![](https://dailysdiganta.com/wp-content/plugins/print-bangla-news/assest/img/print-news.png)
সোমবার (২ জুন) বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের তিন বিচারপতির বেঞ্চ এই আদেশ দেন। আদেশে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আসামির করা লিভ টু আপিল খারিজ করে দেওয়া হয়েছে।আদালতের আদেশের বিষয়টি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন রাষ্ট্রের শীর্ষ আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট এ এম আমিন উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘আপিল বিভাগের এই আদেশের ফলে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(১) ধারার মামলার তদন্ত করতে পারবে পিবিআই। বিয়ের মিথ্যা প্রলোভন দিয়ে একাধিকবার ধর্ষণের অভিযোগে গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়ার দেবগ্রামের অধিবাসী দেব দুলাল বসুর (৪৫) বিরুদ্ধে মামলা করেন ভুক্তভোগী এক নারী।
আরো পড়ুন:জামিন নিতে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালে ড. ইউনূস
বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ওই শিক্ষার্থীর দায়েরকৃত অভিযোগে বলা হয়েছে যে, মিরপুরের একটি ভাড়া বাসায় তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন আসামি। এ ঘটনায় তিনি মিরপুর মডেল থানায় মামলা করতে যান। কিন্তু পুলিশ মামলাটি গ্রহণ না করে তাকে ফিরিয়ে দেন। পরে ভিকটিম ২০২২ সালের ২৮ জুলাই অভিযোগটি ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে দাখিল করেন। ট্রাইব্যুনাল বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে অভিযোগটি অনুসন্ধানের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেন। পিবিআই অভিযোগের অনুসন্ধান করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। ওই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে গত বছরের ২ জানুয়ারি আসামি দেব দুলালের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৮ এর বিচারক জেলা ও দায়রা মাফরোজা পারভীন। এই অভিযোগ গঠন আদেশ চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আবেদন করেন আসামি। ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৬১(ক) ধারায় করা ওই আবেদন শুনানি শেষে তা খারিজ করে দেন বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর দ্বৈত হাইকোর্ট বেঞ্চ। আদেশে হাইকোর্ট বলেছেন, আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। মৌখিক ও দালিলিক সাক্ষ্যের ভিত্তিতে মামলাটি বিচারের জন্য আমলে নেওয়া হয়েছে। এমতাবস্থায় মামলার বিচার চালিয়ে নিতে ট্রাইব্যুনালকে নির্দেশ দেওয়া হলো। এই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল করেন আসামি।
আরো পড়ুন:চতুর্থ ধাপের উপজেলা নির্বাচন ৫ জুন
আসামির পক্ষে আইনজীবী মো. ওজিউল্লাহ বলেন, ‘‘পিবিআই পুলিশের একটি সংস্থা। ২০২৩ সালে ‘খোরশেদ আলম বনাম রাষ্ট্র’ মামলায় আপিল বিভাগের দেওয়া রায়ের প্রেক্ষিতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলার তদন্ত করার অধিকার রাখেন না পিবিআই। কারণ এটা পুলিশের মত একটি সংস্থা।’’জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, ‘পিবিআই পুলিশের অংশ হলেও তারা একটি পৃথক স্বাধীন তদন্ত সংস্থা। এছাড়া পিবিআই কী কী অপরাধের তদন্ত করতে পারবেন সেটা তাদের তফসিলে উল্লেখ করা হয়েছে। ওই তফসিল অনুযায়ী পিবিআই ৯(১) ধারার মামলার তদন্ত করতে কোন আইনগত বাধা নেই।’ তিনি বলেন, ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনটি করা হয়েছে ২০০০ সালে। আর পিবিআই গঠন করা হয়েছে ২০১৬ সালে। ওই আইনের পরেই পুলিশের এই বিশেষ সংস্থা গঠন করা হয়েছে। নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্খেই সরকার অনেক চিন্তাভাবনা করে এই পিবিআই গঠন করে। তাই এ ধরনের মামলার সুষ্ঠু তদন্তে পিবিআইকে দরকার।’ শুনানি শেষে আপিল বিভাগ আসামির আবেদন খারিজ করে দেয়। এ প্রসঙ্গে সহকারি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সায়েম মুরাদ বলেন, ‘আপিল বিভাগের পূর্বের এক রায়ে বলেছে যে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের ৯(১) ধারার অভিযোগ গ্রহণ না করলে পুলিশ তার তদন্ত করতে পারবে না। এই রায় তুলে ধরে পিবিআইয়ের তদন্তে বাধা সৃষ্টি করতে চাচ্ছিল আসামিপক্ষ। আপিল বিভাগ সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছে।’