩.৬৫ শতাংশ। তবে সামাজিক লোক-লজ্জার ট্যাবুতে তা থাকছে অন্তরালেই। তাই গণ-সাইবার স্বাক্ষরতার পাশাপাশি দেশের সাইবার সার্বভৌমত্ব অক্ষুণ্ন রাখতে সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে নিজস্ব সাইবার সল্যুশন তৈরির ওপর গুরুত্বারোপ করা জরুরি। স্বপ্রণোদিত হয়ে ১৩২ জন ভুক্তভোগীর অভিজ্ঞতা থেকে এ ফলাফল পেয়েছে স্বেচ্ছাসেবী এ সংগঠন।অনুষ্ঠিত সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিক্যাফ উপদেষ্টা প্রকৌশলী মো. মুশফিকুর রহমান। গবেষণা প্রতিবেদন পেশ করেন সিক্যাফ গবেষণা দলের প্রধান ইনডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশের সামাজিক বিজ্ঞান ও মানবিক বিভাগের জ্যেষ্ঠ প্রভাষক ওবায়দুল্লাহ আল মারজুক।অনুষ্ঠানে উপস্থাপিত ‘সিক্যাফ সাইবার অপরাধ প্রবণতা-২০২৪’ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, দেশে সাইবার অপরাধে যুক্ত হচ্ছে নতুন অপরাধ। এক বছরের ব্যবধানে এ হার দ্বিগুণের বেশি বেড়ে মোট অপরাধের ১১.৮৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। পরপর দুই বছরের জরিপ-ফল থেকে ১৮ বছরের কম বয়সী সাইবার আক্রান্ত শিশুদের হার কমে দাঁড়িয়েছে ১৩.৬৫ শতাংশে।ভুক্তভোগীদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৭৮.৭৮ শতাংশের বয়স ১৮ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে। এছাড়াও আক্রান্তদের প্রায় ৫৯ শতাংশই নারী। অপরাধের ধরনের মধ্যে ২১.৬৫ শতাংশ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও অনলাইনে অ্যাকাউন্ট হ্যাকিংয়ের শিকার হয়ে শীর্ষে রয়েছে। আর বিগত পাঁচ বছরের মধ্যে ২০২৩ সালে দেশে সাইবার জগতে ‘পর্নোগ্রাফি’ অপরাধ বৃদ্ধির প্রবণতা দেখা গেছে। ভুক্তভোগীদের ১১.৩৫ শতাংশ এই অপরাধের শিকার হয়েছেন।এছাড়াও ভুক্তভোগীদের মধ্যে ৪৭.৭২ শতাংশ সামাজিক মর্যাদাহানী, ৪০.১৫ শতাংশ আর্থিক ক্ষতির শিকার এবং প্রায় সবাই মানসিক যন্ত্রণায় কাতর ছিলেন। এদের মধ্যে মাত্র ১২ শতাংশ আইনের আশ্রয় নিয়েছেন। তাদের মধ্যে ৮১.২৫ শতাংশ সাধারণ ডায়েরি এবং ১৮.৭৫ শতাংশ লিখিত অভিযোগ করেছেন।আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে অভিযোগকারীদের মধ্যে ১২.৫০ শতাংশ মন্তব্য করেননি। ৮৭.৫০ শতাংশ সুফল পাননি। এসব প্রতারণায় আক্রান্তদের বেশিরভাগই শিক্ষিত।প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, সর্বোচ্চ ৪০.৯০ শতাংশ ভুক্তভোগী উচ্চ মাধ্যমিক পাস, ২১.২১ শতাংশ স্নাতক/সম্মান পাস, ১৬.৬৬ শতাংশ মাধ্যমিক পাস এবং ১২.৮৭ শতাংশ মাধ্যমিকের নিচের।অনুষ্ঠানে প্যানেল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিটিআরসির মহাপরিচালক (ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অপারেশন) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কাজী মুস্তাফিজুর রহমান, ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশের গ্লোবাল স্টাডিজ অ্যান্ড গভর্নেন্স (জি.এস.জি) বিভাগের অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ এ হুসেইন, বিশ্বব্যাংকের পরামর্শক ও প্রধান গবেষক, আইডিয়া ফাউন্ডেশনের হুসেইন সামাদ, বাংলাদেশ উইমেন ইন টেকনোলজির কোষাধ্যক্ষ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার নাজমুস সালিহিন এবং ঢাকা মহানগর পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের (সিটিটিসি) অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার ইশতিয়াক আহমেদ।
সিক্যাফ সভাপতি কাজী মুস্তাফিজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক নুরুন আশরাফী। অন্যদের মধ্যে সিক্যাফ সহ-সভাপতি এস এম ইমদাদুল হক এবং প্রশিক্ষণ ও গবেষণা সম্পাদক আব্দুল মুনয়েম সৈকত প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
https://youtu.be/7uUj7uCehlI?si=7a1e05biCcnrRE7G
Copyright © 2024 dailysdiganta. All rights reserved.