সুনামগঞ্জের মধ্যনগরে জোয়ারের পানিতে ডুবতে পারে কৃষকের ধান সহ গবাদিপশুর খাদ্য। গুরমা উপ-প্রকল্প ফসল রক্ষা বাঁধের আওতায় ঝিনারিয়ায় নাথনগর হাওরে হয়নি বাঁধের কাজ । ৬ মাসের জন্য জিরাতি কৃষক ও জেলেদের ত্রিশ একর আবাদি জমির বোরো ধান, ঘরে তুলার অনিশ্চয়তায় ভুগছে এ গ্রামের মানুষ। বৌলাই নদীর পানি আগাম বন্যায় তলিয়ে যাওয়ার আশংকায় রয়েছে কৃষকরা। পাউবোর আওতায় আসেনি বোরো ফসল আবাদকৃত এই হাওরটি। এতে দিশেহারা প্রায় পঞ্চাশটি পরিবার এবং খাদ্য সংকটে পড়তে পারে অসংখ্য গবাদি পশু। উপজেলার চমরদানী ইউনিয়নের মোকসেদপুর মৌজায় অবস্থানকারী জেলেদের পূর্বপুরুষরা বৌলাই নদীর তীরে অবস্থিত মোকসেদপুর গ্রামে বসবাস করতো । প্রায় তিন দশক আগে বর্ষা মৌসুমে অকাল ঝড়ের কবলে পরে ও ডাকাতদের ভয়ে হাওরের মাঝে ঐ গ্রামটি ছেড়ে চলে যায় জেলেরা। বিলীন হয়ে যায় স্থায়ী মোকসেদপুর নামের গ্রামটি। তবে গ্রামটি হারিয়ে গেলেও শুকনো মৌসুমে তারা মোকসেদপুর নামক গ্রামে, ছন বা বনের ছাউনি দিয়ে অস্থায়ী ঘর নির্মাণ করে, ছয় মাসের জন্য বসবাস করে পরিবার পরিজন নিয়ে এবং উত্তরশুরিরা তীরবর্তী বউলাই নদীতে মাছ ধরেন এবং ঝিনারিয়া হাওরে বোরো ধান আবাদের মাধ্যমে পরিবার নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। প্রায় তিন যুগ ধরে মধ্যনগর উপজেলার নিয়ামতপুর বাঁকাতলার বোরো মৌসুমে বর্তমানে অস্থায়ীভাবে জেলেরা কৃষি আবাদ করেন ঝিনারিয়া নাথনগর নামক হাওরটিতে।
আরো পড়ুন:মধ্যনগরে হাওর রক্ষা বাঁধ পরিদর্শনে যুবলীগ নেতা সোহাগ
বিগত বছরে গুরমার উপ-প্রকল্পের ৫ টি পিআইসির আওতায় ছিল এই হাওরটি। বর্তমানে ঝিনারিয়া নাথনগরে আবাদকৃত কৃষকদের দাবী যে, সবটুকু বাঁধ সংস্কারের আওতায় না আসলেও বিগত বছরের ১৯ নং প্রকল্পের অনুকূলে ক্লোজার সহ ৬০০মিটার বাঁধ সংস্কার কাজের অনুকূলে বরাদ্দ ছিল ২৩ লক্ষ টাকার উপরে যার পিআইসি ছিলেন কাহালা গ্রামের কৃষক প্রণয় তালুকদার। এ নিয়ে ২৯ জানুয়ারি বোরো ফসল রক্ষায় বাঁধ নির্মাণের জন্য সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কাছে একটি লিখিত আবেদন করেন বিপ্লব ভৌমিক। অসহায় কৃষকদের দাবী এই মুহূর্তে বৌলাই নদীতে জোয়ারের পানি দেখা দিয়েছে আর মাত্র দুই ফুট পানি বাড়লেই পানি প্রবেশ করতে পারে হাওরে এবং তলিয়ে যাবে প্রায় পঞ্চাশটির অধিক পরিবারের স্বপ্ন। খাদ্য সংকটে থাকবে প্রায় ২ শত গবাদী পশু। তাই দ্রুত কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি চান ঐ কৃষকরা।
আরো পড়ুন:মধ্যনগর উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী ১২ জন
বোরো মৌসুমে জিরাতে আসা কৃষক-কৃষানীদের সাথে কথা বললে তারা জানান, আমরার পূর্বপুরুষের এই জমিগুলো,আগামী কয়েক দিনের ভিতরেই গাছ থাইক্কা ধান বাইরইবো। প্রতি বছরেই বাঁধ নির্মাণ হয় কিন্তু এবছর হয়নি। তাই কয়েক দিনের ভিতরেই জাঙ্গলে মাটি না দিলে বৌলাই নদীর ঢলের পানি ঝিনারিয়ার হাওরে ডুকব এবং ডুব্বিয়া যাইবো আমরার রোয়া জমি। উবাস থাকন লাগবো পুলাপান লইয়া। আমরা দাবী একটাই সরকারে কাছে অন্তত পক্ষে জিনারিয়া নাথ নগরের জাঙ্গলটায় মাটি দিয়া বান্দিয়া দেন। তাইলেই আমরা পরিবার নিয়ে বাঁচমু। ধানের খেয়ার খাইয়া আমরার গরু ও বাছুর বাঁচবো। মধ্যনগর উপজেলা নির্বাহী অতীষ দর্শী চাকমা, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুল মোতালেব ও নির্বাহী প্রকৌশলী নুর আলম নাহিদের সাথে কথা বলে জানা যায় এটি নিয়ে কৃষকদের বারবার দাবী উঠায় উর্ধ্বতনের সাথে কথা হয়েছে। আমলে না আসায় আবারো সরেজমিনে পরিদর্শন করা হবে।