গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার কামালের পাড়া ইউনিয়নের নশিরার পাড়া গ্রামে নবজ আলী (৬৫) (নবর আলী পাগলা) নামে এক মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তির জমি সাব-রেজিষ্টার, দলিল লেখক,স্বাক্ষী ও গ্রাহক যোগস্বাজসে দলিল সম্পাদনের ঘটনা ঘটেছে। এঘটনায় সাব-রেজিষ্টারসহ ৬ জনকে আসামী করে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ নিয়ে এলাকার জনসাধারণের মধ্যে কৌতুহলের সৃষ্টি হয়েছে।
এলাকাবাসি জানায়, উপজেলার নশিরার পাড়া গ্রামের মৃত হাবিবুর রহমানের একমাত্র সন্তান নবজ আলী (৬৫) (নবর আলী পাগলা) মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় সে চিরকুমার। তার ভাই-বোন না থাকায় পিতা-মাতার মৃত্যুর পর নবজ আলীর জমিজমা সহ সকল সম্পতি স্বজনরা ভোগদখল করে আসছে। সেই সুবাদে সাব-রেজিষ্টার,দলিল লেখক ও স্বাক্ষীণের যোগস্বাজসে সুকৌশলে নবজ আলীর চাচাতো ভাইয়ের (ওমর আলীর) ছেলে হাফিজুর রহমান গত ২২ জানুয়ারী ১ একর ৩৬ শতক জমি একা ভোগ করার উদ্যেশ্যে গোপনে নবজ আলীর টিপ জাল করে নিজের নামে লিখে নেন।
গোপনে জমি লিখে নেয়ার ঘটনা সাম্প্রতিক স্থানীয় লোকজনের মধ্যে জানা-জানি হলে পাগলের স্বজনরা গত রোববার সাব-রেজিষ্টার অফিসে গিয়ে জাল দলিলের বিষয়টি নিশ্চিত হয়। পরে ওই পাগল নবজ আলীর চাচাতো ভাই নবির হোসেন পক্ষে অভিভাবক হিসেবে বাদী হয়ে গত ২৭ ফেব্রুয়ারী সাব-রেজিষ্টার মিরাজ মোর্শেদ সহ ৬ জনকে আসামী করে সাঘাটা সহকারী জজ আদালতে মামলা দায়ের করেন। স্বজন ও স্থানীয়রা জানায়, নবজ আলী একজন মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তি। সে ছোট বেলা থেকেই নবর আলী পাগলা নামে এ উপজেলার সর্বত্রেই পরিচিত ও সমাজসেবা অধিদপ্তর এর আওতায় সূবর্ণ কার্ডধারী নাগরিক। স্পষ্ট করে কথা বলতে পারে না। দলিল সম্পাদন ও বা লিখে দেয়ার বিষয়ে তার কোনো জ্ঞান নেই। কি ভাবে দলিল সম্পাদন হলো তা নিয়ে দেখা দিয়েছে জনমনে নানা প্রশ্ন।
জমি গ্রহিতা হাফিজুর রহমানের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জমি লিখে নেয়ার কথা স্বীকার করে জানান, নবজ আলী আমার চাচা, জেনে-বুঝেই জমি দলিল করে দিয়েছে। এবিষয়ে কামালের পাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহিনুর ইসলাম সাজুর সাথে কথা হলে তিনি জানান, পাগলের জমি দলিল সম্পাদনের সাথে জড়িতরা হীনমানসিকতার পরিচয় দিয়েছে। এর একটা সুষ্ঠ বিচার হওয়া উচিত। দলিল লেখক মাহমুদুল হাসান জানান, জমি দাতা এবং গ্রহিতাকে এর আগে সেভাবে চিনতাম না। পরে জানতে পেরেছি ওই জমি দাতা একজন পাগল। গ্রহিতার সাথে যোগস্বাজসে দলিল সম্পাদনের বিষয়ে সাব-রেজিষ্টার মিরাজ মোর্শেদ জানান, জমি দাতা পাগল না কি বুঝতে পারেননি। নবজ আলীর মানসিক প্রতিবন্ধীর কার্ড তারা দেখাননি। আমার কাছে তখন পাগল মনে হয়নি। দেখে শুনেই দলিল সম্পাদন করা হয়েছে।
2 thoughts on “গাইবান্ধার সাঘাটায় পাগলের জমি জাল দলিল করে নেয়ার অভিযোগ সাব-রেজিষ্টার সহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের”