Dhaka ০৮:৩৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ড. ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশ সফল হলেই ভারতের স্বার্থ রক্ষিত হবে : ভারতীয় ব্যবসায়ী

  • নিউজ ডেস্ক
  • Update Time : ১০:৪৭:১৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৪
  • ৩০ Time View

ভারতীয় সংবাদ আউটলেট দ্য ওয়্যারে প্রকাশিত সাম্প্রতিক এক নিবন্ধে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহম্মদ ইউনূসের অধীনে বাংলাদেশ কিভাবে একটি সফল রাষ্ট্রে পরিণত হতে পারে এবং এটি ভবিষ্যতে প্রতিবেশী ভারতের একটি শক্তিশালী মিত্র হয়ে উঠতে পারে তা তুলে ধরা হয়েছে।

ভারতের একজন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তা বিনোদ খোসলা ২৭ অক্টোবর নিবন্ধটি লিখেন।

স্বনামধন্য ভারতীয়-আমেরিকান ব্যবসায়ী মনে করেন, অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশ তার সম্ভাবনায় পৌঁছাতে পারলে তাতে ভারতের সর্বোত্তম স্বার্থ সুরক্ষিত হবে।

নিবন্ধে তিনি বলেন, অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশে যে সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে একজন গর্বিত আমেরিকান ও ভারতের সন্তান হিসেবে তা নিয়ে আমি  আশাবাদী।

গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার তিন দিন পর ইউনূস বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান হিসেবে শপথ নেন।

খোসলা বলেন, ইউনূস, যাকে আমি বন্ধু মনে করি এবং কয়েক দশক ধরে চিনি, শিক্ষার্থী আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা ছাত্রদের অনুরোধে এ দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

নতুন আইডিয়ার শক্তিতে বিশ্বাসী ও টেকসই উদ্যোগ ও এর প্রভাব নিয়ে আগ্রহী এ ব্যবসায়ী বলেন, `ইউনূস তার জীবনে যা কিছু অর্জন করেছেন তাতে আমি বিস্মিত। আমি আমার বিনিয়োগের মাধ্যমে বিশ্বে সকল প্রাণের জন্য মঙ্গলজনক এমন প্রযুক্তির জন্য কাজ করি।’

তিনি বলেন, ড. ইউনূস অন্তহীন পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং নিরলস প্রচেষ্টার মাধ্যমে দারির্দ্য হ্রাস, স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষার ইতিবাচক প্রভাব এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক সাফল্যের মডেলগুলোর একটি সিরিজ তৈরি করেছেন।

বিনোদ খোসলা উল্লেখ করেন যে ১৯৯৬ সালে তি. ইউনূস বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে কয়েক হাজার দরিদ্র নারীর হাতে মোবাইল ফোন তুলে দিতে সফল হয়েছিলেন, যাতে তারা নিজ উদ্যোগে অর্থ উপার্জন করতে পারে।

নিবন্ধে বলা হয়, ‘আমি জনজীবন ও পরিবেশ রক্ষায় উত্সাহী। অধ্যাপক ইউনূস ১৯৯৫ সালে একটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন যেটি ১ দশমিক ৮ মিলিয়ন সোলার হোম সিস্টেম এবং ১ মিলিয়ন ক্লিন কুক স্টোভ ইনস্টল করেছে। এটিও মূলত বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলেই হয়েছে।

এতে বলা হয়, গ্রামীণ ব্যাংকের অবদানও এখানে স্মরণীয়, যা ১০ মিলিয়নেরও বেশি দরিদ্র নারীদের ৩৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ দিয়েছে। এই ক্ষুদ্রঋণ থেকে অনেকেই উপার্জনের পথ খুঁজে পেয়েছেন। ভারত এবং অন্যান্য অনেক দেশেও একই মডেলে কাজ হয়েছে।

নিবন্ধে বলা হয়, জনসংখ্যার দিক থেকে বিশ্বের অষ্টম বৃহত্তম দেশ বাংলাদেশ, যেখানে ১৭০ মিলিয়নেরও বেশি লোক বাস করেন। এটি এমন একটি দেশ যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় অর্ধেক জনসংখ্যা বাস করে, অথচ যার আয়তন ইলিনয় রাজ্যের সমান।

বিনোদ খোসলা বলেন, বাংলাদেশ এবং সারা বিশ্বে এমন অনেক মানুষ আছেন যারা ইউনূসের সাফল্য কামনা করেন। আমি তাদের অন্যতম। কিন্তু এমনও অনেকে আছেন যারা তাকে এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ব্যর্থ করতে চায়; অনেকে তাঁর নেতৃত্ব নিয়ে মিথ্যা বয়ানও ছড়িয়ে যাচ্ছেন।

খোসলা ড. ইউনূসের মূল্যবোধ, তাঁর পদ্ধতি ও প্রাথমিকভাবে তাঁর নেতৃত্বের ফলাফল নিয়ে নিজের দৃষ্টিভঙ্গি জানাতে গিয়ে বলেন, দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম দুই মাসে তিনি পুলিশ বাহিনীকে কাজে ফিরিয়েছেন, যা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি করেছে। সনাতন ধর্মাবলম্বী-সহ অন্যান্য সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার জন্য সক্রিয় ব্যবস্থা নিয়েছেন, ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে কাজ করেছেন, আঞ্চলিক শক্তিগুলোকে পরামর্শ দিয়েছেন সার্ককে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য এবং বাংলাদেশের ব্যাংকিং ও আর্থিক খাতে স্থিতিশীলতা আনার ক্ষেত্রে অগ্রগতি হয়েছে (যেটি তিনি দায়িত্ব গ্রহণের সময় বিশৃঙ্খলার মধ্যে ছিল)।

তিনি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে কার্যকরভাবে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন এবং নিউইয়র্কে থাকাকালীন বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে ৫০টিরও বেশি ফলপ্রসূ বৈঠক করেছেন।

মি খোসলা বলেন, আমি তাঁকে তাঁর ক্যারিয়ার জুড়ে যে মূল্যবোধ এবং পদ্ধতি ব্যবহার করতে দেখেছি নতুন ভূমিকায় কাজ করার সময়ও তিনি তা প্রয়োগ করেছেন। সেগুলো হলো- মূল বিষয়গুলোতে একটি জাতীয় ঐক্যমত তৈরি করা, কোনটি সবচেয়ে ভালো কাজ করে তা নির্ধারণ করার জন্য পরীক্ষা করা, নাগরিকদের (বিশেষ করে যুবকদের) ব্যবহারিক এবং গঠনমূলক কাজে যুক্ত হতে অনুপ্রাণিত করা, ধর্ম, লিঙ্গ বা জাতি নির্বিশেষে সকল মানুষকে সম্মান করা । তিনি বাস্তববাদী ও সেইসঙ্গে প্রচ- উদ্যমী (৮৪ বছর বয়সী হওয়া সত্ত্বেও)।

ড. ইউনুসের অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, একটি সরকারকে নেতৃত্ব দেওয়া সামাজিক ব্যবসা এবং অলাভজনক প্রতিষ্ঠান চালানোর চেয়ে বহুগুণ বেশি কঠিন হতে পারে। ক্ষমতা হারানো পূর্ববর্তী সরকার দ্বারা সুবিধাপ্রাপ্ত একটি গোষ্ঠীও চায় তার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হোক। বছরের পর বছর ক্ষমতার বাইরে থাকা দলটি দ্রুত ফিরতে চায়। তবে আমি বিশ্বাস করি ইউনূস তার কাজ করে যেতে পারবেন।

গত সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশের জনগণ এবং সারা বিশ্বের শুভাকাক্সক্ষীদের কাছে ্ ৯২ জন নোবেল বিজয়ীসহ ১৯৮ জন বিশ্ব নেতার এক চিঠিতে বিনোদ নিজেও সই করেছিলেন উল্লখ করে বলেন, সেখানে বলা হয়েছিল, ‘অধ্যাপক ইউনূসকে শেষ পর্যন্ত সমগ্র দেশের, বিশেষ করে সবচেয়ে প্রান্তিক মানুষের উন্নতির জন্য কাজ করার জন্য মুক্ত হতে দেখে আমরা উচ্ছ্বসিত, যে আহ্বান তিনি ছয় দশক ধরে অত্যন্ত জোরালোভাবে এবং সাফল্যের সঙ্গে অনুসরণ করেছেন।’

এই ভূমিকায় তার প্রথম দিকের সাফল্য বাংলাদেশের ভবিষ্যতের জন্য শুভ সূচনা।ব্যর্থ বাংলাদেশের তুলনায় একটি সফল বাংলাদেশ ভারতের শক্তিশালী মিত্র হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

বিনোদ খোসলা বলেন, আমাদের সবার উচিত অধ্যাপক ইউনূসের এই গুরুত্বপূর্ণ অন্তর্বর্তীকালীন ভূমিকার অগ্রগতি অব্যাহত রাখার দিকে মনোনিবেশ করা, কারণ বাংলাদেশের সম্ভাবনায় পৌঁছানোতেই ভারতের সর্বোত্তম স্বার্থ রক্ষিত হবে।

বাসস

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপডেট সংবাদ
বিনামূল্যে ব্রেকিং নিউজ পেতে ok ক্লিক করুন OK .

ড. ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশ সফল হলেই ভারতের স্বার্থ রক্ষিত হবে : ভারতীয় ব্যবসায়ী

Update Time : ১০:৪৭:১৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৪

ভারতীয় সংবাদ আউটলেট দ্য ওয়্যারে প্রকাশিত সাম্প্রতিক এক নিবন্ধে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহম্মদ ইউনূসের অধীনে বাংলাদেশ কিভাবে একটি সফল রাষ্ট্রে পরিণত হতে পারে এবং এটি ভবিষ্যতে প্রতিবেশী ভারতের একটি শক্তিশালী মিত্র হয়ে উঠতে পারে তা তুলে ধরা হয়েছে।

ভারতের একজন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তা বিনোদ খোসলা ২৭ অক্টোবর নিবন্ধটি লিখেন।

স্বনামধন্য ভারতীয়-আমেরিকান ব্যবসায়ী মনে করেন, অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশ তার সম্ভাবনায় পৌঁছাতে পারলে তাতে ভারতের সর্বোত্তম স্বার্থ সুরক্ষিত হবে।

নিবন্ধে তিনি বলেন, অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশে যে সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে একজন গর্বিত আমেরিকান ও ভারতের সন্তান হিসেবে তা নিয়ে আমি  আশাবাদী।

গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার তিন দিন পর ইউনূস বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান হিসেবে শপথ নেন।

খোসলা বলেন, ইউনূস, যাকে আমি বন্ধু মনে করি এবং কয়েক দশক ধরে চিনি, শিক্ষার্থী আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা ছাত্রদের অনুরোধে এ দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

নতুন আইডিয়ার শক্তিতে বিশ্বাসী ও টেকসই উদ্যোগ ও এর প্রভাব নিয়ে আগ্রহী এ ব্যবসায়ী বলেন, `ইউনূস তার জীবনে যা কিছু অর্জন করেছেন তাতে আমি বিস্মিত। আমি আমার বিনিয়োগের মাধ্যমে বিশ্বে সকল প্রাণের জন্য মঙ্গলজনক এমন প্রযুক্তির জন্য কাজ করি।’

তিনি বলেন, ড. ইউনূস অন্তহীন পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং নিরলস প্রচেষ্টার মাধ্যমে দারির্দ্য হ্রাস, স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষার ইতিবাচক প্রভাব এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক সাফল্যের মডেলগুলোর একটি সিরিজ তৈরি করেছেন।

বিনোদ খোসলা উল্লেখ করেন যে ১৯৯৬ সালে তি. ইউনূস বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে কয়েক হাজার দরিদ্র নারীর হাতে মোবাইল ফোন তুলে দিতে সফল হয়েছিলেন, যাতে তারা নিজ উদ্যোগে অর্থ উপার্জন করতে পারে।

নিবন্ধে বলা হয়, ‘আমি জনজীবন ও পরিবেশ রক্ষায় উত্সাহী। অধ্যাপক ইউনূস ১৯৯৫ সালে একটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন যেটি ১ দশমিক ৮ মিলিয়ন সোলার হোম সিস্টেম এবং ১ মিলিয়ন ক্লিন কুক স্টোভ ইনস্টল করেছে। এটিও মূলত বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলেই হয়েছে।

এতে বলা হয়, গ্রামীণ ব্যাংকের অবদানও এখানে স্মরণীয়, যা ১০ মিলিয়নেরও বেশি দরিদ্র নারীদের ৩৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ দিয়েছে। এই ক্ষুদ্রঋণ থেকে অনেকেই উপার্জনের পথ খুঁজে পেয়েছেন। ভারত এবং অন্যান্য অনেক দেশেও একই মডেলে কাজ হয়েছে।

নিবন্ধে বলা হয়, জনসংখ্যার দিক থেকে বিশ্বের অষ্টম বৃহত্তম দেশ বাংলাদেশ, যেখানে ১৭০ মিলিয়নেরও বেশি লোক বাস করেন। এটি এমন একটি দেশ যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় অর্ধেক জনসংখ্যা বাস করে, অথচ যার আয়তন ইলিনয় রাজ্যের সমান।

বিনোদ খোসলা বলেন, বাংলাদেশ এবং সারা বিশ্বে এমন অনেক মানুষ আছেন যারা ইউনূসের সাফল্য কামনা করেন। আমি তাদের অন্যতম। কিন্তু এমনও অনেকে আছেন যারা তাকে এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ব্যর্থ করতে চায়; অনেকে তাঁর নেতৃত্ব নিয়ে মিথ্যা বয়ানও ছড়িয়ে যাচ্ছেন।

খোসলা ড. ইউনূসের মূল্যবোধ, তাঁর পদ্ধতি ও প্রাথমিকভাবে তাঁর নেতৃত্বের ফলাফল নিয়ে নিজের দৃষ্টিভঙ্গি জানাতে গিয়ে বলেন, দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম দুই মাসে তিনি পুলিশ বাহিনীকে কাজে ফিরিয়েছেন, যা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি করেছে। সনাতন ধর্মাবলম্বী-সহ অন্যান্য সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার জন্য সক্রিয় ব্যবস্থা নিয়েছেন, ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে কাজ করেছেন, আঞ্চলিক শক্তিগুলোকে পরামর্শ দিয়েছেন সার্ককে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য এবং বাংলাদেশের ব্যাংকিং ও আর্থিক খাতে স্থিতিশীলতা আনার ক্ষেত্রে অগ্রগতি হয়েছে (যেটি তিনি দায়িত্ব গ্রহণের সময় বিশৃঙ্খলার মধ্যে ছিল)।

তিনি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে কার্যকরভাবে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন এবং নিউইয়র্কে থাকাকালীন বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে ৫০টিরও বেশি ফলপ্রসূ বৈঠক করেছেন।

মি খোসলা বলেন, আমি তাঁকে তাঁর ক্যারিয়ার জুড়ে যে মূল্যবোধ এবং পদ্ধতি ব্যবহার করতে দেখেছি নতুন ভূমিকায় কাজ করার সময়ও তিনি তা প্রয়োগ করেছেন। সেগুলো হলো- মূল বিষয়গুলোতে একটি জাতীয় ঐক্যমত তৈরি করা, কোনটি সবচেয়ে ভালো কাজ করে তা নির্ধারণ করার জন্য পরীক্ষা করা, নাগরিকদের (বিশেষ করে যুবকদের) ব্যবহারিক এবং গঠনমূলক কাজে যুক্ত হতে অনুপ্রাণিত করা, ধর্ম, লিঙ্গ বা জাতি নির্বিশেষে সকল মানুষকে সম্মান করা । তিনি বাস্তববাদী ও সেইসঙ্গে প্রচ- উদ্যমী (৮৪ বছর বয়সী হওয়া সত্ত্বেও)।

ড. ইউনুসের অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, একটি সরকারকে নেতৃত্ব দেওয়া সামাজিক ব্যবসা এবং অলাভজনক প্রতিষ্ঠান চালানোর চেয়ে বহুগুণ বেশি কঠিন হতে পারে। ক্ষমতা হারানো পূর্ববর্তী সরকার দ্বারা সুবিধাপ্রাপ্ত একটি গোষ্ঠীও চায় তার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হোক। বছরের পর বছর ক্ষমতার বাইরে থাকা দলটি দ্রুত ফিরতে চায়। তবে আমি বিশ্বাস করি ইউনূস তার কাজ করে যেতে পারবেন।

গত সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশের জনগণ এবং সারা বিশ্বের শুভাকাক্সক্ষীদের কাছে ্ ৯২ জন নোবেল বিজয়ীসহ ১৯৮ জন বিশ্ব নেতার এক চিঠিতে বিনোদ নিজেও সই করেছিলেন উল্লখ করে বলেন, সেখানে বলা হয়েছিল, ‘অধ্যাপক ইউনূসকে শেষ পর্যন্ত সমগ্র দেশের, বিশেষ করে সবচেয়ে প্রান্তিক মানুষের উন্নতির জন্য কাজ করার জন্য মুক্ত হতে দেখে আমরা উচ্ছ্বসিত, যে আহ্বান তিনি ছয় দশক ধরে অত্যন্ত জোরালোভাবে এবং সাফল্যের সঙ্গে অনুসরণ করেছেন।’

এই ভূমিকায় তার প্রথম দিকের সাফল্য বাংলাদেশের ভবিষ্যতের জন্য শুভ সূচনা।ব্যর্থ বাংলাদেশের তুলনায় একটি সফল বাংলাদেশ ভারতের শক্তিশালী মিত্র হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

বিনোদ খোসলা বলেন, আমাদের সবার উচিত অধ্যাপক ইউনূসের এই গুরুত্বপূর্ণ অন্তর্বর্তীকালীন ভূমিকার অগ্রগতি অব্যাহত রাখার দিকে মনোনিবেশ করা, কারণ বাংলাদেশের সম্ভাবনায় পৌঁছানোতেই ভারতের সর্বোত্তম স্বার্থ রক্ষিত হবে।

বাসস