বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবারহ আরও কমিয়েছে ভারতের কোম্পানি আদানি পাওয়ার। বিদ্যুতের বকেয়া বিল পরিশোধে বিলম্ব হওয়ায় সরবরাহ ৬০ শতাংশের বেশি কমিয়েছে ভারতীয় কোম্পানিটি। এই খবর জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইকোনমিক টাইমস।
শুক্রবার (৮ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায় ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইকোনমিক টাইমস।
প্রতিবেদন মতে, ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় ঝাড়খণ্ড রাজ্যে আদানির গোড্ডা পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। দুটি প্লান্ট থেকে ১৪০০-১৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হতো। তবে চলতি মাসের শুরুর দিকে তা অর্ধেকে অর্থাৎ কমিয়ে ৭০০-৭৫০ মেগাওয়াটে নামিয়ে আনা হয়।
পাওয়ার গ্রিড বাংলাদেশের উপাত্ত এবং বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের এক কর্মকর্তার বরাতে ইকোনমিক টাইমস জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) আরও একধাপ কমিয়ে তা ৫২০ মেগাওয়াটে নামিয়ে আনা হয়েছে।
আদানির কাছ থেকে বিদ্যুৎ কিনতে ২০১৫ সালে কোম্পানিটির সঙ্গে ২৫ বছর মেয়াদে একটি চুক্তি করে শেখ হাসিনা সরকার। ঝাড়খণ্ডের গোড্ডায় আদানি পাওয়ারের দুটি ইউনিট রয়েছে। যেগুলোর উৎপাদন ক্ষমতা ৮০০ মেগাওয়াট করে।
এই দুটি ইউনিটের পুরো বিদ্যুৎ অর্থাৎ ১৬০০ মেগাওয়াটের বেশিরভাগই আদানি বাংলাদেশে রফতানি করে। যা বাংলাদেশের বিদ্যুতের চাহিদার ১০ শতাংশ পূরণ করে।
তবে সম্প্রতি সেই বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে। গত বছর বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরুর আগেই কয়লার দাম নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক তৈরি হয়। কয়লার চড়া দাম দিতে অস্বীকৃতি জানায় বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)।
এরপর দাম কমাতে রাজি হয় আদানি। পায়রা ও রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের চেয়ে কম দামে কয়লা সরবরাহের প্রতিশ্রুতিও দেয় তারা। তবে এক বছর পর এখন আবারও বাড়তি দাম চাইছে আদানি।
জানা গেছে, গত জুলাই থেকে বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহৃত কয়লার দাম পায়রার তুলনায় ২২ শতাংশ বেশি ধরে বিল করছে আদানি। আবার বকেয়া বিলের ওপর ১৫ শতাংশ হারে সুদ ধরা হচ্ছে। পাশাপাশি বকেয়া বিল পরিশোধে বাংলাদেশকে নিয়মিত চাপ দিচ্ছে। ৩১ অক্টোবরের মধ্যে বকেয়া বিল পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ অর্ধেকে নামিয়ে এনেছে আদানি।
এরপর বকেয়া পরিশোধে নতুন করে ৭ নভেম্বর পর্যন্ত সময় দেয় আদানি কর্তৃপক্ষ। তা না হলে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়ার হুমকিও দেয়া হয়।