Dhaka ০৫:৫৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জাতীয় পরিসংখ্যান দিবস : একটি দেশের জাতীয় উন্নয়নে সঠিক পরিসংখ্যান উন্নয়ন ও পরিকল্পনাকে ত্বরান্বিত করে

জাতীয় পরিসংখ্যান দিবস। ৪র্থবারের মতো দেশে জাতীয় পরিসংখ্যান দিবস ২০২৪ পালিত হচ্ছে আজ মঙ্গলবার। প্রতিবছর ২৭ ফেব্রুয়ারি দিনটিকে জাতীয়ভাবে পরিসংখ্যান দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।২০২০ সালের ৮ জুন মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ২০১৩ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদে পরিসংখ্যান আইন পাস করা হয়। এ আইনের ভিত্তিতে পরিসংখ্যান ব্যবস্থাপনা উন্নয়নে আমূল পরিবর্তন আসে। এ দিবসটির স্মরণেই প্রতিবছর জাতীয় পরিসংখ্যান দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।আর একটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে পরিসংখ্যান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অর্থাৎ নির্ভুল, নির্ভরযোগ্য পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে পরিকল্পিত অর্থনীতি প্রণয়ন ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণে পরিসংখ্যানের গুরুত্ব অপরিসীম।
দিন দিন বাড়ছে পরিসংখ্যানের গুরুত্ব। বিশেষ করে পরিকল্পিত অর্থনীতির জন্য সঠিক পরিসংখ্যান অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। সেই সঙ্গে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) ক্ষেত্রে তথ্য-উপাত্তের ঘাটতি প্রবল থাকায় সঠিক তথ্য প্রাপ্তিতে জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে। এ অবস্থায় আজ পালিত হচ্ছে জাতীয় পরিসংখ্যান দিবস।
১৯৭৪ সালের ২৬ আগস্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের অধীন চারটি পরিসংখ্যান সংস্থাকে এক করে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) প্রতিষ্ঠা করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এরপর অনেক বন্ধুর পথ পেরিয়ে আজ শক্ত ভিতের উপর দাঁড়িয়েছে দেশের পরিসংখ্যান ব্যবস্থা।  আর পরিসংখ্যানের গুরুত্ব সব সময়ই ছিল। কিন্তু এখন আরও অনেক বেড়েছে। কারণ দেশের অর্থনীতির পালস বুঝতে হলে পরিসংখ্যানের বিকল্প নেই। তাছাড়া জাতির উন্নয়ন আর অগ্রগতি যা-ই বলেন, সবকিছুর সঙ্গেই পরিসংখ্যান জড়িত। মানুষের সুষম উন্নয়নের জন্যও পরিকল্পনার প্রয়োজন। এখন বিশ্বব্যাপী পরিসংখ্যানের দিক বিবেচনা করেই উন্নয়ন পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়। আর এর গুরুত্ব বিবেচনা করেই ১৯৭৪ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু সঠিক পরিসংখ্যানের গুরুত্ব তুলে ধরেছিলেন। বাংলাদেশের জনসংখ্যা এখন দেশের মোট দাঁড়িয়েছে ১৬ কোটি ৯৮ লাখ ২৮ হাজার ৯১১ জনে।  এর মধ্যে ঢাকায় বাস করেন চার কোটি ৫৬ লাখ ৪৪ হাজার ৫৮৬ জন। মোট জনসংখ্যার পুরুষ আট কোটি ৪১ লাখ ৩৪ হাজার, নারী আট কোটি ৫৬ লাখ ৮৬ ও তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ আট হাজার ১২৪ জন। যেখানে নারী সংখ্যা মোট জনসংখ্যার প্রায় ৫০ দশমিক ৪৬ শতাংশ  ও পুরুষ সংখ্যা ৪৯ দশমিক ৫৪ শতাংশ।
তাদের মধ্যে পল্লী বা গ্রামে বসবাস করেন এমন মানুষ ১১ কোটি ৬০ লাখ ৬৫ হাজার ৮০৪ জন এবং শহরে পাঁচ কোটি ৩৭ লাখ ৬৩ হাজার ১০৭ জন। বিবিএস জানায়, বিভাগভিত্তিতে সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যা ঢাকা শহরে। এর সংখ্যা চার কোটি ৫৬ লাখ ৪৪ হাজার ৫৮৬ জন। এর পরে রয়েছে  চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও খুলনা। তার মধ্যে চট্টগ্রামে তিন কোটি ৪১ লাখ ৭৮ হাজার, রাজশাহীতে দুই কোটি ৮০ হাজর, রংপুরে এক কোটি ৮০ লাখ ২০ হাজার ৭১, খুলনায় এক কোটি ৭৮ লাখ ১৩ হাজার ২১৮, ময়মনসিংহে এক কোটি ২৬ লাখ ৩৭ হাজার ৪৭২, সিলেটে এক কোটি ১৪ লাখ ১৫ হাজার ১১৩ এবং সবচেয়ে কম বরিশালে ৯৩ লাখ দুই লাখ। ২০২২ সাল পর্যন্ত বস্তিতে বসবাস করেন এমন জনসংখ্যার পরিমাণ ১৭ লাখ ৩৬ হাজার ৩০২ জন। যেখানে পুরুষের আধিক্য বেশি, এই সংখ্যা আট লাখ ৯৭ হাজার ৪০৩ জন। ভাসমান জনসংখ্যা ২২ হাজার ১৮৫ জন। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ১৬ লাখ ৫০ হাজার ৪৭৮ জন। ধর্মভিত্তিক জনসংখ্যায় মুসলমান ৯১ দশমিক ০৮ শতাংশ , হিন্দু ৭ দশমিক ৯৬ শতাংশ , বৌদ্ধ শূন্য দশমিক ৬১ শতাংশ , খ্রিস্টান শূন্য দশমিক ৩০ শতাংশ ও অন্যরা শূন্য দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ।
* ধর্মভিত্তিক জনগোষ্ঠী:-গত এক দশকে দেশে মুসলিম জনগোষ্ঠী বেড়ে। ২০১১ সালে ছিলো ৯০ দশমিক ৩৯ শতাংশ, আর ২০২২ এসে ৯১ দশমিক ০৮ শতাংশ। তবে এসময় হিন্দু জনগোষ্ঠীর সংখ্যা কমেছে। ২০১১ সালে ছিলো ৮ দশমিক ৫৪ শতাংশ। ২০২২ সালে তা এসে দাঁড়িয়ে ৭ দশমিক ৯৬ শতাংশ।  * এছাড়া বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যা শূন্য দশমিক ৬২ শতাংশ থেকে কমে হয়েছে শূন্য দশমিক ৬১ শতাংশ। * খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যা শূন্য দশমিক ৩১ শতাংশ থেকে কমে দাঁড়িয়েছে শূন্য দশমিক ৩০ শতাংশে। আর অন্য ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যা আগে ছিল শূন্য দশমিক ১৪ শতাংশ। এখন তা কমে হয়েছে শূন্য দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ।প্রতি বর্গ কিলোমিটারে যতো জনের বাস
২০১১ সালে প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ৯৭৬ জন বসবাস করলেও ২০২২ সালে এসে প্রতি বর্গ কিলোমিটারে বসবাস করেন এক হাজার ১১৯ জন।
* বিবাহিত/অবিবাহিত নারী-পুুুরুষের সংখ্যা দেশে অবিবাহিত পুরুষ আছেন ৩৫ দশমিক ৮৬ শতাংশ। অন্যদিকে নারীর সংখ্যা ২২ দশমিক ০৪ শতাংশ। বর্তমানে বিবাহিত পুরুষের সংখ্যা ৬২ দশমিক ৭৬ শতাংশ আর নারী ৬৭ দশমিক ৩২ শতাংশ। * স্বাক্ষরতা:-গত এক দশকে দেশে স্বাক্ষরতার হার বেড়েছে। ২০১১ সালে ছিলো ৫১ দশমিক ৭৭ শতাংশ, ২০২২সালে তা বেড়ে হয়েছে ৭৪ দশমিক ৮০ শতাংশ।সাক্ষরতার দিক থেকে এগিয়েছে পুরুষ, গড়ে তা ৭৬ দশমিক ৭১ শতাংশ। অপরদিকে নারীর সংখ্যা ৭২ দশমিক ৯৪ শতাংশ। *শিক্ষা ব্যবস্থা :-সাধারণ শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষার্থী সংখ্যা কমলেও বেড়েছে কারিগরি শিক্ষায়। ২০১১ সালে গড়ে ৯৩ দশমিক ৭১ শতাংশ সাধারণ শিক্ষা নিলেও ২০২২ সালে এসেছে ৯৮ দশমিক ২৬ শতাংশ। কারিগরিতে এ হার ২০১১ সালে শূন্য দশমিক ৭১ শতাংশ আর ২০২২ সালে শূন্য দশমিক ৮১ শতাংশ.শিক্ষা  কর্মসংস্থান এমনকি ট্রেনিংয়েও নেই দেশে এমন জনসংখ্যা ৩৪ দশমিক ২৬ শতাংশ। যেখানে নারী আছেন ৫২ দশমিক ৭৬ শতাংশ। * কৃষি:-কৃষিতে নিয়োজিত ১৮ দশমিক ৪১ শতাংশ, সেবা খাতে নিয়োজিত ৪৩ দশমিক ৬৮ শতাংশ, কৃষিতে ৩৭ দশমিক ৯১ শতাংশ, কাজ করে না ২৯ দশমিক ৩২ শতাংশ, কাজ খুঁজছে ১ দশমিক ৬৫ শতাংশ, কাজে নিয়োজিত ৩৭ দশমিক ২১ শতাংশ, গৃহস্থালী কাজে ৩১ দশমিক ৮২ শতাংশ, নিজের বাড়ি আছে ৮০ দশমিক ৭৯ শতাংশ।
* গৃহ:-নিজের বাড়ি আছে ৮০ দশমিক ৭৯ শতাংশ, ভাড়া বাসায় ১৪ দশমিক ৩২ শতাংশ।
* বিদ্যুৎ:-দেশে ৯৯ দশমিক ২৪ শতাংশ পরিবারে বিদ্যুৎ সুবিধা আছে।
* প্রবাসী আয়:-দেশে প্রবাসী আয় আসে ১০ দশমিক ৮৬ শতাংশ পল্লীতে এবং ৭ দশমিক ৫১ শতাংশ শহরে।  * মোবাইল, ইন্টারনেট :-দেশে মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষ, আর ইন্টারনেট ব্যবহার করেন ৩৭ শতাংশ মানুষ।
২০১১ সালের জনশুমারিতে গড় জনসংখ্যার বৃদ্ধির হার ছিল ১ দশমিক ৩৭। জনসংখ্যার ঘনত্ব বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ১১৯ জন। ২০১১ সালের শেষ জনশুমারিতে যা ছিল ৯৭৬ জন। স্বাক্ষরতার হার বেড়ে হয়েছে ৭৪ দশমিক ৬৬ শতাংশ। আগের শুমারিতে ছিল ৫১ দশমিক ৭৭ শতাংশ। পাঁচ বছরের ঊর্ধ্বে মুঠোফোন ব্যবহারকারী এখন ৫৫ দশমিক ৮৯ শতাংশ। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা মোট জনসংখ্যার ৩০ দশমিক ৬৮ শতাংশ।
দেশে এখন মোট খানার সংখ্যা ৪ কোটি ১০ লাখ। আগের শুমারিতে ছিল ৩ কোটি ২১ লাখ। মানে খানার সংখ্যা বাড়ছে। খানার আকার এখন চার সদস্যের। আগে যা ছিল ৪ দশমিক ৫ শতাংশ। ধর্মভিত্তিক জনসংখ্যায় দেখা গেছে, মুসলমান ৯১ শতাংশ। সনাতন ধর্মাবলম্বী ৭ দশমিক ৯৫ শতাংশ। ২০১১ সালের জনশুমারিতে হিন্দু ছিল ৮ দশমিক ৫৪ শতাংশ। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী ছিল শূন্য দশমিক ৬১ শতাংশ। আগের শুমারিতে ছিল শূন্য দশমিক ৬২ শতাংশ।
২০০১ সালে দেশে জনসংখ্যা ছিল ১২ কোটি ৪৩ লাখ ৫৫ হাজার ২৬৩ জন। ১৯৯১ সালে ছিল ১০ কোটি ৬৩ লাখ ১৪ হাজার ৯৯২ জন। ১৯৮১ সালে ছিল ৮ কোটি ৭১ লাখ ১৯ হাজার ৯৬৫ জন এবং ১৯৭৪ সালের প্রথম শুমারিতে দেশে জনসংখ্যা ছিল ৭ কোটি ১৪ লাখ ৭৯ হাজার ৭১ জন। প্রসঙ্গত, জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যবস্থাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপদানের লক্ষ্যে ২০১৩ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদে ‘পরিসংখ্যান আইন, ২০১৩’ পাস হয়। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালের ২৬ আগস্ট চারটি পরিসংখ্যান সংস্থাকে (পরিকল্পনা কমিশনের অধীন পরিসংখ্যান ব্যুরো, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন কৃষি পরিসংখ্যান ব্যুরো ও কৃষি শুমারি কমিশন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন আদমশুমারি কমিশন) একীভূত করে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো প্রতিষ্ঠা করেন। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সার্বিক কর্মকাণ্ড সমন্বয়, তত্ত্বাবধান ও সাচিবিক সহযোগিতা প্রদানের জন্য জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৫ সালের ৩ জুলাই পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অধীন পরিসংখ্যান বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক ২০১২ সালে বিস্তৃত পরিসরে পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৯ সালের ২৫ অক্টোবর আগারগাঁওস্থ সুদৃশ্য ও সুপরিকল্পিত পরিসংখ্যান ভবন উদ্বোধন করেন।২০২০ সালে ২৭ ফেব্রুয়ারিকে পরিসংখ্যান দিবস হিসেবে পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়।
পরিশেষে বলতে চাই, বাংলাদেশে পরিসংখ্যানের গুরুত্বের সহায়ক স্বরূপ আজ ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে সমগ্র বাংলাদেশে একযোগে” ‘স্মার্ট পরিসংখ্যান উন্নয়নের সোপান ” শ্লোগানকে সামনে রেখে ৪র্থ বারের মত পালিত হচ্ছে জাতীয় পরিসংখ্যান দিবস।“পরিসংখ্যান আইন-২০১৩” এর বদৌলতে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর উপর অর্পিত অফিসিয়াল পরিসংখ্যান প্রণয়নের দায়িত্ব আরো বেশি গুরুত্ব পায়। সঠিক পরিসংখ্যান একটি দেশের উন্নয়ন ও পরিকল্পনাকে ত্বরান্বিত করে। সঠিক ও মান সম্পন্ন পরিসংখ্যান ব্যতীত দেশের উন্নয়নকল্পে গৃহীত পরিকল্পনা ফলপ্রসু করা সম্ভব নয়। ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণের যে সংকল্প নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার তার অন্যতম সহায়ক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করে আসছে বিবিএস। বিবিএস প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ০৬ (ছয়) টি জনশুমারি, ০৪ (চার) টি কৃষিশুমারি, ০৩ (তিন) টি অর্থনৈতিকশুমারি, ০১ (এক) টি তাঁতশুমারি ও বিভিন্ন জরিপকার্যক্রম সম্পাদন করে আসছে। ডিজিটাল বাংলাদেশের ১ম ডিজিটাল শুমারি বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো ২০২২ খ্রিস্টাব্দে অত্যন্ত সফলতার সাথে সম্পন্ন করেছে। “জনশুমারি ও গৃহগণনা-২০২২” এর কার্যক্রম পরিচালনা করা হয় “Computer Assisted Personal Interviewing (CAPI)” পদ্ধতিতে, যার মাধ্যমে সঠিক, সময়োচিত ও বস্তুনিষ্ঠ পরিসংখ্যান প্রদানে বিবিএস আরো একধাপ এগিয়ে গিয়েছে। ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহারের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধানের দ্বারা মাঠ পর্যায় হতে সংগ্রহীত গুনগত পরিসংখ্যান খুবই অল্প সময়ের মাধ্যমে সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনায় প্রধান ভূমিকা রাখতে প্রদান করা হয়েছে। সমগ্র বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরতে ও মর্যাদা অক্ষুণ্ণ রাখতে সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি)-২০১৫ অর্জনে বিবিএস ইতোমধ্যে তথ্য-উপাত্ত সরবরাহ করে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। তারই ধারাবাহিকতায় টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা-২০৩০ অর্জনে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো ও পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ (এসআইডি) সরকারকে এসডিজি’র ২৩২ টি সূচকের মধ্যে ১৫৬টি সূচক এর তথ্য সরবারহ করছে।আধুনিক ও ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১২ ডিসেম্বর ২০২২ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস উপলক্ষে প্রধান অতিথির ভাষণে সর্ব প্রথম “স্মার্ট বাংলাদেশ” গড়ার কথা বলেন। আমরা সময়োপযোগী সঠিক পরিসংখ্যানের সাহায্যে ২০৪১ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণে যথাযথ পরিকল্পনা গ্রহণ করে জাতির জনক স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত, উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সক্ষম হব। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো সঠিক, সময়োচিত ও বস্তুনিষ্ঠ পরিসংখ্যান প্রদানে ইতোপূর্বে কাজ শুরু করে দিয়েছে এর সাথে নতুনভাবে যুক্ত হয়েছে ডিজিটাল বাংলাদেশের তথ্য প্রযুক্তি। ভবিষ্যতে বিবিএস মানসম্মত নিখুঁত পরিসংখ্যান প্রণয়ন করে উন্নয়নে ও অগ্রগতিতে অধিকতর ভূমিকা রাখবে। তাই আন্তর্জাতিক পরিসংখ্যান দিবসে বাংলাদেশের উচিত আগামীর দেশ গঠন ও দেশের অর্থনীতি বাস্তবায়নে পরিসংখ্যানভিত্তিক পরিকল্পনা গ্রহণে জোর দেওয়ার অঙ্গীকার করা।

3 thoughts on “জাতীয় পরিসংখ্যান দিবস : একটি দেশের জাতীয় উন্নয়নে সঠিক পরিসংখ্যান উন্নয়ন ও পরিকল্পনাকে ত্বরান্বিত করে

  1. Howdy! This blog post could not be written much better!

    Looking through this post reminds me of my previous roommate!

    He continually kept preaching about this. I will send this post to him.
    Pretty sure he’ll have a very good read. Many thanks for sharing!

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপডেট সংবাদ
বিনামূল্যে ব্রেকিং নিউজ পেতে ok ক্লিক করুন OK .

জাতীয় পরিসংখ্যান দিবস : একটি দেশের জাতীয় উন্নয়নে সঠিক পরিসংখ্যান উন্নয়ন ও পরিকল্পনাকে ত্বরান্বিত করে

Update Time : ০৬:৩২:১০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
জাতীয় পরিসংখ্যান দিবস। ৪র্থবারের মতো দেশে জাতীয় পরিসংখ্যান দিবস ২০২৪ পালিত হচ্ছে আজ মঙ্গলবার। প্রতিবছর ২৭ ফেব্রুয়ারি দিনটিকে জাতীয়ভাবে পরিসংখ্যান দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।২০২০ সালের ৮ জুন মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ২০১৩ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদে পরিসংখ্যান আইন পাস করা হয়। এ আইনের ভিত্তিতে পরিসংখ্যান ব্যবস্থাপনা উন্নয়নে আমূল পরিবর্তন আসে। এ দিবসটির স্মরণেই প্রতিবছর জাতীয় পরিসংখ্যান দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।আর একটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে পরিসংখ্যান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অর্থাৎ নির্ভুল, নির্ভরযোগ্য পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে পরিকল্পিত অর্থনীতি প্রণয়ন ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণে পরিসংখ্যানের গুরুত্ব অপরিসীম।
দিন দিন বাড়ছে পরিসংখ্যানের গুরুত্ব। বিশেষ করে পরিকল্পিত অর্থনীতির জন্য সঠিক পরিসংখ্যান অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। সেই সঙ্গে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) ক্ষেত্রে তথ্য-উপাত্তের ঘাটতি প্রবল থাকায় সঠিক তথ্য প্রাপ্তিতে জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে। এ অবস্থায় আজ পালিত হচ্ছে জাতীয় পরিসংখ্যান দিবস।
 আরো পড়ুন:সাংবাদিকের উপর মেজাজ হারালেন সোহান
১৯৭৪ সালের ২৬ আগস্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের অধীন চারটি পরিসংখ্যান সংস্থাকে এক করে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) প্রতিষ্ঠা করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এরপর অনেক বন্ধুর পথ পেরিয়ে আজ শক্ত ভিতের উপর দাঁড়িয়েছে দেশের পরিসংখ্যান ব্যবস্থা।  আর পরিসংখ্যানের গুরুত্ব সব সময়ই ছিল। কিন্তু এখন আরও অনেক বেড়েছে। কারণ দেশের অর্থনীতির পালস বুঝতে হলে পরিসংখ্যানের বিকল্প নেই। তাছাড়া জাতির উন্নয়ন আর অগ্রগতি যা-ই বলেন, সবকিছুর সঙ্গেই পরিসংখ্যান জড়িত। মানুষের সুষম উন্নয়নের জন্যও পরিকল্পনার প্রয়োজন। এখন বিশ্বব্যাপী পরিসংখ্যানের দিক বিবেচনা করেই উন্নয়ন পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়। আর এর গুরুত্ব বিবেচনা করেই ১৯৭৪ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু সঠিক পরিসংখ্যানের গুরুত্ব তুলে ধরেছিলেন। বাংলাদেশের জনসংখ্যা এখন দেশের মোট দাঁড়িয়েছে ১৬ কোটি ৯৮ লাখ ২৮ হাজার ৯১১ জনে।  এর মধ্যে ঢাকায় বাস করেন চার কোটি ৫৬ লাখ ৪৪ হাজার ৫৮৬ জন। মোট জনসংখ্যার পুরুষ আট কোটি ৪১ লাখ ৩৪ হাজার, নারী আট কোটি ৫৬ লাখ ৮৬ ও তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ আট হাজার ১২৪ জন। যেখানে নারী সংখ্যা মোট জনসংখ্যার প্রায় ৫০ দশমিক ৪৬ শতাংশ  ও পুরুষ সংখ্যা ৪৯ দশমিক ৫৪ শতাংশ।
 আরো পড়ুন:যে তালিকায় ভারত-অস্ট্রেলিয়াকে পিছনে ফেলে শীর্ষে বাংলাদেশ
তাদের মধ্যে পল্লী বা গ্রামে বসবাস করেন এমন মানুষ ১১ কোটি ৬০ লাখ ৬৫ হাজার ৮০৪ জন এবং শহরে পাঁচ কোটি ৩৭ লাখ ৬৩ হাজার ১০৭ জন। বিবিএস জানায়, বিভাগভিত্তিতে সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যা ঢাকা শহরে। এর সংখ্যা চার কোটি ৫৬ লাখ ৪৪ হাজার ৫৮৬ জন। এর পরে রয়েছে  চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও খুলনা। তার মধ্যে চট্টগ্রামে তিন কোটি ৪১ লাখ ৭৮ হাজার, রাজশাহীতে দুই কোটি ৮০ হাজর, রংপুরে এক কোটি ৮০ লাখ ২০ হাজার ৭১, খুলনায় এক কোটি ৭৮ লাখ ১৩ হাজার ২১৮, ময়মনসিংহে এক কোটি ২৬ লাখ ৩৭ হাজার ৪৭২, সিলেটে এক কোটি ১৪ লাখ ১৫ হাজার ১১৩ এবং সবচেয়ে কম বরিশালে ৯৩ লাখ দুই লাখ। ২০২২ সাল পর্যন্ত বস্তিতে বসবাস করেন এমন জনসংখ্যার পরিমাণ ১৭ লাখ ৩৬ হাজার ৩০২ জন। যেখানে পুরুষের আধিক্য বেশি, এই সংখ্যা আট লাখ ৯৭ হাজার ৪০৩ জন। ভাসমান জনসংখ্যা ২২ হাজার ১৮৫ জন। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ১৬ লাখ ৫০ হাজার ৪৭৮ জন। ধর্মভিত্তিক জনসংখ্যায় মুসলমান ৯১ দশমিক ০৮ শতাংশ , হিন্দু ৭ দশমিক ৯৬ শতাংশ , বৌদ্ধ শূন্য দশমিক ৬১ শতাংশ , খ্রিস্টান শূন্য দশমিক ৩০ শতাংশ ও অন্যরা শূন্য দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ।
 আরো পড়ুন:কোরিয়াকে হারিয়ে স্বপ্নের ফাইনালে জর্ডান
* ধর্মভিত্তিক জনগোষ্ঠী:-গত এক দশকে দেশে মুসলিম জনগোষ্ঠী বেড়ে। ২০১১ সালে ছিলো ৯০ দশমিক ৩৯ শতাংশ, আর ২০২২ এসে ৯১ দশমিক ০৮ শতাংশ। তবে এসময় হিন্দু জনগোষ্ঠীর সংখ্যা কমেছে। ২০১১ সালে ছিলো ৮ দশমিক ৫৪ শতাংশ। ২০২২ সালে তা এসে দাঁড়িয়ে ৭ দশমিক ৯৬ শতাংশ।  * এছাড়া বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যা শূন্য দশমিক ৬২ শতাংশ থেকে কমে হয়েছে শূন্য দশমিক ৬১ শতাংশ। * খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যা শূন্য দশমিক ৩১ শতাংশ থেকে কমে দাঁড়িয়েছে শূন্য দশমিক ৩০ শতাংশে। আর অন্য ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যা আগে ছিল শূন্য দশমিক ১৪ শতাংশ। এখন তা কমে হয়েছে শূন্য দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ।প্রতি বর্গ কিলোমিটারে যতো জনের বাস
২০১১ সালে প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ৯৭৬ জন বসবাস করলেও ২০২২ সালে এসে প্রতি বর্গ কিলোমিটারে বসবাস করেন এক হাজার ১১৯ জন।
 আরো পড়ুন:গাইবান্ধায় জাতীয় ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সমিতির মিলনমেলা
* বিবাহিত/অবিবাহিত নারী-পুুুরুষের সংখ্যা দেশে অবিবাহিত পুরুষ আছেন ৩৫ দশমিক ৮৬ শতাংশ। অন্যদিকে নারীর সংখ্যা ২২ দশমিক ০৪ শতাংশ। বর্তমানে বিবাহিত পুরুষের সংখ্যা ৬২ দশমিক ৭৬ শতাংশ আর নারী ৬৭ দশমিক ৩২ শতাংশ। * স্বাক্ষরতা:-গত এক দশকে দেশে স্বাক্ষরতার হার বেড়েছে। ২০১১ সালে ছিলো ৫১ দশমিক ৭৭ শতাংশ, ২০২২সালে তা বেড়ে হয়েছে ৭৪ দশমিক ৮০ শতাংশ।সাক্ষরতার দিক থেকে এগিয়েছে পুরুষ, গড়ে তা ৭৬ দশমিক ৭১ শতাংশ। অপরদিকে নারীর সংখ্যা ৭২ দশমিক ৯৪ শতাংশ। *শিক্ষা ব্যবস্থা :-সাধারণ শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষার্থী সংখ্যা কমলেও বেড়েছে কারিগরি শিক্ষায়। ২০১১ সালে গড়ে ৯৩ দশমিক ৭১ শতাংশ সাধারণ শিক্ষা নিলেও ২০২২ সালে এসেছে ৯৮ দশমিক ২৬ শতাংশ। কারিগরিতে এ হার ২০১১ সালে শূন্য দশমিক ৭১ শতাংশ আর ২০২২ সালে শূন্য দশমিক ৮১ শতাংশ.শিক্ষা  কর্মসংস্থান এমনকি ট্রেনিংয়েও নেই দেশে এমন জনসংখ্যা ৩৪ দশমিক ২৬ শতাংশ। যেখানে নারী আছেন ৫২ দশমিক ৭৬ শতাংশ। * কৃষি:-কৃষিতে নিয়োজিত ১৮ দশমিক ৪১ শতাংশ, সেবা খাতে নিয়োজিত ৪৩ দশমিক ৬৮ শতাংশ, কৃষিতে ৩৭ দশমিক ৯১ শতাংশ, কাজ করে না ২৯ দশমিক ৩২ শতাংশ, কাজ খুঁজছে ১ দশমিক ৬৫ শতাংশ, কাজে নিয়োজিত ৩৭ দশমিক ২১ শতাংশ, গৃহস্থালী কাজে ৩১ দশমিক ৮২ শতাংশ, নিজের বাড়ি আছে ৮০ দশমিক ৭৯ শতাংশ।
* গৃহ:-নিজের বাড়ি আছে ৮০ দশমিক ৭৯ শতাংশ, ভাড়া বাসায় ১৪ দশমিক ৩২ শতাংশ।
* বিদ্যুৎ:-দেশে ৯৯ দশমিক ২৪ শতাংশ পরিবারে বিদ্যুৎ সুবিধা আছে।
* প্রবাসী আয়:-দেশে প্রবাসী আয় আসে ১০ দশমিক ৮৬ শতাংশ পল্লীতে এবং ৭ দশমিক ৫১ শতাংশ শহরে।  * মোবাইল, ইন্টারনেট :-দেশে মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষ, আর ইন্টারনেট ব্যবহার করেন ৩৭ শতাংশ মানুষ।
 আরো পড়ুন:টাঙ্গাইলে জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার উদ্যোগে মহান একুশ উদযাপন
২০১১ সালের জনশুমারিতে গড় জনসংখ্যার বৃদ্ধির হার ছিল ১ দশমিক ৩৭। জনসংখ্যার ঘনত্ব বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ১১৯ জন। ২০১১ সালের শেষ জনশুমারিতে যা ছিল ৯৭৬ জন। স্বাক্ষরতার হার বেড়ে হয়েছে ৭৪ দশমিক ৬৬ শতাংশ। আগের শুমারিতে ছিল ৫১ দশমিক ৭৭ শতাংশ। পাঁচ বছরের ঊর্ধ্বে মুঠোফোন ব্যবহারকারী এখন ৫৫ দশমিক ৮৯ শতাংশ। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা মোট জনসংখ্যার ৩০ দশমিক ৬৮ শতাংশ।
দেশে এখন মোট খানার সংখ্যা ৪ কোটি ১০ লাখ। আগের শুমারিতে ছিল ৩ কোটি ২১ লাখ। মানে খানার সংখ্যা বাড়ছে। খানার আকার এখন চার সদস্যের। আগে যা ছিল ৪ দশমিক ৫ শতাংশ। ধর্মভিত্তিক জনসংখ্যায় দেখা গেছে, মুসলমান ৯১ শতাংশ। সনাতন ধর্মাবলম্বী ৭ দশমিক ৯৫ শতাংশ। ২০১১ সালের জনশুমারিতে হিন্দু ছিল ৮ দশমিক ৫৪ শতাংশ। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী ছিল শূন্য দশমিক ৬১ শতাংশ। আগের শুমারিতে ছিল শূন্য দশমিক ৬২ শতাংশ।
 আরো পড়ুন:গোবিন্দগঞ্জে জাতীয় ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সমিতির মিটআপ অনুষ্ঠিত
২০০১ সালে দেশে জনসংখ্যা ছিল ১২ কোটি ৪৩ লাখ ৫৫ হাজার ২৬৩ জন। ১৯৯১ সালে ছিল ১০ কোটি ৬৩ লাখ ১৪ হাজার ৯৯২ জন। ১৯৮১ সালে ছিল ৮ কোটি ৭১ লাখ ১৯ হাজার ৯৬৫ জন এবং ১৯৭৪ সালের প্রথম শুমারিতে দেশে জনসংখ্যা ছিল ৭ কোটি ১৪ লাখ ৭৯ হাজার ৭১ জন। প্রসঙ্গত, জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যবস্থাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপদানের লক্ষ্যে ২০১৩ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদে ‘পরিসংখ্যান আইন, ২০১৩’ পাস হয়। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালের ২৬ আগস্ট চারটি পরিসংখ্যান সংস্থাকে (পরিকল্পনা কমিশনের অধীন পরিসংখ্যান ব্যুরো, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন কৃষি পরিসংখ্যান ব্যুরো ও কৃষি শুমারি কমিশন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন আদমশুমারি কমিশন) একীভূত করে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো প্রতিষ্ঠা করেন। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সার্বিক কর্মকাণ্ড সমন্বয়, তত্ত্বাবধান ও সাচিবিক সহযোগিতা প্রদানের জন্য জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৫ সালের ৩ জুলাই পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অধীন পরিসংখ্যান বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক ২০১২ সালে বিস্তৃত পরিসরে পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৯ সালের ২৫ অক্টোবর আগারগাঁওস্থ সুদৃশ্য ও সুপরিকল্পিত পরিসংখ্যান ভবন উদ্বোধন করেন।২০২০ সালে ২৭ ফেব্রুয়ারিকে পরিসংখ্যান দিবস হিসেবে পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়।
 আরো পড়ুন:কেনিয়া যাচ্ছেন পরিবেশমন্ত্রী
পরিশেষে বলতে চাই, বাংলাদেশে পরিসংখ্যানের গুরুত্বের সহায়ক স্বরূপ আজ ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে সমগ্র বাংলাদেশে একযোগে” ‘স্মার্ট পরিসংখ্যান উন্নয়নের সোপান ” শ্লোগানকে সামনে রেখে ৪র্থ বারের মত পালিত হচ্ছে জাতীয় পরিসংখ্যান দিবস।“পরিসংখ্যান আইন-২০১৩” এর বদৌলতে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর উপর অর্পিত অফিসিয়াল পরিসংখ্যান প্রণয়নের দায়িত্ব আরো বেশি গুরুত্ব পায়। সঠিক পরিসংখ্যান একটি দেশের উন্নয়ন ও পরিকল্পনাকে ত্বরান্বিত করে। সঠিক ও মান সম্পন্ন পরিসংখ্যান ব্যতীত দেশের উন্নয়নকল্পে গৃহীত পরিকল্পনা ফলপ্রসু করা সম্ভব নয়। ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণের যে সংকল্প নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার তার অন্যতম সহায়ক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করে আসছে বিবিএস। বিবিএস প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ০৬ (ছয়) টি জনশুমারি, ০৪ (চার) টি কৃষিশুমারি, ০৩ (তিন) টি অর্থনৈতিকশুমারি, ০১ (এক) টি তাঁতশুমারি ও বিভিন্ন জরিপকার্যক্রম সম্পাদন করে আসছে। ডিজিটাল বাংলাদেশের ১ম ডিজিটাল শুমারি বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো ২০২২ খ্রিস্টাব্দে অত্যন্ত সফলতার সাথে সম্পন্ন করেছে। “জনশুমারি ও গৃহগণনা-২০২২” এর কার্যক্রম পরিচালনা করা হয় “Computer Assisted Personal Interviewing (CAPI)” পদ্ধতিতে, যার মাধ্যমে সঠিক, সময়োচিত ও বস্তুনিষ্ঠ পরিসংখ্যান প্রদানে বিবিএস আরো একধাপ এগিয়ে গিয়েছে। ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহারের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধানের দ্বারা মাঠ পর্যায় হতে সংগ্রহীত গুনগত পরিসংখ্যান খুবই অল্প সময়ের মাধ্যমে সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনায় প্রধান ভূমিকা রাখতে প্রদান করা হয়েছে। সমগ্র বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরতে ও মর্যাদা অক্ষুণ্ণ রাখতে সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি)-২০১৫ অর্জনে বিবিএস ইতোমধ্যে তথ্য-উপাত্ত সরবরাহ করে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। তারই ধারাবাহিকতায় টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা-২০৩০ অর্জনে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো ও পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ (এসআইডি) সরকারকে এসডিজি’র ২৩২ টি সূচকের মধ্যে ১৫৬টি সূচক এর তথ্য সরবারহ করছে।আধুনিক ও ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১২ ডিসেম্বর ২০২২ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস উপলক্ষে প্রধান অতিথির ভাষণে সর্ব প্রথম “স্মার্ট বাংলাদেশ” গড়ার কথা বলেন। আমরা সময়োপযোগী সঠিক পরিসংখ্যানের সাহায্যে ২০৪১ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণে যথাযথ পরিকল্পনা গ্রহণ করে জাতির জনক স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত, উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সক্ষম হব। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো সঠিক, সময়োচিত ও বস্তুনিষ্ঠ পরিসংখ্যান প্রদানে ইতোপূর্বে কাজ শুরু করে দিয়েছে এর সাথে নতুনভাবে যুক্ত হয়েছে ডিজিটাল বাংলাদেশের তথ্য প্রযুক্তি। ভবিষ্যতে বিবিএস মানসম্মত নিখুঁত পরিসংখ্যান প্রণয়ন করে উন্নয়নে ও অগ্রগতিতে অধিকতর ভূমিকা রাখবে। তাই আন্তর্জাতিক পরিসংখ্যান দিবসে বাংলাদেশের উচিত আগামীর দেশ গঠন ও দেশের অর্থনীতি বাস্তবায়নে পরিসংখ্যানভিত্তিক পরিকল্পনা গ্রহণে জোর দেওয়ার অঙ্গীকার করা।
 আরো পড়ুন:ভারতের কয়েক প্রদেশে হাওয়াই মিঠাই নিষিদ্ধ