রাজধানীর কাফরুল থানাধীন ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে উঠেছে একাধিক আবাসিক হোটেল। জানা গেছে মিরপুর-১০ এ হোটেল শেরাটন, হোটেল সোনার বাংলা এবং শেওরাপাড়ায় হোটেল রাজধানী অবস্থিত। এসব হোটেলে কাফরুল থানা পুলিশ একাধিক অভিযান চালালেও কোন ক্রমেই বন্ধ হচ্ছে না এসব অবৈধ হোটেলে নারী ও মাদক সিন্ডিকেটদের নমাজের বিভিন্ন অপরাধ।
পুলিশ সূত্র জানায় মিরপুর ১০ হোটেল শেরাটনের মালিক মিরাজ ও মিজানসহ কেশ কয়েকজন এবং শেওরাপাড়া অবস্থিত হোটেল রাজধানীর মালিক রাহাত ও আপন। তবে এসব ব্যবসায়ীরা নারী ও মাদক ব্যবসার একটি বড় সিন্ডিকেট। এছাড়া এসব হোটেলের নেই কোন বৈধতা এবং ইতিমধ্যে হোটেল সোনার বাংলায় কাফরুল থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে হোটেল পরিচালনাকরী সজিবের বিরুদ্ধে একটি মানব পাচার দমন আইনে মামলাও হয়েছে। কিন্তু সোনার বাংলা হোটেলের মূল মালিকদের চিহ্নিত করতে পারেনি কাফরুল থানা পুলিশ।
এসব অবৈধ হোটেল বন্ধ করতে মিরপুর বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার এবং কাফরুল থানার অফিসার ইনচার্জ কাজী গোলাম মোস্তফা কয়েকটি পদক্ষেপ নিয়েছেন ও গনমাধ্যমকর্মীরা তাদের সাথে কাজ করছেন। আরো জানা গেছে, কাফরুল থানা পুলিশ একাধিক অভিযান চালালেও তেমন কাউকে পায়না। এর অণ্যতম কারন হচ্ছে তাদের নিয়ন্ত্রিত সিসি ক্যামেরা এবং হোটেলের নিচে দাড়িয়ে থাকা দালাল চক্রের মাধ্যমে হোটেল মালিক কিংবা ম্যানেজারের নিকট খবর পৌছে যায় তাই পুলিশ অভিযান চালালেও ব্যর্থ।এদিকে এলাকাবাসি অভিযোগ করে বলেন, পুলিশ চাইলে যেকোন মূহুর্তে বন্ধ করতে পারে কিন্তু কিছু অসাধু পুলিশের কারনে সেটি আর সম্ভব হয়ে উঠে না। এসব হোটেল অবস্থান করায় এলাকার সামজিক ভারসম্য হারিয়ে যেতে বসেছে।
তবে কাফরুল থানার অফিসার ইনচার্জ কাজী গোলাম মোস্তফা এসব বিষয়ে খুবই কঠিন এবং তিনি এসব অবৈধ হোটেল বন্ধ করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।সম্প্রত্তি, হোটেলগুলো দির্ঘদীন ধরে সমাজের নিষিদ্ধ অনৈতিক কর্মকান্ডসহ মাদককারবারীরা নারী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে হোটেলটি পরিচালনা করে অসছে যথারিতি। আবাসিক হোটেল গড়ে তোলা নামে মাত্র। এদের নেই কোন বৈধতা। নেই জেলা প্রশাসকের কোন অনুমোদন। আবাসিক হোটেল ব্যবসা করতে জেলা প্রশাসকের অনুমোদনের প্রয়োজন রয়েছে। শুধু মাত্র সাইনবোর্ড ব্যবহার করার জণ্য রয়েছে তাদের একটি ট্রেড লাইসেন্স। যদিও আবাসিক হোটেল নামে এসব হোটেলের ট্রেড লাইসেন্স নয়। এভাবে কিন্তু ব্যঙ্গের ছাতার মতো গড়ে ওঠেছিল অবৈধ হোটেলের ব্যবসা। আর হোটেলগুলো ঘিরে চলতো দিন রাত নারী ও মাদক কারবারীদের আনাগোনা। তবে এসব হোটেলে বেশিরভাগ উচ্চ বিলাশিতার লোকজনের যাতায়ত বেশি। এর অণ্যতম কারন হচ্ছে হোটেলটি নিরাপদ স্থান বলা যেতে পারে। তাই অবাধে দেহ ব্যবসা ও অনৈতিক সম্পর্কের মিলন মেলা চলছে প্রকাশ্যেই। সাইনবোর্ড বিহীন আবাসিক হোটেলগুলো বাইরে থেকে অনুমান করা যায়না ভিতরে কিধরনের অপরাধ চলছে।
অভিযোগ রয়েছে, পুলিশ কিংবা সিটি কর্পোরেশনে মাসোহারা দিলেই হোটেল বৈধতা বলে শিকারউক্তি দেন উক্ত হোটল মালিকগন। অথচ এসব বিষয় কাফরুল থানা পুলিশ কিংবা সিটি কর্পোরেশন কিছুই জানেনা। এরা অভিনব কৌশলে গড়ে হোটেলের মধ্যে সমাজের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে আসছে যথারিতি। আমাদের দেশ একটি স্বাধীন দেশ এবং ইসলাম দেশ। তাই ইসলাম দেশ হিসেবে এসবের কোন বৈধতা নেই। এরা সিটি কর্পোরেশন থেকে একটি ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে গড়ে তুলেছেন আবাসিক হোটেল। অথচ তাদের ট্রেড লাইসেন্সে নেই আবাসিক হোটেলের নাম। দির্ঘদীন ধরেই এসব হোটেলে অপ্রাপ্ত বয়স্ক যুগল, স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রী, বিবাহ বহির্ভূত অনৈতিক সম্পর্কে আবদ্ধসহ যে কোন বয়সের যে কেউ খুব সহজে এখানে একান্ত সময় পার করতে পারে।
এই সুবিধা নিতে কারোরই নুন্যতম তথ্য যাচাইকরণ ছাড়াই চড়া মূল্যে একান্ত সময় কাটানোর জন্য ঘন্টা অনুযায়ী ও সারা রাতের জন্য দেয়া হয় রুম ভাড়া। এতে যেকান মূহুর্তে ঘটতে পারে বড় ধরনের অপরাধ। এছাড়া আবাসিক হোটেল চালাতে ডিএমপির কয়েকটি নির্দেশনা রয়েছে। যেসব নির্দেশনা রয়েছে সেগুলো উপেক্ষা করে চলছে এসব অবৈধ আবাসিক হোটেল এবং নেই তাদের কোন জেলা প্রশাসকের অনুমোদন।
এ বিষয়ে মিরপুর বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার ও কাফরুল থানার অফিসার ইনচার্জ বলেন, প্রয়োজনে এগুলো বন্ধে হোটেল মালিক এবং বিল্ডিং মালিকদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হবে। আমাদের স্বাধীন দেশে সমাজের এসব অপকর্ম চলবে না ও চলতে দেওয়া হবেনা। এতে অপরাধীরা যত বড়ই শক্তিশালী হোক তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে। আমার এসব অবৈধ আবাসিক হোটেলের বিরুদ্ধে বিশেষ ব্যবস্থা পদক্ষেপ নিব।