স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, পূজামণ্ডপে কোন ধরনের নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই। দুর্গাপূজা এবার ভালোভাবে, নির্বিঘ্নে ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হবে। সেজন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আট দফা নির্দেশনা মাঠ প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে পাঠানো হয়েছে।
আজ রোববার (৬ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শ্রীশ্রী রমনা কালীমন্দির পরিদর্শন শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, এবার সকল পূজামণ্ডপে পূজা উদযাপন কমিটির মাধ্যমে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, অনেক সময় দেখা যায়, স্বেচ্ছাসেবকরা রাত ৩টার পর পূজামণ্ডপ থেকে উধাও হয়ে যায়। এবার কোনো স্বেচ্ছাসেবক কোনো পূজামণ্ডপ ছেড়ে যাবে না। তারা ২৪ ঘণ্টাই দায়িত্বরত থাকবে। স্বেচ্ছাসেবকরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহযোগিতা করবে এবং তাদের মাধ্যমেই বিভিন্ন তথ্য আদান-প্রদান করতে সুবিধা হবে।
পার্শ্ববর্তী দেশের টিভি চ্যানেলগুলোতে পূজা উদযাপনে বাধা, হুমকি ইত্যাদি মিথ্যা, উসকানি ও বিভ্রান্তিমূলক সংবাদ প্রচারিত হচ্ছে- সাংবাদিকগণ এ বিষয়ে করণীয় জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, পার্শ্ববর্তী দেশ অনেক কিছুই বলতেছে- সেটা আপনারা জানেন। আমি আপনাদের অনুরোধ করবো, আপনারা সত্যি ঘটনা মিডিয়ার মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলবেন। আমরা সত্যি ঘটনা সবাইকে জানাতে চাই।
হিন্দুদের নিয়ে বছরের পর বছর যে নীলনকশা ও ষড়যন্ত্র হচ্ছে সেগুলো বন্ধ হবে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, এ বিষয়ে আপনারাই আমাদের সাহায্য করতে পারেন। আপনারা বিষয়টি জনগণের নিকট ফুটিয়ে তুলতে পারেন। আমি আপনাদের অনুরোধ করবো, আপনারা সবসময় সত্যিটা প্রকাশ করুন। যদি কোথাও আমাদের ঘাটতি থাকে, সেটা আমরা ঠিক বা পূরণ করে নিবো। কোথাও যদি আমাদের ভুল থাকে আমরা সেটা সংশোধন করে নিবো। আমরা যদি ভালো কাজ করি, সেটাও আপনারা ফলাও করে প্রকাশ বা প্রচার করবেন।
বিগত ১৫ বছরে রামু ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরসহ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর যেসব হামলা ও সহিংস ঘটনার বিচার হয়নি সেসব ঘটনার পুনঃতদন্ত ও বিচারের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, এসব অপকর্মের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের অবশ্যই বিচারের সম্মুখীন হতে হবে। বর্তমান সরকার ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাচ্ছে।
উপদেষ্টা আরও বলেন, দুর্গাপূজায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ, র্যাব ও আনসারের পর্যাপ্ত সদস্যদের পাশাপাশি সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। এবার কোথাও কোনো ঘটনা ঘটলে যাতে এর তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়, ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি) এর মাধ্যমে সে ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
পরিদর্শনকালে শ্রীশ্রী রমনা কালীমন্দির ও আনন্দময়ী আশ্রম পূজা পরিচালনা পরিষদের আহ্বায়ক অপর্ণা রায় দাস ও সদস্য সচিব বিশ্বজিৎ ভদ্র সহ মন্দিরের পূজা পরিচালনা পরিষদের সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন।