বাজারের নিয়ন্ত্রকরাই এখন সরকারকে নিয়ন্ত্রণ করছে দাবি করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ডামি সরকার লোক দেখানো হাঁকডাক দিলেও বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। প্রতিটি পণ্যের দাম যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে, এ অবস্থায় নিম্নআয়ের শুধু নয় মধ্যবিত্তরাও চরমভাবে অসহায় হয়ে পড়েছে। চাল, ডাল, তেল, পেঁয়াজ, রসুনসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে পারছে না। শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন এসব কথা বলেন তিনি। রুহুল কবির রিজভী বলেন, সিন্ডিকেট সরকার উদ্ভট কথাবার্তা বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে। সম্পূর্ণভাবে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ সরকার এখন দামের ঊর্ধ্বগতির দায় চাপাচ্ছে বিএনপির ওপর। গতকাল (শুক্রবার) গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনা বলেছেন- ‘দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে সরকার উৎখাতে আন্দোলনকারীদের তাদেরও কিছু কারসাজি আছে।’ তার এ ধরনের কথা বলার অর্থ তার স্বেচ্ছাতন্ত্র পচে গলে বিকৃত হয়ে গেছে। তিনি স্বীকার করে নিয়েছেন দ্রব্যমূল্য বেড়েছে সীমাহীন।
আরো পড়ুন:একতরফা নির্বাচনের পর দেশ আজ চরম অন্ধকারে: রিজভী
নিজেদের ব্যর্থতা, লুটপাট, চুরি-চামারী ও অপকর্মের দায় নির্লজ্জের মতো বিএনপির ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়ার অভ্যাস পুরানো বলে উল্লেখ করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, এই বৈশিষ্ট্য পাড়া—মহল্লার বখাটেদের মতো। বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দসহ হাজার হাজার নেতাকর্মী কারাগারে বন্দি। এরপরও বিএনপি দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করেছে? জুজু’র ভয় দেখিয়ে দেশকে পার্শ্ববর্তী দেশের ওপর নির্ভরশীল করার চক্রান্ত বলে দাবি করেন রিজভী। তিনি বলেন, এই প্রথমবারের মতো কচুর মুখি ও নারিকেল আমদানি করল বাংলাদেশ। চাঁদাবাজির কারণে দেশীয় পণ্যের দাম বাড়ছে। ভারতের এসব পণ্যের গুণগত মান কম। চাঁদাবাজি নেই বলে দাম কম। সিন্ডিকেটের কারণে বাংলাদেশি এসব কৃষিপণ্যের দাম কিছুটা বেশি। এভাবে চলতে থাকলে কৃষকরা উৎপাদনে উৎসাহ হারিয়ে ফেলবে। আর এই সুযোগে বাংলাদেশের ওপর পার্শ্ববর্তী দেশের কর্তৃত্ব আরও বৃদ্ধি পাবে।
আরো পড়ুন:ভাষা শহীদদের প্রতি বিএনপির শ্রদ্ধা
রিজভী বলেন, পবিত্র রমজান আসন্ন, অথচ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য জনগণের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী নিজেই স্বীকার করেছেন সরকারি পদক্ষেপ অস্বাভাবিক দাম নিয়ন্ত্রণে কোনো কাজে আসছে না। তিনি আরও বলেন, বাজার সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতা ঢাকার জন্য গতকাল শেখ হাসিনা বলেছেন, যারা পেঁয়াজ পচিয়ে পানিতে ফেলে দিচ্ছে। তাদেরকে গণধোলাই দেওয়া উচিত। জনগণকে আইন হাতে তুলে নিতে প্ররোচিত করে আপনি শেখ হাসিনা নিজের ব্যর্থতা আড়াল করতে পারবেন না। আপনার বক্তব্য ফৌজদারি অপরাধের সমতুল্য। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মামুন, অধ্যাপক ড. সাহিদা রফিক, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, সহ দপ্তর সম্পাদক মুনির হোসেন, নির্বাহী কমিটির সদস্য তারিকুল আলম তেনজিং, অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম, অধ্যাপক ইমতিয়াজ বকুল ও মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সহসভাপতি অধ্যাপক আবেদ রাজা।